হিসাবি চালে এরদোগানের বাজিমাৎ
এরদোগান - মাসুম খলিলী
উত্তর সিরিয়ায় নিরাপদ জোন গঠনের ব্যাপারে এ অঞ্চলের দাপটশালী খেলোয়াড় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে তুর্কি নেতা রজব তাইয়েব এরদোগান চুক্তি সম্পাদন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের নিরাপদ জোন চুক্তির চেয়ে নতুন চুক্তিতে এরদোগানকে কিছুটা ছাড় দিতে হয়েছে। পুতিন-এরদোগান সমঝোতা অনুসারে তুরস্ক সীমান্ত বরাবর নিরাপদ জোনটি ৩২ কিলোমিটারের পরিবর্তে হবে ৩০ কিলোমিটার। নিরাপদ জোনটি লম্বায় ২৪৪ কিলোমিটারের পরিবর্তে হবে ১৫০ কিলোমিটার। জোনটিতে সীমান্তের উভয় পাশে ১০ কিলোমিটার অঞ্চলে রাশিয়া ও তুরস্কের সেনা টহল থাকবে। এই জোন থেকে সম্পূর্ণ বিদায় নিতে হবে সিরীয় কুর্দি মিলিশিয়া ওয়াইপিজির সদস্যদের।
আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল, আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পম্পেওর সাথে তুর্কি প্রতিপক্ষের যে চুক্তি তাতে নিরাপদ জোন করার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে না। কারণ সিরীয় সঙ্কটের তিন প্রধান পক্ষ বাশার সরকার, ইরান ও রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা আরোপ করার মতো কোনো কর্তৃত্ব নেই। রাশিয়ার পুতিনের সাথে তুর্কি নেতা এরদোগানের এই চুক্তির পর বলা যাবে, তুরস্কের নিরাপদ জোনের ধারণাটি বাস্তবে কতটা রূপ লাভ করবে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে অনেকেই আবেগতাড়িত দৃঢ়চেতা শাসক হিসেবে দেখেন। কিন্তু তার মধ্যে কৌশলী রাষ্ট্রনায়কের গুণও যে রয়েছে, এবারের ঝুঁকিযুক্ত সিরীয় অভিযানে তিনি সেটির প্রমাণ রেখেছেন।
এরদোগান দু’টি বিষয়কে তুরস্কের জন্য সঙ্কট হিসেবে চিহ্নিত করেন। প্রথমত, তুরস্কের অখণ্ডতা নিশ্চিত করা। বিশেষত ৩০ শতাংশ কুর্দি ভূমি দেশটির মানচিত্রের সাথে যুক্ত রাখতে হলে উত্তর সিরীয় সীমান্ত থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের দূরে সরিয়ে দিতে হবে। তুরস্কের ওপর আঘাত করার জন্য কুর্দিদের স্বাধীনতার জন্য উসকে দেয়াটাই শত্রুদের প্রধান কৌশল। এ কারণে তুরস্কের বিরোধিতা সত্ত্বেও এ অঞ্চলে কুর্দি ওয়াইপিজির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ সহায়তা করেছিল আইএস দমনের নাম করে। দেশটির জন্য দ্বিতীয় সঙ্কটটি হলো, যে ৩৬ লাখের মতো সিরীয় উদ্বাস্তু এখনো তুরস্কে রয়েছে তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি। আরব বসন্তকে ঘিরে সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে যে গণবিদ্রোহ এবং পরে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল তা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।
এর ফলে দেশটি নানা দিক থেকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। ইরান ও রাশিয়ার সামরিক সহায়তায় কিছু অঞ্চল বাদ দেয়া হলে বাকি সিরিয়ার ওপর এক ধরনের জয় অর্জন করেছেন বাশার আসাদ। এ অবস্থায় তুরস্ক এক দিকে সিরীয় উদ্বাস্তুদের অনিরাপদ কোনো পরিবেশে ফেরত পাঠাতে পারছিল না। অন্য দিকে দীর্ঘমেয়াদি শরণার্থী অবস্থানের কারণে স্থানীয় তুর্কি জনমত একে পার্টির বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছিল। সাম্প্রতিক স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইজমিরের পাশাপাশি ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারা সিটিতে শাসক দলের হেরে যাওয়ার পেছনে এ কারণটি বিশেষভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
এরদোগান এখন উত্তর সিরিয়ার নিরাপদ অঞ্চলে সিরিয়ান উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে পারবেন। এতে তুরস্কের সিরিয়া সীমান্ত অঞ্চলে বৈরী মনোভাবের তুর্কি গেরিলাদের পরিবর্তে ইতিবাচক মনোভাবের একটি জনগোষ্ঠীর বসবাস থাকবে। এতে তুরস্কের এক দিকে নিরাপত্তা, অন্য দিকে অর্থনীতি- দু’টি উদ্বেগের বিষয়ই নিষ্পন্ন হবে। বিষয়টি তুর্কি স্বার্থের জন্য এতটাই অনস্বীকার্য একটি বিষয় যে, সরকারি দল ও বিরোধী দল নির্বিশেষে সবাই সরকারের এই উদ্যোগকে সমর্থন করেছে। আর এটি তুরস্কের বিরুদ্ধে অবরোধের মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণের পরও জরুরিভাবে সমঝোতায় আসার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে উৎসাহিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া- এ দুই দেশের সাথে সম্পাদিত চুক্তিতে কয়েকটি মৌলিক বিষয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো সিরীয় সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথমত, সিরিয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতা বহাল থাকবে। কুর্দি গ্রুপ, আইএস বা অন্য কোনো গ্রুপের রাষ্ট্রিক স্বতন্ত্র অস্তিত্ব কোনো পক্ষই মেনে নেবে না।
দ্বিতীয়ত, সিরিয়ার সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধান করা হবে। আস্তানা সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে সিরিয়ার বিভিন্ন গ্রুপের নিরাপদ রাজনৈতিক পুনর্বাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তৃতীয়ত, প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে সিরিয়ায় একটি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণ করা সম্ভব হবে। এসব ব্যবস্থা সিরীয় সঙ্কটে সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষার মতো একটি অবস্থা তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়।
প্রশ্ন উঠতে পারে, চুক্তির সাথে অসংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষ কি পুরো প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে? বিশেষত ইসরাইল এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব লিগ বা উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ। এ দুই পক্ষ সিরিয়ায় অস্থিরতা বজায় রাখতে চাইলে তারা একেবারেই ব্যর্থ হবে তা হয়তো বলা যাবে না। তবে নানা কারণে তারা এ ধরনের পদক্ষেপে নিজ দেশের স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারবে না। সৌদি আরব রাষ্ট্র হিসেবে এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল ছিল। এখনো দেশটির স্পর্শকাতর অনেক স্থানে মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সাথেও কৌশলগত সম্পর্ক নির্মাণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রিয়াদ। ফলে ওয়াশিংটন ও মস্কোর স্বাক্ষরিত চুক্তির বিপরীতে গিয়ে সৌদি আরব সামরিক কোনো ভূমিকা নেয়ার ঝুঁকি না-ও নিতে পারে।
ইসরাইলে কট্টরপন্থী নেতানিয়াহু সরকার গঠনে আবারো ব্যর্থ হয়েছে। সেখানে মধ্যপন্থী নীল-সাদা দলের নেতৃত্বে কোয়ালিশন সরকার গঠন হলে এই সরকার আরবদের সাথে সহাবস্থানের নীতি গ্রহণ করতে পারে। ফলে ইসরাইল কুর্দি মিলিশিয়াদের নৈতিক সমর্থন করলেও তা কোনোভাবেই বেপরোয়া রূপ না-ও নিতে পারে। এর বাইরে ইউরোপ বা চীনের কোনো ভূমিকা থাকার সম্ভাবনার বিষয়টি বিবেচনায় আসতে পারে। তারা সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযানের নিন্দা করেছে।
তবে তুরস্ক সে দেশে অবস্থানরত শরণার্থীদের নিরাপদে প্রত্যাবাসন করতে না পারলে ইউরোপে উদ্বাস্তু প্রবাহ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে এ ধরনের ঘটনা একবার ঘটেছে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য বড় ধরনের এক সঙ্কট নিয়ে আসে। স্থানীয় রাজনীতিতে উগ্র জাতীয়তাবাদী শক্তিগুলো শক্তিমান হয়ে ওঠে। এ কারণে সক্রিয়ভাবে ইউরোপের কোনো দেশই তুরস্কের এই অভিযানের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়নি। চীনের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক মোটামুটি ভালোই দেখা গেছে। কিন্তু বেইজিংয়ের সামনে উইঘুরের তুর্কি বংশোদ্ভূত মুসলিমদের ব্যাপারে এক ধরনের ভীতি রয়েছে। এ কারণে তুরস্কের শক্তিশালী হয়ে ওঠা অনেক সময় চীন প্রত্যাশা করে বলে মনে হয় না। তবে বৈশ্বিক রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে এরদোগান এই স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে চীনের সাথে সঙ্ঘাত সৃষ্টি হওয়ার মতো পরিবেশে যায়নি।
তুরস্কের সিরিয়া অভিযানকে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনা গত কিছু দিনের মধ্যে ঘটেছে, এর সুদূরপ্রসারী একটি প্রভাবের বিষয় রয়েছে। মুসলিম বিশ্বে সৌদি নেতৃত্বাধীন কট্টর সুন্নি বলয় এবং ইরানের নেতৃত্বাধীন কট্টর শিয়া বলয়ের অবস্থান এত দিন বিশেষভাবে দেখা যেত। এখন মধ্যপন্থী একটি শক্তি বলয়ের উত্থান ঘটেছে, যে বলয়টির নেতৃত্বে রয়েছে তুরস্ক, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়া। তুরস্ক হলো দীর্ঘ ৬০০ বছর ধরে ইসলামী খেলাফতে নেতৃত্ব দানকারী দেশ, যে সময় প্রায় অর্ধেক ইউরোপ সেই উসমানীয় খেলাফতের অধীনে ছিল। পাকিস্তান হলো কয়েক শ’ বছরব্যাপী ভারতীয় উপমহাদেশ শাসনকারী মোগল শাসনের বৃহত্তর উত্তরাধিকার পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। মালয়েশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের শক্তিমান অর্থনীতির মুসলিম দেশ। তিনটি দেশই বৈশ্বিকভাবে বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে।
এখন সময়ের একটি বিশেষ দিক হলো, মুসলিম উম্মাহর এজেন্ডা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে যেখানে সৌদি আরব এখন গুরুত্বহীন বলে মনে করছে আর ইরান তার রাষ্ট্র ও জাতিগত স্বার্থকে অনেক বড় করে দেখছে, সেখানে মধ্যপন্থী বলয়টি ফিলিস্তিন-কাশ্মির-রোহিঙ্গার মতো উম্মাহ ইস্যুগুলোতেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। ইয়েমেনের সামরিক সঙ্ঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করার প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিচ্ছে এ বলয়টি। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করছে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে পরস্পরকে শত্রু হিসেবে নিশানা করার পরিবর্তে মুসলিম উম্মাহর স্বার্থ ও অবস্থানকে সামনে রেখে শত্রু-মিত্র চিহ্নিত করার বক্তব্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
মধ্যপন্থী বলয়টির মূল লক্ষ্য হলো, ইসলামী দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ স্বার্থসঙ্ঘাত কমিয়ে নিয়ে আসা। এ ব্যাপারে এবারের জাতিসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশনে এই তিন দেশের সরকারপ্রধান যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি বিশেষভাবে লক্ষ করার মতো। তিন নেতাই তাদের বক্তব্যে উম্মাহর ইস্যু নিয়ে জোরোলোভাবে কথা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানি নেতা ইমরান খানের বক্তব্যটি ছিল বিশেষভাবে আলোচিত। তারা শুধু কথা বলেই ক্ষান্ত হচ্ছেন তা নয়, একই সাথে তা কাজেও পরিণত করেছেন।
কাশ্মির ইস্যুতে উম্মাহর স্বার্থ সমর্থন করায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তুরস্ক সফর বাতিল করেছেন। আর মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ভারতের এই পদক্ষেপ উম্মাহর স্বার্থে কথা বলা বা কাজ করা থেকে কাউকে নিবৃত করতে পারেনি, বরং ইয়েমেনের যুদ্ধ বন্ধ করা এবং ইরান-সৌদি আরব বৃহত্তর সমঝোতা প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তান তার প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়েছে। এ জন্য উম্মাহ বন্ধনটিকে জোরালো করার চেষ্টা অন্যান্য ক্ষেত্রেও পরিচালিত হচ্ছে।
মুসলিম উম্মাহর মধ্যে সমঝোতা হলে বিশেষত সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে এখন যে সর্বাত্মক বৈরিতা চলছে তার অবসান ঘটলে মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য মুসলিম দেশে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য আধিপত্যকামী শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের অবকাশ অনেকখানি কমে আসবে। মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর ইসরাইল প্রতিষ্ঠার চলমান প্রয়াস দুর্বল হয়ে যাবে। আর উপমহাদেশে অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার যে এজেন্ডা নিয়ে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার অগ্রসর হচ্ছে তাও দুর্বল হয়ে পড়বে, যা এ দুই প্রধান অঞ্চলে মুসলিম দেশগুলোর নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থকে প্রকারান্তরে সমুন্নত করবে।
এর বাইরে আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো এ বলয়ের দেশগুলো পরস্পরের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে জ্ঞানবিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সামরিক ক্ষমতাকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। তুরস্ক, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়া ছাড়াও এই প্রচেষ্টায় যুক্ত রয়েছে জনসংখ্যার দিক থেকে বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া।
এটি এমন একটি প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ, যা ইসলামী সম্মেলন সংস্থাকে কার্যকরভাবে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থায় রূপান্তর করতে পারে। পরস্পরের দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাতকে কমিয়ে এনে সহযোগিতার একটি বৃহত্তর বন্ধন তৈরি করতে পারে। আর কার্যকর ঐক্য সৃষ্টির যে প্রচেষ্টা রাষ্ট্রিক নেতৃত্বে একটি কাঠামোগত অবয়ব গ্রহণ করছে, সেটিই হতে পারে আগামী দিনের সম্ভাবনার আলো সৃষ্টিকারী উপাদান। আর জনগণ পর্যায়ে একেপি, মুসলিম ব্রাদারহুড, সালাফি আন্দোলন, কওমি ও দেওবন্দি আন্দোলন, জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো একটি ভিত্তি তৈরি করবে।
এ জন্য এসব শক্তির মধ্যে বিরোধ সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে একপাশে সরিয়ে রেখে মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে এগোতে হবে। মুসলিম দেশগুলোর জাতীয় লক্ষ্যগুলোর সাথে উম্মাহর লক্ষ্যের সমন্বয় এ ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সেটিকে একটি কার্যকর রূপ দিতে পারলে দ্বিতীয় ক্রুসেডে নেতৃত্বদানকারী গাজী সালাউদ্দিনের বংশধারা কুর্দিদেরকেও ইসরাইলের মধ্যে মৈত্রীর সন্ধান করতে হবে না। উম্মাহ স্বার্থই তাদের নিরাপত্তা ও পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করতে পারবে। বর্তমান বৈরী বিশ্ব পরিবেশের মধ্যেও টানেলের অপর প্রান্তে উজ্জ্বল আলো ক্রমেই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে মুসলিম উম্মাহর সামনে।
mrkmmb@gmail.com