চীনের মোকাবিলা : ভারতকে এফ/এ১৮ সুপার হর্নেট দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

এফ/এ১৮ সুপার হর্নেট - ছবি : নয়া দিগন্ত
গত মাসে হাওয়াইভিত্তিক ইউএস প্যাসিফিক কমান্ডের অ্যাডমিরাল জন অ্যাকিউলিনোর ভারত সফরের সময় আবারো এফ/এ-১৮ জঙ্গিবিমান কেনার বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলছে, ভারতের উচিত হবে আমেরিকার তৈরী জঙ্গি বিমান গ্রহণ করা। এটা করা হলে সঙ্কটের সময় দুই দেশের পক্ষে অনেক সহজেই একসাথে কাজ করা সম্ভব হবে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের বিমানবাহী রণতরীতে যদি এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেট থাকে, তবে অনেক দ্রুততার সাথে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা সম্ভব হবে।
তবে ভারত দুই ইঞ্জিনের বহুমুখী সুপার হর্নেট সংগ্রহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে না ভারত। এই বিমান নির্মাণ করেছে বোয়িং। মার্কিন বহরে তিন শতাধিক এই বিমান রয়েছে। এফ/এ-১৮ কেনার জন্য ভারতকে অনেকবার অনুরোধ করেছ যুক্তরাষ্ট্র।
অ্যাডমিরাল উল্লেখ করেন যে চীন তার প্রতিবেশীদেরে ভয় দেখাচ্ছে। তিনি ভারতকে স্মরণ করিয়ে দেন, চীনা বিমানবাহী ক্যারিয়ার ব্যাটট-গ্রুপ শিগগিরই ভারত মহাসাগরে ভারতের আঙিনায় ঢুকে যাবে। এই অঞ্চলে চীনা সামরিক বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তারা তা করছে বেশ আগ্রাসী গতিতে। ফলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দ্রুততার সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।
চীনের প্রথম বিমানবাহী রণতরী লিয়ানিং দক্ষিণ চীন সাগর ও এর আশপাশের এলাকায় ভীতি প্রদর্শনমূলক টহল প্রদান শুরু করেছে। দেশটি দ্রুততার সাথে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ভারতের সমকক্ষতা অর্জন করতে চলেছে। এসব দেশ বিমানবাহী রণতরী নির্মাণে বেশ দক্ষতা অর্জন করেছে। তবে বিমানবাহী রণতরী ও স্থলভাগ উভয় স্থান থেকে বিমান উড্ডয়নের জন্য চীনের আরো বেশি দক্ষ পাইলটের প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত তাদের প্রশিক্ষিত পাইলটের সংখ্যা মাত্র ৫০।
ভারতের একমাত্র বিমানবাহী রণতরী আইএএস বিক্রমাদিত্যে রুশ মিগ-২৯কে জঙ্গিবিমান সজ্জিত রয়েছে। ভারত তার কোচিন শিপিয়ার্ডে দ্বিতীয় রণতরী নির্মাণ করছে। এই রণতরীতে কোন বিমান তোমায়েন করা হবে, সে ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ডিফেন্স নিউজ
পাঁচ বছরের মধ্যে তুরস্কের নিজস্ব যুদ্ধবিমান : এরদোগান
রয়টার্স
আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই নিজস্ব যুদ্ধবিমান বানাবে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলাকালে এ পরিকল্পনা জানালেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে দেশেই যুদ্ধবিমান বানানোর পরিকল্পনা করছে তুরস্ক। এরদোগান আরো বলেন, এফ-১৬ এস এবং ড্রোন বানাতে যে বিস্ফোরক দ্রব্য প্রয়োজন তার সুবিধা এবং মূল্যের ব্যাপারে তদন্ত চালাবে তুরস্ক।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তুরস্কের কাছে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৯ সালের ১২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা উপেক্ষা করে রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এস-৪০০-এর প্রথম চালান গ্রহণ করে তুরস্ক। রাজধানী আঙ্কারার একটি বিমানঘাঁটিতে এ চালানটি পৌঁছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, রুশ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ন্যাটো প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং এটি একটি নিরাপত্তাহুমকি। যুক্তরাষ্ট্র চায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের বদলে তুরস্ক মার্কিন প্যাট্রিয়ট বিমানবিধ্বংসী ব্যবস্থা কিনুক। তবে তুরস্ক বলে আসছে, এফ-৩৫ ও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় আলাদা অবস্থানে থাকবে।
‘‘তুরস্কের সাথে ‘বড় পরিকল্পনা’ করছে রাশিয়া’’
এ দিকে রাশিয়ার অস্ত্র রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান রজোবরন এক্সপোর্টের প্রধান আলেক্সান্ডার মিকেভ বলেছেন, তুরস্কের সাথে আরো ‘বড় ধরনের পরিকল্পনা’ করছে রাশিয়া। প্রথম দফার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার চালান তুরস্কে পৌঁছার পর এই পরিকল্পনা করছে দেশ দু’টি। মঙ্গলবার রাশিয়ার একমাত্র অনুমোদিত অস্ত্র রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান রজোবরন এক্সপোর্টের প্রধান আলেক্সান্ডার মিকেভ এ কথা জানিয়েছেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা রিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি। আলেক্সান্ডার মিকেভ জানান, যেহেতু রাশিয়ার এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রথম চালান তুরস্কে পৌঁছেছে, তাই দেশ দু’টি দ্বিতীয় দফার চালানের ব্যাপারে আলোচনা করছে। সাথে এই কথাও বলেন যে, দুই দেশের সামরিক সহযোগিতা কেবল এস-৪০০-এস প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তার বক্তব্য অনুযায়ী, তুরস্ক এস-৪০০ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার জন্য পুরো অর্থই পরিশোধ করেছে এবং রাশিয়াও প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সব সরঞ্জাম পাঠিয়েছে।