কাতার দু'বছর টিকবে : মিথ্যা হলো মিসরের গ্রান্ড মুফতির বক্তব্য
কাতার দু'বছর টিকবে : মিথ্যা হলো মিসরের গ্রান্ড মুফতির বক্তব্য - ছবি : সংগ্রহ
আলজাজিরা নিউজ চ্যানেল এখনও সদর্পে রাত দিন প্রচারিত হচ্ছে। মিডিয়ার দিগন্তে ‘দি নিউ আরব’ উজ্জ্বল তারকার মতো আলো ছড়াচ্ছে। তারিক বিন জিয়াদ সেনা ছাউনি তুর্কি সেনাদের প্রাণ-চাঞ্চল্যে মুখরিত। দোহায় ইরানি অ্যাম্বাসির পতাকা উড়ছে। অবরোধের ১৩টি নির্দেশের মধ্যে এই সবই বন্ধ করে দেয়ার জন্য দু’বছর আগে বলা হলেও এখনও তা চলমান রয়েছে।
কাতার অবরোধ শুরুর সময় ২০১৭ সালে এমনি এক সময়ে নয়া দিগন্তে কলাম লিখেছিলাম, ‘কাতার দু’বছর টিকবে : মিসরের গ্রান্ড মুফতি’ শিরোনামে। অপেক্ষা করছিলাম কাতারের ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে অথচ অবস্থা এখন বিপরীত। ওই কলামে প্রাক্তন গ্রান্ড মুফতি এবং কাতারের সম্ভাব্য বিপর্যয় নিয়ে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল।
সৌদি আরব, আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর- এই চারটি দেশ কাতার অবরোধ দেয়। দু’বছর অতিবাহিত হওয়ার পর সে কাতার আরো শক্তিশালী ও সমৃদ্ধি লাভ করেছে এবং উল্লেখিত চারটি দেশ নানামুখী সমস্যায় আবর্তিত হচ্ছে। কাতার চিন্তাচেতনা ও পররাষ্ট্রনীতিতে স্বকীয়তার প্রমাণ দিয়েছে। কাতার জিসিসির গাল্ফ ইনিশিয়েটিভ প্রত্যাখ্যান করেছে, বশ্যতা স্বীকার করেনি। কাতার সবসময়ই নানা ইস্যুতে সৌদি আরবকে সমর্থন দিয়ে এসেছে। কিন্তু অবরোধের পর কাতারের জবাই হওয়ার অবস্থা। কাতারকে মূল ভূখ- থেকে পৃথক করে বিভক্ত করার জন্য সাওয়া খাল প্রকল্প অব্যাহত রয়েছে। পশুসম্পদ বিনষ্ট করার জন্য সৌদি ভূমিতে প্রতিপালিত সব উট, গরু ও দুম্বা হঠাৎ করে ফেরত দেয়া হয়েছে। দুধের সমস্যা মেটানোর জন্য তাৎক্ষণিক ভারত থেকে দুধ আমদানি করতে হয়েছে। কাতার এসবের মোকাবেলা করে নিজ দেশে পশুপালন ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছে। অবরোধের সময় ২৭ লাখ মানুষের জন্য সমুদ্র এবং আকাশপথে খাদ্য আমদানি করতে বাধ্য হয়েছিল, কিন্তু সে অবস্থা এখন আর নেই।
অবরোধের তৃতীয় বছরে পর্দাপণ করা সত্ত্বেও অবরোধকারী দেশগুলো কিছুই অর্জন করতে পারেনি। বরং তারা আরো হতাশা ও সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। অন্যদিকে কাতারের চতুর্মুখী উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। অবরোধকালে কাতারের বিরুদ্ধে ‘পুরনো ট্যাবলেট’ ব্যবহার করা হয়েছিল, ‘সন্ত্রাসবাদে’ অর্থ জোগান দেয়ার অভিযোগ। কোনো দেশকে একহাত নিতে হলে অধুনা এই ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়। সমালোচকরা দেখছেন যারা অভিযোগকারী তারাই এই অপরাধের সাথে জড়িত। অবরোধের পর বিভিন্ন চ্যানেলে এসব কর্মকাণ্ডের খবর প্রকাশ হওয়ায় অবরোধকারীরা আর হালে পানি পাচ্ছে না। তাদের বৈশ্বিক অভিভাবক শ্রেণীর দেশগুলোও বেকায়দায় পড়েছে। অবরোধের সময় আল আজহারের সাবেক গ্রান্ড মুফতি আলী গুমাহ পক্ষ শক্তির একজন বড় ভোকাল ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুফতি আলী গুমাহ কাতারের লোকজনকে খারেজি সম্বোধন করতেন। খারেজির অনেক অর্থ হলেও এখানে তিনি ‘বিশ্বাসঘাতক’ বোঝানোর জন্য ব্যবহার করেছেন। তিনি জানান, ‘কুতরি ইবনে ফুজা’ খারেজিদের ঈমাম ছিলেন এবং তার নামানুসারে কাতার নামকরণ করা হয়। রাজকীয় কাতারি পরিবার আল থানি তাদের বংশধর। কুতরি আমিরাতের মুহালাব ইবনে সুফরার নিকট পরাজিত হন। দু’বছরের মধ্যে কুতরি পরিবার ও খারেজিরা উৎপাটিত হয়ে যাবে। তিনি শ্রোতাদের বলতেন, ‘দু’বছর অপেক্ষা করুন।’ ফতোয়ার কারণে তাকে ‘বউ পেটানো’ মুফতি বলেও ডাকা হয়। তিনি প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার ফতোয়া দেন ও নিয়মিত টকশোতে কথা বলেন। বিক্ষোভ আন্দোলন প্রসঙ্গে তার মত হলো, জনগণের অসুবিধা হয় এমন কোনো বিক্ষোভ মিছিল ‘হারাম’। মহিলাদের খতান বা এফএমজি নিষিদ্ধ তবে অইসলামী নয়। ব্রাদারহুডের বিপক্ষ নেয়ায় ও সিসিকে জোর সমর্থন দেয়ায় তিনি ‘দরবারি আলেম’, ‘ফরমায়েশি আলেম’ খেতাবেও ভূষিত হয়েছেন। আলী গুমাহ যে বলেছেন, কাতার দু’বছর টিকবে এর কারণ কী- এসব কিছুই তিনি ব্যাখ্যা করেননি। তার বক্তব্যটি অনেকটা ব্যাখ্যাবিহীন ‘ফতোয়া’র মতো। হোসনি মোবারক বলতেন, ‘আল আজহার সন্ত্রাসীদের প্রজনন কেন্দ্র।’ সেই মোবারকের হাতে তিনি গ্রান্ড মুফতি হয়েছিলেন। তিনি কেমন হবেন তা এখান থেকেই কিছু অনুমান করা যায়। দু’বছর গত জুনে শেষ হলেও গ্রান্ড মুফতি গুমার ভবিষ্যদ্বাণী সম্পূর্ণ নিষ্ফল হয়েছে। কাতার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিপর্যয় কাটিয়ে ক্রীড়া ক্ষেত্রেও সুনাম অর্জন করেছে।
অবরোধকারী দেশগুলো ২০১৭ সালের গাল্ফ কাপে অংশ নেয়নি। আমিরাত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এশিয়ান কাপের আয়োজন করলে সেখানে কাতারের বিজয়ে আমিরাতের হৃদয় কষ্টের মেঘে ঢেকে যায়। অনেক দর্শক চিৎকার করে জুতা নিক্ষেপ করে কাতারি টিমকে। সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার অবনতি, জামাল খাশোগী হত্যা, তেল ক্ষেত্রে হুতিদের মারাত্মক হামলা, ইরানের সাথে সম্পর্কের অবনতি- এসব কিছু জিসিসি দেশগুলোর নিরাপত্তা ব্লক আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সৌদি আরব ও আামিরাত বুঝতে দেরি করলে অবস্থার আশঙ্কাজনক অবনতি ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। বিষয়টির গুরুত্ব নিয়ে যতবার কাতার প্রশ্ন তুলেছে ততবার কাতারের বিপক্ষে অর্থহীন বিরোধ উসকে দেয়া হয়েছে। তাই কাতার সামরিক শক্তি বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, তুরস্ক, পাকিস্তান, ফ্রান্স ও চীন থেকে উন্নতমানের সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে ও চুক্তি করেছে। অবরোধের পর কাতার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে আর আগের মতো বিশ্বাস করতে পারছে না। ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপের খেলা ও কোয়ালিফাইং অনেক প্রতিযোগিতা কাতারে অনুষ্ঠিত হবে। কাতারই আরব বিশ্বের প্রথম দেশ যে এই অনন্য সুযোগ ও সম্মান পেল। খেলোয়াড়দের জন্য সমুদ্রবেষ্টিত যে আধুনিক টেক-নগরী তৈরি করা হয়েছে সেটি বিশ্বে অদ্বিতীয়। অনুপম সুন্দর এক ডিজাইন যা কল্পপুরীকে হার মানায়।
এই দু’বছরে কাতারের সামরিক খাতে অর্জন অনেক। দোহা আমেরিকার এফ-১৫ কিনছে ৩৬টি, ফ্রান্স থেকে রাফায়েল ফাইটার কিনছে ১২টি, আরো কিনছে ২৪টি টাইফুন এয়ারক্রাফট। কাতারে এক বিশেষ সুবিধা আছে। যাকে যুদ্ধবিশারদরা বলছেন ‘ট্রাম্প কার্ড’ সেটি হলো কাতারের আল ওদে বিমান ঘাঁটি। এটি হলো মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সবচেয়ে বড় আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের ঘাঁটি। ফলে আমেরিকা বা তার মিত্র দেশ সিরিয়া, ইরাক ও ইরানে সহজে হামলা চালাতে পারে ওখান থেকে। বি৫২ বোমারু বিমানও সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে কিছু দিন আগে হরমুজ প্রণালীতে যুদ্ধের সময়। দেখা যাচ্ছে, কাতার অবরুদ্ধ নয়, সম্মুখের কাতারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতার বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে বলেন আমিরাত ও সৌদি আরবকে, নতুবা ক্যাম্প ডেভিডে কোনো আলোচনা করবেন না বলে জানান। এদিকে কাতারের সাথে রাশিয়ার সামরিক joint inter-governmental agreement on military technical cooperation চুক্তি বলবৎ আছে। বর্তমানে কাতার যুক্তরাষ্ট্রে দুই হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে।
অবরোধকারী দেশগুলো স্থল, আকাশ ও নৌপথ অবরোধ করেই ক্ষান্ত হয়নি, কাতারকে পর্যুদস্ত করার জন্য আমিরাত থেকে ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে। আলজাজিরা চ্যানেলে সাইবার আক্রমণ চালানো হয়েছে। তাকে সুরক্ষার জন্য বিশ্বের সেরা ক’জন সাইবার সিকিউরিটি কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়েছে কাতার। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেই যে কাতারের সরকারি সংবাদমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের কাছে প্রমাণ আছে বলে জানিয়েছে দোহা। দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত দলের কর্মকর্তারা বলেন, এপ্রিলের শুরু থেকেই কাতার নিউজ এজেন্সি (কিউএনএ) হ্যাক করার পরিকল্পনা করা হয়। ২৪ মে গভীর রাত থেকে ২৫ মে ভোর পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন ভিপিএন সফটওয়্যার ব্যবহার করে এপ্রিলের শুরুর দিকেই হ্যাকাররা কিউএনএর ওয়েবসাইটে অনুপ্রবেশ করেছিল এবং ওয়েবসাইটটি স্ক্যান করেছিল। তাছাড়া সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করে আল সানির ভুয়া বক্তব্য প্রচার করছিল। ‘আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানি ইরান, হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলকে সমর্থন জানিয়েছেন’ এমন ভুয়া খবর প্রচার করা হচ্ছিল। কাতার সতর্ক করেছে, আমিরাত আরো এগোলে তারাও সাইবার হামলা চালাবে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক খবরে বলা হয়, নতুন করে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চিত হয়েছে হ্যাকিংয়ের সাথে আমিরাতের সংযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত আমিরাতের দূত ইউরুফ আল ওতাইবা ওয়াশিংটন পোস্টের খবর নাকচ করে দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন : ‘আর্টিকেলে হ্যাকিং নিয়ে যা যা অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলোর কোনোটিই আমিরাত করেনি.... এটাই হলো কাতারের সত্যিকারের আচরণ। তালেবান থেকে শুরু করে হামাস এবং গাদ্দাফি পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন ও সমর্থন দেয়াটা তাদের কাজ। সহিংসতায় উস্কানি দেয়া, চরমপন্থাকে উৎসাহিত করা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর স্থিতিশীলতা নষ্ট করাটা কাতারের স্বভাব।’
সময় গড়িয়ে যাচ্ছে, অবরোধও চলছে, এর কোনো পরিসমাপ্তি নেই যেন। কোনো বড় ধরনের আঘাত ছাড়া আরব দেশগুলোতে কোনো পরিবর্তন সাধিত হয় না। কোনো কোনো সময় বিপর্যয় এড়ানোও যায় না। এখন ইরান-সৌদি আরব বিরোধের কারণে আরব ঐক্যের বিষয়টি খুব জোরদার গতি পেয়েছে। কাতার ইরানের সাথে ব্যবসায়িক চুক্তি করেছে। ঢিল মারলে পাটকেলটি খেতে হয়। কাতার সব ভুলে যাবে এমনও নয়। কাতারের লোকজন ব্যবসা বা আত্মীয়দের দেখার জন্য আবরোধকারী দেশগুলোতে যেতে পারছে না।
কাতার ভেঙে যাওয়ার পরিবর্তে বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আরো এগিয়ে। তুরস্ক ও ইরানের সাথে দেশেটির বিশেষ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। নিজের চিন্তাধারা প্রতিষ্ঠার জন্য তেল উৎপাদনকারী সংস্থার জোট ওপেক ত্যাগ করেছে। অবরোধ প্রক্রিয়াকে কাতার বিভিন্নভাবে পর্যুদস্ত করেছে। যেমন কাতার সম্পূর্ণ নতুন ইন্ডাস্ট্রি বানিয়ে সাপ্লাই চেন সমৃদ্ধ করেছে। রিয়াদের কোনো নির্দেশনা সে কার্যকর করেনি, কাতার একঘরে হলেও অনেক দিক দিয়ে অবরোধকারীদের শীর্ষে। ২০২০ সালে বিশ্ব মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি এন্টারপ্রাইজ ফোরামের ভেন্যুও কাতারে নির্ধারিত হয়েছে। নিউইয়র্কে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
অর্থনৈতিক অবরোধ মোকাবিলায় কাতার প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন ও রফতানি বৃদ্ধি করে। ফলে রফতানি বাণিজ্য ১৮ শতাংশ বেড়ে যায়। কাতার অর্থনৈতিক বিপর্যয় রোধে করণীয় সম্পর্কে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের বাস্তবতা শিখে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়, যা মিসরের ক্ষেত্রে সম্ভব হয়নি। কাতারের অর্থনীতি এখন বেশ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে। এসব মোকাবেলা করতে গিয়ে দেশটি যেসব কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সেগুলোকে democratic securit নামে অভিহিত করা হয়েছে। নতুন তত্ত্ব হিসেবে বিজ্ঞানীরা দেখছেন, যদিও ১৫ বছর আগে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলভারো তার অর্থনৈতিক সমস্যা নিরসন, ফার্ক গেরিলাদের মোকাবিলা, মাদক ব্যবসা প্রসার ও সুপ্ত দাসপ্রথার নিরসনে এই শব্দগুলো ব্যবহার করেছিলেন। সিএনএনের ফরিদ জাকারিয়ার সাথে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুর রহমান আল সানি বলেছেন ‘আমাদের অবরোধ করলেও আমরা অবরোধকারীদের সাথে অবরোধজনক কোনো আচরণ করব না।’
শেখ তামিম বলেছেন, ‘আরব বিশ্বের জনগণ ও বিশ্ব শক্তিগুলো এই অবরোধের সমালোচনা করেছেন।’ এমনকি আরব বিশ্বের মধ্যে যারা বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় তারাও এই অবরোধের সমালোচনা করেছেন। তিনি আরো জানান, ‘কাতার এই বিষয় নিয়ে কারো সমালোচনা ও বিতর্ক করবে না এবং এবং যুদ্ধের ঝুঁকি সত্ত্বেও কোনো যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে না। উল্লেখ্য যে, টিলারসনের সময় কাতারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি নিলেও তিনি তা বলতে গেলে প্রতিহত করেন। সামরিক তথ্যাবলিতে পাওয়া যায়, কাতারে আমেরিকার ঘাঁটিতে যে সৈন্য আছে তারাই কাতারের ক্ষমতা দখলের জন্য যথেষ্ট, যদি অবস্থানরত তুর্কি বাহিনী বাধা না দেয়। এমন কিছু হলে কাতার অঞ্চলে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, আমিরাত ও সৌদি আরব যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। সৌদিরা মনে করেছিল কাতার নতজানু হবে, নাহলে যুদ্ধের আয়োজন করবে। এক্ষণে এর কোনোটিই আর সম্ভব নয়। আল-সানি ঘোষণা দিয়েছেন, যেকোনো সমাধানই কাতারের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাপূর্ণ হতে হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার
হোটেল গেংটক, সিকিম