একসাথে দুই স্বামী : বিপাকে তানজিলা
তানজিলা হায়দার - ছবি : সংগৃহীত
ছেলের ওপর রাগ করে
কুমিল্লার মুরাদনগরে ছেলে ভরণ-পোষণের খরচ না দেয়ায় রাগে নাতিকে অপহরণ করানোর অভিযোগ উঠেছে দাদির বিরুদ্ধে। উপজেলার নহল গ্রাম থেকে তাফসির ইসলাম (৫) নামে ওই শিশুটিকে অপহরণের আট ঘণ্টার মধ্যে শুশুন্ডা থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শিশুটির দাদি জোহরা বেগম (৬০), একই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে ও শিশু তাফসিরের বাবার চাচাতো ভাই কবির হোসেন (৩৩), রায়তলা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৬) ও নাগেরকান্দি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়াকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাফসির উপজেলার নহল গ্রামের মালেয়শিয়া প্রবাসী আক্তার হোসেনের ছেলে। বুধবার কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে অপহৃত শিশুটির মা তানিয়া আক্তার টাকা উত্তোলনের জন্য উপজেলার কোম্পানীগঞ্জে যান। ব্যাংক থেকে বাড়ি ফেরার পথে জানতে পারেন, শিশু তাফসিরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার ৫ মিনিট পর অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেনী শহরের রামপুর এলাকার হাফেজ উকিল বাড়ির মজিবুল হকের ছেলে জিয়াউল হক বাবলু কলেজে পড়ার সুবাধে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় সদর উপজেলার উত্তর শর্শদি গ্রামের ডিপটি বাড়ির রকিবুল হায়দারের মেয়ে তানজিলা হায়দারের সাথে। প্রেম সম্পর্কের এক মাসের মধ্যে তানজিলা তাড়াহুড়ো করে বাবলুকে বিয়ের করতে বাধ্য করেন। একপর্যায়ে কাউকে না জানিয়ে গোপনে গত ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট তানজিলা ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে (কাবিনে) বাবলুকে বিয়ে করেন।
বিয়ের কিছুদিন পর বাবলু তার স্ত্রী তানজিলাকে ঘরে তুলে নেন। ঘরে তুলে নেয়ার কিছুদিন পর বাবলু উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য জাপান চলে যান। এরপর বেপরোয়া হয়ে উঠেন বাবলুর স্ত্রী তানজিলা। তার আচার-ব্যবহার সন্দেহ হলে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেন বাবলুর মা ছালেহা বেগম। খোঁজ নিয়ে দেখেন তার ছেলের বউ তানজিলা আগে আরো দুই বিয়ে করেছেন।
গত ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর শর্শদী ইউনিয়নের কাজী অফিসে তানজিলাকে ৬ লাখ টাকা দেনমোহর বিয়ে হয় চৌদ্দগ্রামের গুণবতি বাজার এলাকার ঝিগড়া গ্রামের মাবুদুল হকের ছেলে মো: আবদুল্লাহ আল মামুন বিয়ে করেন। কাবিনে তানজিলা নিজেকে কুমারী হিসেবে পরিচয় দেয়।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনার পর বাবলুর মা ছালেহা বেগম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। প্রায় দুই বছর পর মামলার দীর্ঘ কার্যক্রম শেষে বুধবার আদালত তানজিলা হায়দারকে দন্ডবিধির ৪২০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছর সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জাহিদ হোসেন খসরু।