কোন দেশী পেঁয়াজের দাম কত
পেঁয়াজ - ছবি : সংগ্রহ
দেশে পেঁয়াজ সঙ্কটের মধ্যেই নানা রকমের পেঁয়াজের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে বাজারে। একেক পেঁয়াজের আকার যেমন ভিন্ন, স্বাদও ভিন্ন, দামেও আছে পার্থক্য। মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, একেক রকমের পেঁয়াজের একক রকম দাম। আবার পাইকারি ও খুচরা বিক্রিতেও আছে পার্থক্য।
খুচরায় প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ২৩০ টাকা, বার্মিজ ২০০ টাকা, ভারতীয় ২০০ টাকা, পাকিস্তানি ১৯০ টাকা, চীনা ১৬০ টাকা ও মিসরীয় পেঁয়াজ ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি হিসাবে পাঁচ কেজি (এক পাল্লা) হিসেবে দেশি ১১০০ টাকা, বার্মিজ ৯০০ টাকা, পাকিস্তানি ৯২০ টাকা, ভারতীয় ৯৫০ টাকা, চীনা ৭৫০ টাকা ও মিসরীয় পেঁয়াজ ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া পাতাসহ নতুন পেয়াঁজ খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা এবং পাইকারি হিসাবে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়।
ক্রেতা নেই, ঘুমিয়ে সময় কাটছে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের
পেঁয়াজের দাম নিয়ে দেশে এখন চলছে আশ্বাস আর প্রতিশ্রুতির নানা ফুলঝুড়ি। মাঝখানে প্রতিকেজি দেশি পেয়াজের দাম কমে ১৮০ থেকে ৯০ টাকাতয় এলেও এখন আবার অতিক্রম করেছে ডাবল সেঞ্চুরি। কবে কমবে সেটির নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না।
সংশ্লিষ্টরা এখন বলছেন, আমদানিকৃত বড় চালান দেশে পৌঁছালে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে যে পরিমাণ পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে সে পরিমাণ আমদানি নেই। এছাড়া অন্যান্য বছর এই সময়ে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতো। চলতি বছর বৃষ্টি ও ফলন ভালো না হওয়ায় নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসায় পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
এদিকে পেঁয়াজের দাম নাগালের বাইরে হওয়ায় ভোক্তারাও পেঁয়াজের ব্যবহার অনেকাংশে কমিয়ে দিয়েছেন। সেই প্রভাব পড়েছে খুচরা ও পাইকারি বাজারে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দেখা যায় বড় ও ছোট পাইকাররা অলস সময় পার করছেন। দোকানে ক্রেতাদের আনাগোনা না থাকায় অনেকে ঘুমিয়ে পড়েছেন। ক্রেতাশূন্য পেঁয়াজের বাজারে অনেকটাই হতাশ কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা।
কারওয়ান বাজারের বিল্লামিল্লাহ আড়তের পেঁয়াজ ব্যবসায়ি মো. সেলিম বলেন, আগে আমরা প্রতি বস্তা পেঁয়াজ ১৭০০ থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি করে প্রতি বস্তায় ১৫০ থেকে ২০০টাকা লাভ করতে পারতাম। একই পেঁয়াজ আমাদের এখন ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। কালকে চার বস্তা পেঁয়াজ নিয়েছিলাম এখনও বিক্রি করতে পারিনি। বসে আছি।
এই ব্যবসায়ী বলেন, এমনও সময় গেছে আমরা ৫০ থেকে ৮০ বস্তা পর্যন্ত পেঁয়াজ একই দিনে বিক্রি করেছি। পেঁয়াজের দাম বাড়তি হওয়ায় লোকজন আগের মতো পেঁয়াজ কিনতে আসেন না। বসে থেকে বা কখনো বসে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে সময় কাটাই।
আরেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী খলিল বলেন, পেঁয়াজের দাম যখন কম ছিল প্রতিদিন আমরা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতাম। এখন ১ হাজার টাকা আয় করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, মাঝখানে ১৭ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছি। বাহির থেকে আমদানি পেঁয়াজ আসছে এমন খবরে আমাদের কাছে যা ছিল- যে যার মতো করে কম দামে বিক্রি করে দিয়েছি। আমার মতো অন্যদের অবস্থাও একই। তাতে আমার ১৭ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।
কারওয়ান বাজারে ঘুরে দেখা যায় দেখা যায়, খলিলের মতো অন্যান্য পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরাও অলস সময় পার করছেন। কেউ বসে আছেন আর কেউ বা ঘুমিয়ে পড়েছেন দোকানের মধ্যেই।
ব্যবসায়িরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম কম হলে অধিক বিক্রিতে তাদের লাভও বেশি হয়। আগে যারা পাঁচ-দশ কেজি পেঁয়াজ কিনতেন তারাএক কেজিও নিতেও চাচ্ছেন না।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেয়াজের দামে স্থিতিশীলতা আসা দরকার। যাতে ক্রেতা ব্যবসায়ী উভয়েই উপকৃত হবে পারেন।