কোন রক্তের লোকের চরিত্র কেমন?
কোন রক্তের লোকের চরিত্র কেমন? - ছবি : সংগৃহীত
জাপানের কোনো এক স্থানে আপনার সঙ্গে অচেনা কারো হঠাৎ আলাপ হলো। এক কথা- দু’কথার পরই উল্টোদিকের মানুষটি আচমকাই আপনার ব্লাড গ্রুপ জানতে চাইলেন। ভাবখানা এমন যেন আপনার বাড়ি কোথায় বা কোথায় চাকরি করেন, জানতে চাইছেন। আপনার কাছে বিষয়টা একটু অস্বস্তিকর মনে হলেও জাপানিদের কাছে কিন্তু এটাই দস্তুর। প্রথম আলাপেই ব্লাড গ্রুপ জানার বিষয়টি জাপানের প্রাচীন না হলেও বহুল প্রচারিত একটি রীতি।
এহেন ব্যক্তিগত প্রশ্ন প্রথম সাক্ষাতেই কেন করেন জাপানিরা? তাদের বিশ্বাস, রক্তের গ্রুপ থেকে মানুষের চরিত্র সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করা যায়। যেহেতু ব্লাড গ্রুপের আবিষ্কারই হয়েছে ১৯০১ সালে, তাই প্রচলিত বিশ্বাসটি খুব পুরনো হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। ব্লাড গ্রুপ থেকে মানুষের চরিত্র বোঝার বিষয়টি সবার প্রথম প্রকাশ্যে আসে ১৯১৬ সালে। সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করত অনেকে। তবে, সত্তরের দশকে জাপানি লেখক মাসাহিকো নোমি বিষয়টিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এই বিষয়ের উপর কমপক্ষে ১০টি বই লিখেছেন তিনি। প্রতিটিই বেস্টসেলার। ১৯৮১ সালে তার মৃত্যুর পর ছেলে তোশিতাকা নোমি বাবার ‘ব্যাটন’ নিজের হাতে তুলে নেন। বাবার গবেষণা বর্তমানে ছেলেই এগিয়ে নিয়ে চলেছে। যদিও, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। দীর্ঘদিন ধরে চালানো সমীক্ষা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফলই বাবা ও ছেলে লিপিবদ্ধ করেছেন।
মানুষের চরিত্র নির্ধারণের বিষয়টি প্রধান চারটি ব্লাড গ্রুপের মধ্যেই ঘোরাফেরা করে। এক্ষেত্রে পজিটিভ অথবা নেগেটিভের কোনো ভূমিকা থাকে না। এবার এক নজরে দেখে নেয়া যাক, কোন ব্লাড গ্রুপের মানুষের চরিত্র কী ধরনের হয়।
‘এ’ গ্রুপ
এরা সাধারণত গোছানো স্বভাবের হয়ে থাকেন। ছোটখাটো বিষয়েও এদের সজাগ দৃষ্টি থাকে। নিখুঁত কাজ করতে পছন্দ করেন। এককথায় পারফেকশনিস্ট। এ গ্রুপের রক্তের অধিকারীরা লাজুক প্রকৃতির হন এবং নেতৃত্বদানে ভয় পান।
বি গ্রুপ
এই গ্রুপের রক্তের মানুষরা খুবই প্রাণোচ্ছল স্বভাবের হয়ে থাকেন। সততা এদের অন্যতম গুণ। যদিও, পরিস্থিতির নিরিখে তাদের স্বভাব বদলাতে থাকে। তারা শুধু সেই বিষয়েই মনোনিবেশ করতে পারেন, যে বিষয়ে তাদের আগ্রহ রয়েছে।
ও গ্রুপ
এই গ্রুপের রক্তের লোকজন সহজেই সকলের সঙ্গে মিশতে পারেন। যার ফলে অনেকসময়ই এদের ভালো মধ্যস্থতাকারী বা মুশকিল আসান হিসেবে দেখা হয়। এঁরা অত্যন্ত দূরদর্শী এবং আত্মবিশ্বাসী হন। কখনও কখনও তাঁদের এই আত্মবিশ্বাস অনেকের কাছে দম্ভ মনে হতে পারে। তবে, তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বেশিরভাগ জাপানি প্রধানমন্ত্রীরই ব্লাড গ্রুপ হল ‘ও’।
এবি গ্রুপ
সবচেয়ে কম পাওয়া যায় এই ব্লাড গ্রুপ। সাধারণত এদের দ্বৈত সত্তা থাকে। এরা এ গ্রুপের মতো পারফেকশনিস্ট হওয়ার পাশাপাশি বি গ্রুপের মতো প্রাণখোলা স্বভাবেরও হন। বিশ্বের বহু নামজাদা ব্যক্তিত্বই এই গ্রুপের রক্তের অধিকারী।