যেসব রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়া - ছবি : সংগৃহীত
সংবাদ সম্মেলন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ বললেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল, অবনতি ঘটেনি। এর আগে খালেদা জিয়ার বোন তার সাথে দেখা করে মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন যে বেগম জিয়া খুবই অসুস্থ। তারা তাকে দেশের বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার দুপুরে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউর প্রোভিসি অধ্যাপক সাহানা আক্তার রহমান, প্রোভিসি অধ্যাপক মুহাম্মদ রফিকুল আলম, বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুল হক, খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক মো: জিলন মিয়া সরকারসহ অন্যান্য চিকিৎসক।
পরিচালক মাহবুবুল হক জানান, বেগম খালেদা জিয়ার রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন (উচ্চ রক্তচাপ), আথ্রাইটিস, দাঁতের সমস্যা ও দুর্বলতা। পরিচালক বলেন, তবে এখন তার দাঁতের সমস্যা নেই। তিনি এখানে চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে আছেন। এই সাত মাসে অনেক উন্নতি হয়েছে, স্বাস্থ্যের অবস্থা এখন স্থিতিশীল, অবনতি ঘটেনি।
গত দুই সপ্তাহ যাবৎ খালেদা জিয়াকে ডাক্তাররা দেখতে যাননি এমন অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যাপক জিলন মিয়া সরকার জানান, আমরা প্রত্যেক দিন দেখি না। তা ছাড়া তিনি একজন ভিভিআইপি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাকে দেখতে হলে তার অনুমতি প্রয়োজন হয়। গত বুধবারও দেখেছি। ডা: জিলন মিয়া বলেন, তার রয়েছে অনিরাময়যোগ্য আথ্রাইটিস, যা কোনো দিন ভালো হবে না। বিদেশে পাঠানোর কথা চিন্তা করিনি। আমরা চিকিৎসায় ব্যর্থ হয়েছি বলে মনে করি না।
‘বেগম খালেদা জিয়া হেঁটে হেঁটে জেলখানায় গিয়েছিলেন, এখন তিনি হুইল চেয়ারে চলাফেরা করেন। তাহলে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়নি কিভাবে বলা যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে জিলন মিয়া সরকার বলেন, উনার স্বাস্থ্য নিয়ে যারা বাইরে কথা বলেন ‘তারা মেডিক্যাল বোর্ডের সাথে কথা বলেন না, তারা মনগড়া কথা বলেন।’ কেবল রোগীর সাথে কথা বললে কিছু গ্যাপ থেকে যায়। অধ্যাপক জিলন মিয়া বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা এমন হয়েছে কোনো কিছু ধরে হাঁটতে পারবেন। রোগীর ব্যাপারে মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের মনোভাব আন্তরিক।’
অধ্যাপক সাহানা আক্তার রহমান বলেন, গত ২৮ বছর ধরে তিনি আথ্রাইটিসে ভুগছেন, চিকিৎসকেরা তাকে ভ্যাক্সিন দিতে চান। কিন্তু তিনি ভ্যাক্সিন দিতে চাচ্ছেন না। তাকে কাউন্সিলিং করা হয়েছে ভ্যাক্সিন দিতে কিন্তু তিনি রাজি হচ্ছেন না। তিনি সম্মতি দিলেই ভ্যাক্সিন দেয়া হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাধুনিক ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ রয়েছে, ফিজিওথেরাপির সব ধরনের মেশিনও রয়েছে। খালেদা জিয়ার মৃত্যু আশঙ্কা রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, না, আমরা এমন কোনো আশঙ্কা করছি না। এখানে চিকিৎসাবিষয়ক নৈতিকতা মেনে চিকিৎসা করা হচ্ছে। তিনি একজন সিনিয়র সিটিজেন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাকে দেখার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র শৈথিল্য করি না।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে পরিচালক মাহবুবুল হক বলেন, তাকে একদিন পর পর ফিজিওথেরাপি দেয়া হয়। দৈনিক দুইবার রক্তে সুগারের পরিমাণ মাপা হয়। প্রতিদিন রক্তচাপ, পালস (নাড়ি) ও তাপমাত্রা মাপা হয়।