চাঁদপুরে মা ইলিশের জমজমাট হাট, কোটি টাকার লেনদেন
ইলিশ - ছবি : সংগৃহীত
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে বিভিন্ন চরাঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে ধরা হচ্ছে মা ইলিশ। নিয়মিত বসছে জমজমাট ইলিশের হাট। শুধু রাতের বেলাতে নয়, দিনের বেলাতেও জমজমাট ইলিশের হাট বসিয়ে বিক্রি করছে মা ইলিশ।
বিশেষ করে জেলার মতলব উত্তরের দক্ষিণ বোরচরে ও চরউমেদে রাতে জমজমাট ইলিশের হাট বসলেও দিনের বেলাও হাট চালাচ্ছে বীরদর্পে। প্রশাসন মা ইলিশকে রক্ষার জন্য মেঘনা নদীর পূর্ব অঞ্চলে অভিযান চালালেও পশ্চিম অঞ্চল থাকছে অরক্ষিত।
মা ইলিশ ধরা পড়ছে ঝাঁকেঝাঁকে এবং তা বিক্রি হচ্ছে পানির দামে। পানির দামে বিক্রি হলেও প্রতিদিন পাইকারী বেচাকেনা হচ্ছে কোটি টাকারও ওপরে। পদ্মা- মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে মা ইলিশের আড়ৎগুলো সবচেয়ে জমজমাট।
এখানে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের মা ইলিশের আড়ৎ রয়েছে। এসব আড়ৎএ দিনে-রাতে কোটি টাকার ওপরে বেচাকেনা হয় বলে আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তদিয়ে জানান কয়েকজন আড়ৎদার।
আর এসব আড়ৎ বা হাটে বেচা-কেনা হচ্ছে উৎসবমূখর পরিবেশে। পাইকারী ছাড়া এখানে কোন রকমের খুচরা বিক্রি হয় না। নৌ পথে এখানকার মা ইলিশ যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে।
স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম জানায়, এখানকার রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা জড়িত আছে বলেই যে যার মতো করে মা ইলিশগুলো ধরছে এবং হাট বসিয়ে বিক্রি করছে।
স্থানীয় অনেকে জানিয়েছে, চরাঞ্চলে মা ইলিশের আড়ৎগুলো তুলনামূলক বেশী জমজমাট থাকে বেলা ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত, বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত, রাত সাড়ে ৭টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। অন্য সময়েও মাছ আসে তবে তুলনামূলকভাবে কম।
পদ্মা-মেঘনা নদীর পাড়ের স্থায়ী মৎস্য আড়ৎগুলো বন্ধ থাকলেও মেঘনা পাড়ের লঞ্চঘাটগুলো সংলগ্ন অঞ্চল, মেঘনার পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ।
এছাড়া বাড়ী বাড়ী গিয়েও মা ইলিশ ফেরি করে বিক্রি করছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। দিনের বেলায় নদীতে পূর্ব অঞ্চলের জেলেদের মাঝে পুলিশি আতংক থাকলেও সন্ধ্যার পর পুলিশী আতংক কেটে যায়। তবে পদ্মা-মেঘনা নদীর পশ্চিমাংশের নদীতে জেলেদের কোন রকমের ভয় কাজ করেনা।
কেননা, সেখানে মা ইলিশ রক্ষাকারী টাক্সফোর্স তেমন একটা যায় না বললেই চলে। আর গেলে তাদের উপরও জেলেরা হামলা চালায়।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী জানান, মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বহু জেলেকে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। তবে এত বিশাল নদী এলাকা দিন-রাত পাহারা দেয়া খুবই কঠিন কাজ। জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা ও জেলেদের মধ্যে সচেতনতা না আসলে এ অভিযান সফল করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।