স্কুলছাত্রীকে নিয়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেন শিক্ষক, স্ত্রীর মর্যাদা দাবিতে অনশন কলেজছাত্রীর
স্কুলছাত্রীকে নিয়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেন শিক্ষক, স্ত্রীর মর্যাদা দাবিতে অনশন কলেজছাত্রীর - ছবি : সংগ্রহ
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীকে নিয়ে পালাতে গিয়ে তপন মল্লিক (৩১) নামের এক শিক্ষক পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। এ ঘটনা চাউর হওয়ার পর পরই আটক শিক্ষক তপনের বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে অনশন শুরু করেছেন একই উপজেলার অনার্স পড়ুয়া এক ছাত্রী। এই ঘটনা পুরো এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার বিকেলে বিষয়টি গোটা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আটক হওয়া তপন উপজেলার শোলক কচুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও হারতা ইউনিয়নের কালবিলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সাতলা স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ব্রজেন্দ্রে নাথ মল্লিকের ছেলে।
এদিকে সপ্তম শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে নিয়ে পালানোর ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে শনিবার টুঙ্গিপাড়া থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সকালে মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক তপন মল্লিক গত বৃহস্পতিবার রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে স্কুল থেকে ফেরার পথে জোর করে তুলে নিয়ে যান। ওই দিন সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এলাকা অতিক্রমের সময় স্থানীয়রা সন্দেহবশত তাদেরকে আটক করে। পরে তারা তাদেরকে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
অপরদিকে এ ঘটনার পরপরই একই দিন (বৃহস্পতিবার) উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের পীরের পাড় গ্রামের বিধান সমদ্দারের অনার্স পড়ুয়া কন্যা যুথিকা সমদ্দার স্ত্রীর মর্যাদার দেয়ার দাবি নিয়ে শিক্ষক তপন মল্লিকের বাড়িতে গিয়ে অনশন শুরু করেছেন।
ভুক্তভোগী যুথিকা সাংবাদিকদের জানান, চলতি বছরের ২ মার্চ বরিশাল চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উভয়পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়েছে। তবে কিছু দিন ধরে তপন মল্লিক যোগাযোগ না রাখায় তিনি (যুথিকা) তপনের বাড়িতে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এস এম নাসিম জানান, স্থানীয়রা আপত্তিকর অবস্থায় তপন মল্লিক এবং ওই ছাত্রীকে অবরুদ্ধ করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
এ বিষয়ে তপন মল্লিকের বাবা ব্রজেন্দ্র নাথ মল্লিক বলেন, আমার ছেলে ৭ম শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিল। কেউ হয়তো তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এ কারণেই তাদের আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওই স্কুল ছাত্রীর কিংবা তার অভিভাবকের কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই তপন মল্লিক ২০১৭ সালে উপজেলার ভরতসেন এলাকার এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। এরপর হারতা এলাকার শুকলাল হালদারের কন্যাকে হিন্দু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর কিছু দিন যেতে না যেতেই তাকে তাড়িয়ে দেন।