খালেদা জিয়ার জন্য আকুতি
খালেদা জিয়ার জন্য আকুতি - ছবি : সংগ্রহ
নাগরিকরা নিজ নিজ রাষ্ট্রের কাছে মানবিক আচরণ আশা করে। তেমনি ব্যক্তি প্রত্যাশা করেন আরেকজনের কাছে মানবিক আচরণ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এবং সমাজে মানবিকতা হলো মূল শক্তি। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রে ও সমাজে এর ঘাটতি স্পষ্ট। এর কারণ কী? অনেকই বলে থাকেন, এজন্য দায়ী অফুরন্ত ভোগবিলাসের চিন্তা থেকে লোভলালসা দানা বেঁধেছে আমাদের মনে।
যা সততা ও নৈতিকতাবোধের অবক্ষয় ঘটিয়ে অধঃপতন ডেকে এনেছে। মানুষে মানুষে বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতার অভাব দীর্ঘ দিন ধরে হৃদয়ে জেঁকে বসেছে সমাজের চারদিকে।
অথচ সমাজ সংস্কারকেরা সমাজ ও রাজনীতির মূল ব্যবস্থাকে অনৈতিক নব্য সামন্ততান্ত্রিক ধারা থেকে বের করে আনতে পারছেন না। সামাজিক চরিত্রের নৈতিক ও গণতান্ত্রিক উত্তরণও ঘটাতে পারছেন না। বিপরীতে যাদের কাজ করার কথা, তারা নিজেরাই লাইনচ্যুত। যদিও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ভোটারবিহীন সরকারের পক্ষে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। ফলে দেশের এই দুর্গতি। তবে বর্তমান সরকার দেশকে জনবান্ধব করতে সাম্প্রতিক সময়ে নিজ দলের কিছু আগাছা পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, যা নিজ দলের অনেকের কাছে পছন্দনীয় না হলেও সাধারণের কাছে হয়েছে গ্রহণীয় । সরকার ক্যাসিনো সম্রাটদের মুখোশ উন্মোচন করেছে। এখনো অনেক নেতা যারা অপকর্মে লিপ্ত, তাদের মুখোশ উন্মোচন করলে দেশের বর্তমান চালচিত্রের কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরি, শেয়ারবাজার ধ্বংস, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, নারী-শিশুর প্রতি নৃশংসতা, কিশোর গ্যাং, টর্চার সেল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ধোঁকাবাজি, মিথ্যাচার, নদী-জলাশয় দখল, শিক্ষার দুরবস্থা, স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থা, খাদ্যে ভেজাল, বৈষম্য, গুম-খুন-ধর্ষণ, প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে অবৈধ সব কাজে লিপ্তদের আইনের আওতায় আনবে বলে সবার প্রত্যাশা। ক্ষমতাসীনদের মনে রাখা দরকার, জনগণের সাথে প্রতারণা করে কেউ পার পায়নি। বিষয়টি অবশ্যই তাদের বিবেচনায় নিতে হবে।
অনেকের অভিযোগ, বর্তমান সময়ে আমাদের রাষ্ট্রে একটি প্রবণতা বেড়েছে-সরকারের বিরোধী পক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যস্থায় যে সুবিধা পেয়ে থাকেন তার অনেক কিছু থেকেই তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। এই বিষয়ে অনেকে উদাহরণ হিসেবে বলেন- দেশের কোটি মানুষের জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তার সাথে মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করেন দেশের অনেক নাগরিক। নাটকীয় কোনো ঘটনার আড়ালে তার জীবনে যেন অস্বাভাবিক পরিণতি বয়ে না আনে সেজন্য তাদের আকুতি, তিনি যেন উন্নত চিকিৎসা পান। এসব মানুষের বক্তব্য, চিকিৎসা পাওয়া তার মৌলিক মানবিক অধিকার। এই মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা রাষ্ট্রকেই দিতে হবে। কোনো ডামাডোলে তার সেই অধিকার যেন খর্ব না হয়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কাছে মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করেন দেশের কোটি কোটি মানুষ। এ কথা বলা যায়, বেগম জিয়ার মুক্তির পথ সুগম হলে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা শক্তিশালী হবে আশা করা যায়।