কোমর ব্যথায় কোন চিকিৎসা নেবেন
কোমর ব্যথায় কোন চিকিৎসা নেবেন - ছবি : সংগ্রহ
কোমর ব্যথাকে মেডিক্যাল পরিভাষায় বলা হয় লো-ব্যাক পেইন। পৃথিবীর তিন-চতুর্থাংশ মানুষ জীবনের কখনো না কখনো একবার বা একাধিকবার এ ধরনের ব্যথায় ভুগে থাকেন। আমেরিকার এক সমীক্ষায় দেখা যায়, এ রোগের পেছনে বছরে খরচ হয় ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তবে আশার কথা এই যে, ৯০ ভাগ ব্যথার কারণ যান্ত্রিক, যা সহজেই নিরাময়যোগ্য। অতএব খুব বেশি ভয়ের কিছু নেই।
ব্যথা কোথায় হয়?
পিঠের মেরুদণ্ডের একেবারে নিচে কোমরের কাছে সাধারণত এ ধরনের ব্যথা হয়। ব্যথাটা অনেক সময় মেরুদণ্ডের মাঝখান থেকে কিছুটা ডানে বা বামে অনুভূত হয়। এ ছাড়াও ব্যথাটা কোমর থেকে ডান বা বাম পায়ের উরুর সামনে বা পেছনে এমনকি আরো নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে।
কেন হয়?
আমরা জানি, নিজের শরীরের ওজন থেকে শুরু করে আমরা যে কোনো কিছু হাতে, মাথায় বা কাঁধে বহন করি না কেন, তার ওজন মেরুদণ্ডের মধ্য দিয়ে পা হয়ে মাটিতে চলে যায়। যার ফলে মেরুদণ্ডের নিচের অংশে কোমরের কাছে চাপ বেশি পড়ে। মেরুদণ্ড আবার ৩৩টি ছোট ছোট হাড় বা ভার্টিব্রা দিয়ে তৈরি। দুটি ভার্টিব্রার মধ্যে একটি করে গোল চাকতি বা ডিস্ক থাকে যা মেরুদণ্ডের দু’পাশ দিয়ে অনেক স্নায়ু বা নার্ভে নেমে আসে। যদি কোনো কারণে ভার্টিব্রাল ডিস্কের ওপর চাপ পড়ে ডিস্কটি সামনে-পেছনে সরে গিয়ে মেরুদণ্ডের দুপাশ থেকে নেমে আসা স্নায়ুগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয়ে যায় (সাধারণত বেশি বয়স হলে) অথবা হঠাৎ করে মেরুদণ্ডের দু’পাশের মাংসপেশীর ওপর টান পড়ে (মাসকুলার স্প্যাজম) তবে সাধারণত এ ধরনের ব্যথা হয়।
এ ছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেমন- মেরুদণ্ডের হাড়ে ইনফেকশন, অস্টিওপোরোসিস (হাড়ে ক্যালসিয়াম কমে হাড় ক্ষয়ে যাওয়া), বোন বা হাড়ের টিবি, বোন বাহাড়ের টিউমার ইত্যাদি কারণে ব্যথা হয়।
রোগের কারণ নির্ণয়
বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই এ রোগ ধরা যায়। যেমনÑ রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, মাইলোগ্রাম ইত্যাদি। তবে সবসময় সব পরীক্ষার দরকার হয় না। বেশির ভাগ সময়ই দুটি মাত্র এক্স-রের সাহায্যে এ রোগ নির্ণয় করা যায়।
চিকিৎসা
হঠাৎ করে এ ধরনের ব্যথা হলে একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক। কেননা, দেখা যায় সঠিক রোগ নির্ণয় করতে না পারলে দীর্ঘস্থায়ী জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। তবে আগেই বলেছি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো জটিলতার সৃষ্টি না হলে এ রোগের চিকিৎসা সহজ। সাধারণত শক্ত বিছানায় সম্পূর্ণ বিশ্রাম, রোগীকে রোগ সারার নিশ্চয়তা প্রদান, ব্যথানাশক ওষুধ বা মাসুল। রিল্যাক্সান্ট ওষুধ এবং সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত হওয়ার পর কিছু নির্দিষ্ট ব্যয়াম এ রোগ থেকে আপনাকে দিতে পারে ব্যথামুক্ত সচল জীবন।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
চেম্বার -১: পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ, ২, ইংলিশ রোড, ঢাকা। ফোন: ০৯৬১৩৭৮৭৮০২
চেম্বার -২: আজগর আলী হসপিটাল, ১১১/১/এ ডিস্টিলারি রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
ফোন : ০১৭৮৭৬৮৩৩৩৩, ১০৬০২