পাকিস্তান সীমান্তে ভারতের বিশেষ অস্ত্র
এম-৭৭৭ - ছবি : সংগৃহীত
ভারতীয় সেনাবাহিনী গত সোমবার পোখরান ফায়ারিং রেঞ্জে এম-৭৭৭ আল্টা-লাইট হাউটজার থেকে আমেরিকান-উদ্ভূত এক্সক্যালিবার আর্টিলারি গোলার পরীক্ষামূলক বর্ষণ সম্পন্ন করেছে। ২০১৮ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে এম-৭৭৭,এ২ আল্টা-লাইট হাউটজার হস্তান্তর করা হয়। এগুলো এমনকি পার্বত্য এলাকাতেও হেলিকপ্টারে করে পরিবহন করা যায়।
সোমবারের পরীক্ষার সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল আর্টিলারি লে. জেনারেল রবি প্রাসাদসহ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সিনিয়র নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। ১৫৫ এমএম ট্রাজেক্টরি কারেক্টেবল মিউনিশন-সংবলিত এক্সক্যালিবার আর্টিলারি জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোলাগুলোর নিখুঁতভাবে টার্গেটে আঘাত হানার জন্য। এতে মধ্যপথেও গতিপথ সংশোধন করার কাজ করা যায়। সোমবার এটিও পরীক্ষা করা হয়। টিসিএম (টাউসন-ক্রাইগ মাইক্রোম্যাগনাম) নির্ভুলতা ও প্রথম দফায় আঘাত হানার সম্ভাবনা প্রচলিত অস্ত্রগুলোর চেয়ে অনেক বেশি।
কাশ্মিরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ৪৩৫ মাইল দীর্ঘ নিয়ন্ত্রণ রেখায় মোতায়েন সেনাবাহিনীর ইউনিটগুলোকে নিয়ন্ত্রিত গোলা দেয়া হবে।
এসব গোলা ৫৭ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এগুলো ২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা কে-৯ ট্র্যাক্টড হাউটজার কামানেও ব্যবহার করা যায়।
গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানভিত্তিক জৈশ-ই-মোহাম্মদ নামের একটি গ্রুপের কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতীয় সামরিক বহরের ওপর আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কে আরো অবনতি ঘটে। ভারতীয় বাহিনী এর বদলায় ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সীমান্ত অতিক্রম করে কথিত সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করার দাবি করে। পরদিন পাকিস্তান বিমান বাহিনী প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় ডজনখানে জঙ্গিবিমান ব্যবহার করে। তারা ভারতের মিগ-২১ বাইসন বিমান গুলি করে ভূপাতিত করে। ভারতও দাবি করছে, তাদের মিগ-২১ বাইসন আমেরিকার তৈরী একটি পাকিস্তানি এফ-১৬ জঙ্গিবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। তবে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান এই দাবি অস্বীকার করে আসছে।
ভারত জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর পাকিস্তান ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এর ফলে পশ্চিম সেক্টরে গত চার মাসে বিপুলসংখ্যক সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
স্পুটনিক
কাশ্মিরে ‘রোবট সেনা’ নামাচ্ছে ভারত
এনডিটিভি ও আনন্দবাজার
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ‘রোবট সেনা’ নামাচ্ছে ভারত সরকার। এ জন্য প্রাথমিকভাবে ৫৫০টি রোবোটিক্স ইউনিট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী রোবটগুলোর কর্মক্ষমতার স্থায়িত্ব হবে অন্তত ২৫ বছর। ভারতীয় সেনা সদর দফতর সূত্রের বরাতে দেশটির গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে, শিগগিরই কাশ্মির উপত্যকায় রোবট সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে ভারত।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, সীমান্তে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি উগ্রবাদবিরোধী অভিযানে নামবে এই রোবট বাহিনী। গ্রেনেড হামলা সফলভাবে প্রতিরোধ করা ছাড়াও ভাঁজ করে সহজেই বহন করা যাবে এসব যন্ত্রমানব। বলা হচ্ছে, গ্রেনেড হামলা হলেও এসব রোবটের কোনো ক্ষতি হবে না। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এ রোবটগুলোর আয়ুষ্কাল অর্থাৎ চাকরির মেয়াদ হবে অন্তত ২৫ বছর। শিগগিরই ভারতের সেনাবাহিনীর হাতে এগুলো পৌঁছাবে। যেকোনো প্রতিরোধ ভাঙা এবং তল্লাশি অভিযানেও দক্ষ এই যন্ত্রমানব।
সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে সক্ষম হবে এসব রোবট। অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় গাছে ওঠা ছাড়াও সন্ত্রাসীঘাঁটিতে ঢুকে যাবে অনায়াসে। গ্রেনেড মেরে আটকানো যাবে না। এ ছাড়া আগুনে ঝাঁপ দিলেও কোনো ক্ষতি হবে না এসব রোবট সেনার। এরা ২০ সেন্টিমিটার গভীর পানি টপকাবে অনায়াসে।
তিনি আরো জানান, বিএসএফ জওয়ানরা এসব রোবট সেনার মাধ্যমে সহজে নজরদারি করতে পারবে সীমান্তে। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা ও ট্রান্সমিশন সিস্টেম সংবলিত এসব রোবট দিনে-রাতে যেকোনো এলাকায় ঢুকে ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে।
বিস্ফোরক লুকানো আছে কি না এর খোঁজ ছাড়াও সৈন্যদের প্রয়োজনীয় অস্ত্র পৌঁছে দেয়ার কাজেও রোবটগুলো ব্যবহার করা যাবে। ১৯৯০ সালের ১ অক্টোবর এমনই রোবট সেনার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলেন বিএসএফ-এর তৎকালীন মহাপরিচালক।