টার্গেট কৃষ্ণাঙ্গ, বাদামি ও মুসলিম অভিবাসী
টার্গেট কৃষ্ণাঙ্গ, বাদামি ও মুসলিম অভিবাসী - ছবি : সংগ্রহ
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, বর্ণবাদী সহিংসতা ও সন্ত্রাস আধুনিক বিশ্বে ভয়াবহ ব্যধির মতো মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। প্রত্যেক শান্তিকামী মানুষকে বর্ণবাদের এই বাড়-বাড়ন্ত দশা উদ্বিগ্ন ও ব্যথিত করছে। বর্ণবাদ নিয়ে সম্প্রতি বেশি চিন্তার কারণ হচ্ছে, বর্ণবাদ সেই সব দেশেই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে যারা নিজেদের সমাজকে গণতান্ত্রিক, মানবিক বলে দাবি করে এবং সন্ত্রাস ও বর্ণবাদী বিরোধী বলে পরিচয় দেয়। যারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীল’ অবস্থান গ্রহণকারী। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ওই দেশগুলোতেই যখন বর্ণবাদ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে তখন এর বৈশ্বিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে।
গত ৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ও ওহিও রাজ্যে একই দিনে দু’টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। যে হামলাকে এফবিআই অভ্যন্তরীণ বর্ণবাদী সন্ত্রাসী হামলা বলে চিহ্নিত করেছে। এই দু’টি হামলায় ৩০ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ সংহার হয়। যুক্তরাষ্ট্রে এমন বন্দুক হামলা আকৎস্মিক কোনো ঘটনা নয়। প্রায়ই এমন হামলার ঘটনা ঘটে। কিন্তু সম্প্রতি ইউরোপ-আমেরিকায় ঘটে যাওয়া বেশ কিছু হামলার ঘটনা বৈশ্বিক সন্ত্রাস, বর্ণবাদ ও শ্বেত-শ্রেষ্ঠত্ববাদী সন্ত্রাস নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।
গত ৪ আগস্ট মাত্র ১৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি বন্দুক হামলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের সীমান্তবর্তী শহর এল পাসোর ওয়ালমার্ট শোরুমে প্যাট্রিক ক্রুসিয়াস নামে ২১ বছর বয়সী এক বন্দুকধারী যুবকের এলোপাতাড়ি গুলিতে ২১ জন প্রাণ হারায় এবং আহত হয় ২৪ জন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে টেক্সাসের হামলা অষ্টম নৃশংস ও ভয়াবহ ঘটনা। এল পাসো হামলার ১৩ ঘণ্টা ব্যবধানের ওহিও রাজ্যের ডেটন এলাকায় রাত ১টার দিকে দ্বিতীয় হামলার ঘটনাটি ঘটে। যাতে ৯ জন প্রাণ হারায় এবং ১৬ জন আহত হয়। পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে ডেটনে হামলাকারী নিহত হয়। তাই এই হামলাকারীর পরিচয় ও হামলার কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। অন্য দিকে এল পাসোতে হামলাকরী প্যাট্রিক ক্রুসিয়াস সম্পর্কে এফবিআইয়ের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম সিএনএন জানাচ্ছে, হামলাকারী একজন শ্বেতাঙ্গ-শ্রেষ্ঠত্ববাদী। সে এই হামলার জন্য গত মার্চ মাসে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট চার্চের মসজিদে হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্টের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েছে।
হামলার আগে ব্রেন্টন ট্যারান্ট যেমন ৭৪ পৃষ্ঠার একটি ঘোষণাপত্র ‘৮পযধহ’ নামে একটি অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে তেমনি প্যাট্রিক ক্রুসিয়াসও হামলার ঠিক ১৯ মিনিট আগে ‘দ্য ইনকনভেনিয়েন্ট ট্রুথ’ তথা ঝামেলাপূর্ণ সত্য শিরোনামে একটি ঘোষণাপত্র ‘৮পযধহ’ নামে ওই একই অনলাইন সাইটে প্রকাশ করে। ব্রেন্টন ট্যারান্টের ঘোষণাপত্র ছিল কৃষ্ণাঙ্গ, বাদামি ও মুসলিম অভিবাসীদের বিরুদ্ধে। তেমনি ক্রুসিয়াসের ঘোষণাপত্রটিও ছিল লাতিন আমেরিকার ‘হিস্প্যানিক’ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে। ক্রুসিয়াস স্বীয় ঘোষণাপত্রে ক্রাইস্ট চার্চে মসজিদে হামলাকে সমর্থন করে এবং ট্যারান্টের প্রশংসাও করেছে। ক্রাইস্ট চার্চে হামলাকারী ট্যারান্ট অনুপ্রাণীত হয়েছিল ২০১১ সালের জুলাই মাসে নরওয়েতে হামলা করে ৭৭ জনের প্রাণ সংহারী অ্যান্ডার্স ব্রেইভিক কর্তৃক। ব্রেইভিক ছিল একজন শ্বেতাঙ্গ খ্রিষ্টান, চরম বর্ণবাদী ও অভিবাসন বিরোধী। ব্রেইভিকও হামলার আগে ১৫ শ’ পৃষ্ঠার ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছিল। এসব মিল থেকে পুলিশ ও এফবিআইয়ের পক্ষ থেকে এই হামলার পিছনে বর্ণবাদী মনোভাব ও অভিবাসন বিরোধিতাকে দায়ী করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এরকম হামলার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। বিশেষ করে ২০১৫ সালের পর থেকে বর্ণ-বিদ্বেষী হামলার পরিসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া হামলাগুলোর তথ্য রাখে ‘ম্যাস শুটিং ট্র্যাকার’ নামে একটি সংগঠন জানাচ্ছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২৯১টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩৩৫ জন নিহত এবং সহস্রাধিক মানুষ আহত হয়েছে। সংগঠনটির হিসাব মতে, এ বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে গড়ে ৪১ জন মানুষ প্রাণ হারায়। নিহতের মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগ শিশু।
সংগঠনটির হিসাব মতে, ১৯৭০ সালের পর থেকে দেশটিতে- স্কুলসহ, ২০১৮ সালে সবচে বেশি হামলা হয়েছে। গত বছর বন্দুক হামলায় কমপক্ষে ৫২৮ জন নিহত হয়েছে। ওই বছর গড়ে প্রতি মাসে ৪৪ জন করে বন্দুক হামলায় প্রাণ হারায়। যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করে ‘এডুকেশন উইক’ পত্রিকার হিসাব মতে, ২০১৮ সালে দেশটির স্কুলে ৯৪টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ১১৩ জন প্রাণ হারায়।
পত্রিকাটির তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলো বছরে ১৮০ দিন খোলা থাকে। এ হিসাবে স্কুলে আট দিনে গড়ে একটি করে বন্দুক হামলা হয়েছে। ম্যাস শুটিং ট্র্যাকারের তথ্য মতে, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার ৬৫৬টি বন্দুক হামলা হয়েছে। এতে ৩ হাজার ৩৬৯ জন মানুষের প্রাণ সংহার হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমন ঊর্ধ্বগতির বন্দুক হামলার পেছনে কোন বিষয়গুলো কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ঘটনা বাড়-বাড়ন্ত। প্রতিষ্ঠানটির মতে, এসব হামলার বড় অংশের দায়বর্তায় অভিবাসন, গায়ের রঙ ও ধর্ম পরিচয় নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটা ব্যক্তি ও দলগুলোর ওপর। এ ছাড়াও রয়েছে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসের বিষয়ে তথা যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী ব্যক্তি ও সংগঠনের বিষয়ে প্রশাসনের নরজদারীর অভাব এবং নিয়ন্ত্রণহীন অস্ত্র আইন; বাহিরের বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠন কর্তৃক হামলা।
হেট ক্রাইম নিয়ে কাজ করা ‘অ্যান্টি-ডিফেমেশন লিগ’ (এডিএল) নামে একটি সংস্থা জানাচ্ছে, ২০১৮ সালে ৫০টি বন্দুক হামলা করেছে ডান-চরমপন্থী সংগঠনগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রে সংগঠিত বন্দুক হামলার তিন-চতুর্থাংশই ঘটায় শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী গ্রুপ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আরেকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সাউদার্ন পোভার্টি ল সেন্টার’র তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রে এ যাবৎ যে সন্ত্রাসী হামলাগুলো হয়েছে এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ হয়েছে উগ্র শ্বেত-সন্ত্রাসীদের দ্বারা। এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীদের যে পরিমাণ হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করেছে যেগুলো যদি ঘটত তাহলে ৩০ হাজার মানুষ মারা যেত। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু পুরনো শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্বাবাদী সংগঠন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ‘কু ক্ল্যাক্স ক্ল্যান’ (কেকেকে)।
সংগঠনটি ১৮৬৬ সালে গঠিত হয় এবং গত দুই শতকে তিন লাখ মানুষ হত্যা করেছে। সংগঠনটি বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণায়ও ভূমিকা রাখে। আরো বিষ্ময়কর তথ্য হচ্ছে, বর্তমানে রিপাবলিকান সিনেটরদের মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য অংশ কেকেকের মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে তাদের সাথে যুক্ত। এরপর ‘ব্ল্যাক সান’ নামে আরেকটি শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন রয়েছে। এটা জার্মানভিত্তিক একটি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং এদের শেকড় হচ্ছে জার্মানির নাৎসি বাহিনী।
টেক্সাসে হামলাকারী ক্রুসিয়াসের অনুপ্রেরণা ক্রাইস্ট চার্চে হামলাকারী ট্যারান্ট ছিল এই ‘ব্ল্যাক সান’র আদর্শ লালনকারী। নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার ভাষ্য মতে, এমন আরো বেশ কিছু শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে- যেগুলো কখনো আলোচনায় আসে না কিন্তু তাদের কার্যক্রম চলমান। তাদের ব্যাপারে প্রশাসন যেমন বেখেয়ালি তেমনি গণমাধ্যমও এসব বিষয় এড়িয়ে চলে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মুসলিম-সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলার ঘটনার চেয়ে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী খ্রিষ্টানদের দ্বারা সংগঠিত কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা গণমাধ্যমগুলোতে ৩৭০ গুণ কম প্রচারিত হয়। এরকমই ভাষ্য দিচ্ছে এডিএল। সংগঠনটির মতে, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কাছে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের উগ্রমতাদর্শ প্রচার ও সহিংসতার ঘটনা ইসলামী জেহাদি বা অন্য বাইরের সন্ত্রাসী আক্রমণের মতো গুরুত্ব পায়নি। এমনিক এসব সন্ত্রাসী হামলার ক্ষেত্রে ‘টেররিজম’ বা ‘টেররিস্ট’ শব্দও ব্যবহার করা হয় না।
ঠিক একই স্বরে আরো ভাষ্য দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ডার্টমাউথ কলেজের অধ্যাপক ড্যানিয়েল বেনজামিন, যিনি ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রমের সমন্বয়ক ছিলেন। অধ্যাপক বেনজামিন বলছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামী সন্ত্রাসবাদ যতটা গুরুত্ব পেয়েছে শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাস তেমন গুরুত্ব পায়নি। এফবিআই ও মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জিহাদিদের কাছ থেকে আসা হুমকির ব্যাপারে বেশি সর্তক ছিল, অন্য দিকে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী সন্ত্রাসের বিষয়ে ছিলো বেখেয়াল।’
শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী সন্ত্রাস বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে রাজনীতিতে বর্ণবাদের উত্থান এবং এসব বর্ণবাদী ব্যক্তিদের রাজনৈতিক আসকারা দেয়া। বিশ্লেষকগণ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেত-শ্রেষ্ঠত্ববাদীরা এমন আসকারা পাচ্ছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য ও কর্ম থেকেই। গত কয়েক মাস আগে ফ্লোরিডা রাজ্যে এক র্যালিতে ট্রাম্প অভিবাসীদের ‘আগ্রাসী’ বলে উল্লেখ করেন।
তখন সে র্যালি থেকে একজন ‘তাদেরকে গুলি করে মারো’ বলে স্লোগান দেয়। ট্রাম্প স্বীয় নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। ক্ষমতায় এসে তিনি অভিবাসন নীতির ওপর কড়াকড়ি আরোপও করেছেন। সাত মুসলিম দেশের অভিবাসীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং লাতিন আমেরিকা থেকে আসা অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য জোর পদক্ষেপ এবং ওই সীমান্তে সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা উদ্বেগ নিয়েছেন। প্রায়ই তিনি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে গুরুতর আপত্তিকর বক্তব্য দেন। তিনজন সিনেট সদস্যকেই তাদের অতীত অভিবাসন জীবনের জন্যেও তিরস্কার করতে ছাড়েননি।
যখন দেশের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক এমন বর্ণবাদী আচরণ হয় তখন সে দেশে স্বীয় সমর্থকদের মধ্যে অভিবাসন বিরোধী বর্ণবাদী মনোভাব ও কর্ম ব্যাপক হারে মাথা চাড়া দেয়া স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকগণ। অন্য দিকে রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত অস্ত্র আইন। ২০১৬ সালে অরল্যান্ডোর নাইট ক্লাবে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র জোরে অস্ত্র আইন নিয়ে কথা শুরু হয়। তখন পিউ রিসার্চ সেন্টারর একটি জরিপ উঠে আসে, দেশটির ১৮ থেকে ২৯ বছর রয়সী নাগরিকদের বড় অংশ অস্ত্র আইনের পক্ষে। তবে প্রবীণদের মধ্যে আইনটি বাতিলের পক্ষে মত বেশি। ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত বিবিসির জরিপ মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ জন নাগরিকের হাতে ১২০টি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এমন ভয়াবহ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে অস্ত্র আইন বাতিলের পক্ষে যেমন শক্ত মত রয়েছে। অন্য দিকে এই আইনের পক্ষে ক্ষুব্ধ প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে শুরু করে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ব্যাপক অংশের অবস্থান রয়েছে।
এমতাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের জন্য এবং সে দেশে আশ্রয় নেয়া অভিবাসীদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য বাড়-বাড়ন্ত শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী সন্ত্রাস কতটা ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়। এখন দেখার বিষয় যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন অভ্যন্তরীণ বর্ণবাদী সন্ত্রাস বন্ধে কতটা আন্তরিকতা দেখায়।