৪৪ ঘণ্টার অনশন প্রেমিকার, অবশেষে ৬ লাখ টাকার কাবিনে বিয়ে
৪৪ ঘণ্টার অনশন প্রেমিকার, অবশেষে ৬ লাখ টাকার কাবিনে বিয়ে - ছবি : সংগৃহীত
কক্সবাজারের পেকুয়ায় প্রেমিকের বাড়ীতে গিয়ে দীর্ঘ ৪৪ ঘন্টা ধরে অনশন করছেন এক প্রেমিকা। অবশেষে প্রেমিকও ৬ লাখ টাকা কাবিনে বিয়েতে রাজি হয়েছেন বলে জানান প্রেমিক নিজেই। সোমবার পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সুতাচুরা এলাকার নবী হোসেনের বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকার লোকজন জানান, গত ২০ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে এক নারী হঠাৎ ওই এলাকার নবী হোসেনের বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে অবস্থান নেয়। এসময় তিনি জানায়, নবী হোসেনের পুত্র মোহাম্মদ কাইয়ূম প্রকাশ হেফাজের (২৫) সাথে তার দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তাকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও কাইয়ূম অন্যত্র বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে শুনে সে নিজেই চলে আসে প্রেমিকের বাড়ীতে।
কাইয়ূম জানান, “পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ভেলোয়াপাড়া এলাকার আমিন শরীফের মেয়ে জুলেখা বেগমের (২০) সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠছে দীর্ঘ ৩ বছর ধরে। তাকেও আমি মন থেকে ভালবাসি। কিন্তু তার মনে সন্দেহ তৈরী হওয়ায় আমাকে না জানিয়ে সে নিজ থেকেই আমার বাড়ীতে চলে আসে। তখন আমি বাড়ীতে ছিলাম না। আমি মাস্টার্স পরীক্ষা দেয়ার জন্য চট্টগ্রামে আছি। ইতোমধ্যে প্রেমিকার সাথে মোবাইলে কথা বলে ৬ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়েতে রাজী হয়েছেন বলে জানান তিনি। তার বাবা মাও এটি মেনে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান জানান, “আমি বিষয়টি শুনে প্রেমিক কাইয়ূমের বাড়ীতে গিয়ে প্রেমিকা জুলেখার সাথে কথা বলেছি। সে জানিয়েছে, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে মেয়েটির সাথে কাইয়ূমের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বিয়ের আশ্বাস দিয়েও বিয়ে না করায় সে প্রেমিকের বাড়ীতে চলে আসে। এসময় প্রেমিক বাড়ীতে ছিল না বলে জানান তিনি।”
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রেমিকা তার অবস্থানে অনড় রয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “প্রেমিকের বাড়ীতে প্রেমিকার অনশনের বিষয়টি শুনেছি তবে আমি এলাকার বাইরে থাকায় বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।”
এদিকে অনেক চেষ্টা চালিয়েও মেয়ের পক্ষের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রেমিকার পিতার বাড়ী টইটং ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কাশেম জানান, “আমিন শরীফের মেয়ে জুলেখা বেগম পেকুয়ার উজানটিয়া ইউনিয়নে তার প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান নেয়ার বিষয়টি ওই এলাকার ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান আমাকে জানানোর পর উভয়পক্ষ কথা বলে একটি সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
স্থানীয়রা জানান, প্রেমিক প্রেমিকা দুজনই শিক্ষার্থী। মোহাম্মদ কাইয়ূম বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষার্থী এবং প্রেমিকা জুলেখা চকরিয়া সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষার্থী। প্রেমিক কাইয়ূম ৫ ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় এবং প্রেমিকা জুলেখা ৪ ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয়।