যেখানে ঘুমিয়ে আছেন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি

সরদার আবদুর রহমান | Oct 19, 2019 12:56 pm
যেখানে ঘুমিয়ে আছেন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি

যেখানে ঘুমিয়ে আছেন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি - ছবি : সংগ্রহ

 

বিভিন্ন সময় বঙ্গ-বাংলার ইতিহাসের বাঁক বদলে দেয়ার জন্য যেসব ব্যক্তি বিশেষভাবে আলোচিত তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে শীর্ষে রয়েছেন ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি। প্রাথমিক পাঠ্যশ্রেণী হোক আর উচ্চতর পাঠ্য হোক- বাংলার মধ্যযুগের কথা উঠলেই বখতিয়ারের নাম অপরিহার্য। আর সতেরো অশ্বারোহীর অধিনায়কের নাম তো ইতিহাসের যেকোনো শৌখিন পাঠকেরই ঠোঁটস্থ।

সাম্প্রতিক ভারত সফরের সূচনালগ্নে সেই চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্বের সমাধি পরিদর্শনের কথা উঠতেই লাফ দিয়ে উঠল ঐতিহ্যভক্ত সাংস্কৃতিক সংগঠক ও ব্যাংকার আরিফ বিল্লাহ কাজল এবং আরেক অনুসন্ধানী কামরুজ্জামান (ডা: জামান)। সাথে নিপুণ গাইড শিল্পী-গীতিকার গালিব সরদার। প্রাচীন দালানকোঠা আর দুর্গ-প্রাকারের প্রতি চিরদুর্বল ইতিহাসের একনিষ্ঠ পাঠক নাজমা সরদার। বাংলাদেশের গৌড় প্রান্তের সীমান্ত পার হলেই খুব দূরে নয়- এমন দূরত্বে দক্ষিণ দিনাজপুরের এক নিভৃত পল্লীতে চিরশায়িত আছেন সেই বঙ্গবিজয়ী বীর। এই শুনে সেই সমাধি দেখার জন্য যেন ত্বর সইছে না ছোট্ট এই পর্যটন দলের সদস্যদের। এ বছর ১২ এপ্রিল ২০১৯, সেই কবর জিয়ারতের শুভক্ষণের দেখা মিলল।

বাংলার এককালের রাজধানী গৌড় নগরীর অজ¯্র প্রত্নচিহ্নের শরীর মাড়িয়ে যাত্রা শুরু সেই পথে। গৌড় থেকে বর্তমান মালদা শহরে পৌঁছানোর যে পথ- কে জানে এই পথ ধরেই ইতিহাস স্রষ্টা বখতিয়ার খিলজি তার পথপরিক্রমা করেছিলেন কি না। আগের দিন রাতে সেই পথ ধরে মালদা শহরে কোনো রকম রাত যাপন। পরদিন সকালের নাশতা সেরে মালদা স্টেশন থেকে ট্রেনযাত্রা। বেলা ১০টা বাজল গঙ্গারামপুর স্টেশনে পৌঁছতে। এ পর্যন্ত পথের সবটুকুই মনে হলো বরেন্দ্রের ঠা-ঠা রঙের প্রকৃতি- যা বাংলাদেশের বরেন্দ্রেরই প্রতিচিত্র। স্টেশনে সহজ ও নাগালের মধ্যে পরিবহন বলতে ‘টোটো’ গাড়ি- আমাদের কাছে যেটা অটোরিকশা হিসেবে পরিচিত। মোটামুটি চালাক ও শিক্ষিত মনে হলো রণজিৎকে। কিন্তু দেখা গেল টোটোচালক রণজিৎ ততটা চালাক বা সচেতন নয়। ফলে অহেতুক ঘোরাঘুরিতে বেশখানিকটা সময় নষ্ট করতে হলো।

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার এই প্রায় প্রত্যন্ত থানা গঙ্গারামপুরের কে-ই বা খবর রেখেছে- এখানে চিরশায়িত আছেন এক ক্ষণজন্মা পুরুষ ইখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি নামক এক বীর সেনানি, যিনি একদা ‘বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা’ বলে এক ডাকে চেনা জনপদের ইতিহাস পাল্টে দিয়েছিলেন। এই পাল্টে যাওয়া ইতিহাসের উত্তরসূরি আজকের লক্ষ-কোটি মানুষ। যা হোক, ঠিকানা-ঠিকুজি মিলিয়ে গঙ্গারামপুরের নারায়ণপুর মৌজার অন্তর্গত পীরপাল গ্রাম অবশেষে খুঁজে পাওয়া গেল।

বানগড়-দেবকোট থেকে গঙ্গারামপুর

বর্তমান গঙ্গারামপুর থানা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট মহকুমার অন্তর্গত এবং পুনর্ভবা নদীর তীরে জেলা শহর থেকে ১৮ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। উত্তরে দুই কিলোমিটার দূরে পুনর্ভবা নদীর পূর্ব তীরে সুপ্রাচীন বানগড়ের বিস্তীর্ণ ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। এই বানগড়েই ছিল দেবকোট নগরী।

বঙ্গবিজয়ী তুর্কি বীর বখতিয়ার খিলজি অষ্টাদশ অশ্বারোহী নিয়ে লক্ষ্মণ সেনকে পরাজিত করে নওদা বা নদীয়া বিজয়ের পর জয় করেন লক্ষ্মণাবতী। প্রথমে এখানে রাজধানী থাকলেও পরে তা প্রাচীন নগরী দেবকোটে স্থানান্তর করেন। যা বর্তমানে গঙ্গারামপুর নামে পরিচিত। মুসলিম যুগে গঙ্গারামপুর দমদমাও নামে পরিচিত ছিল। পরে এখানে একটি সামরিক দুর্গও স্থাপন করা হয়। তার পরবর্তী মুসলিম শাসকেরা দেবকোট থেকেই রাজ্য বিস্তার করেন।

একটি জনপদের নাম কালে কালে এতটা বদলায় ভাবতে অবাক লাগে। এই সুপ্রাচীন দেবকোটের নাম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম পাওয়া যায়। যেমন- বানগড়, বানপুর, বানুপুর, বাননগর, উমাবন, উষাবন, শোনিতপুর, দেবকোট, দেওকোট, দেবীকোট, দেবিকোট্ট, দীবকোট, কোটীবর্ষ, কোটিবর্তী, কোটিকপুর, দমদমা, রাজীবপুর প্রভৃতি এবং বর্তমান নাম গঙ্গারামপুর। বখতিয়ার খলজি এ দেবকোট থেকেই তার বহুল আলোচিত-সমালোচিত তিব্বত অভিযানে বের হয়েছিলেন। তার শেষ জীবন অতিবাহিত করেন এই দেবকোটে। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বানগড়ের পরিচয়

অতিপ্রাচীন একটি নগরীর অংশবিশেষ এই বানগড় কখনো রাজপ্রাসাদ আর কখনো দুর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এ স্থানটি মৌর্য যুগ থেকে মুসলিম শাসনামল পর্যন্ত টিকে ছিল। বানগড় কমপ্লেক্সের আয়তন দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৮০০ ফুট এবং প্রস্থে ১৫০০ ফুট বিস্তৃত ছিল। নগরটি ছিল চার দিকে পরিখা ও প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। পূর্ব দিকে প্রধান নগরদ্বার ছিল যা এখন নেই।

পুনর্ভবা নদীর পূর্ব তীরে গঙ্গারামপুর সদরের এক কিলোমিটার উত্তরে বাজিতপুর মৌজায় বানগড় অবস্থিত। এটি চার দিকে প্রাকারবেষ্টিত এবং প্রাকারের পরেই পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণে পরিখা এবং পশ্চিমে পুনর্ভবা নদী। পূর্ব দিকে প্রধান নগরদ্বার এবং নগর থেকে উপকণ্ঠে যাওয়ার জন্য পরিখার উত্তরে সেতুর ধ্বংসাবশেষ এখনো আছে। নগরের ঠিক কেন্দ্রস্থলে এখনো একটি উঁচু স্তূপ আছে, যা রাজবাড়ি বলে মনে করা হয়। নগরের ভেতরে এবং প্রাচীরের বাইরে নগর উপকণ্ঠে এখনো অসংখ্য ছোট-বড় স্তূপ ইতস্তত বিক্ষিপ্ত অবস্থায় রয়েছে। মৌর্য-শুঙ্গ থেকে গুপ্তযুগ এবং পাল-সেনযুগ থেকে শুরু করে কম্বোজ রাজবংশের নানারকম প্রত্নকীর্তি বানগড়ে পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বানগড়ে মুসলিম সভ্যতারও নির্দশন মেলে।

বানগড় ইতিহাসের কালানুক্রমটি হলো : ১. শানিতপুর- প্রাক ঐতিহাসিক যুগ, ২. বানগড়- প্রাক ঐতিহাসিক যুগের পরবর্তী থেকে ৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ, ৩. কোটিবর্ষ- ঐতিহাসিক যুগ থেকে ৩২ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ, ৪. দেবিকোট- ১১৯৬ খ্রি. থেকে, ৫. দমদমা- ১৪৯৩ খ্রি. থেকে, ৬. রাজীবপুর- ১৫৪০ খ্রি. থেকে, ৭. গঙ্গারামপুর- ১৭৯৩ খ্রি. থেকে বর্তমান। বখতিয়ার খিলজি যখন বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন তখন বানগড়ে তার সেনানিবাস প্রতিষ্ঠা করেন। এর চারদিকে প্রায় আট কিলোমিটার স্থান পর্যন্ত এই সুপ্রাচীন সভ্যতার নানা চমকপ্রদ চিহ্ন দেখা যায়।

দেবকোটে প্রত্যাবর্তন ও মৃত্যু

তিব্বত অভিযান ব্যর্থ হলে বখতিয়ার খিলজি মুষ্টিমেয় সৈন্য ও সহযোগী নিয়ে তৎকালীন প্রশাসনিক কেন্দ্র তথা রাজধানী দেবকোটে ফিরে আসেন। বখতিয়ার খিলজি ১২০৬ খ্রিষ্টাব্দে মারা যানÑ সে বিষয়ে একমত অধিকাংশ গবেষক। তবে স্বাভাবিক মৃত্যু, না তাকে হত্যা করা হয়েছিলÑ এ নিয়ে খুব জোরালো না হলেও একটা বিতর্ক আছেই। তিব্বত অভিযান ব্যর্থ হওয়ায় বখতিয়ার মানসিক যন্ত্রণায় অসুস্থ ও শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন ও প্রাণত্যাগ করেন। কারো কারো মতে, আলী মর্দান নামে তার এক দুঃসাহসী ও দুর্ধর্ষ আমির যেকোনো উপায়ে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।

বখতিয়ারের সমাধি

বখতিয়ারের মৃত্যু দেবকোটে ঘটে- ইতিহাসে এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। কিন্তু দেবকোটের ঠিক কোন স্থান বা গৃহে সে বিষয়টি গবেষকদের নিকট থেকে সুনির্দিষ্ট হয়নি। বাংলাদেশেও এ নিয়ে প্রকৃত কোনো অনুসন্ধান বা গবেষণা হতে দেখা যায়নি। তবে পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস লেখকরা একমত যে, বখতিয়ার খিলজির কবর বা সমাধি পীরপাল গ্রামে অবস্থিত। বলা হয়ে থাকে, দেবকোট নগরীকে রাজধানী হিসেবে নির্বাচন বখতিয়ারের উচ্চ ঐতিহ্যমণ্ডিত সাংস্কৃতিক রুচিবোধ ও জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ।

সেই অতি সাধারণ একটি সমাধি গৃহের দর্শন পেতেই আবেগাপ্লুত হয় পর্যটক দলটির সবাই। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অবহেলিত এই সমচতুষ্কোণ সমাধি বেদিটির দৈর্ঘ্য ১০ ফুট ও প্রস্থ ছিল ১০ ফুট। একটি প্রায় আয়তাকার ঘরের মধ্যে কবরখানা। যেন এই সমাধিচিহ্নই বলে দেয়, কতটা সাধারণ জীবন ছিল এক মহাজীবনের অধিকারী মানুষটির। ক্ষুদ্র পর্যটক দল কবর জিয়ারত করে মুনাজাতের মাধ্যমে তার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানান। একটি বিশাল জনপদকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসার জন্য আল্লাহপাক যেন তাকে উত্তম প্রতিদান দেন, এ জন্য দোয়া করা হয়। সমাধির পাশেই বিশাল দীঘি। দীঘির বিশাল শানঘাটের ভগ্নস্তূপ যেন নীরবে আবৃত্তি করে চলে কত শত-সহ¯্র জীবনগাথা। সমাধির উত্তর পার্শ্বে নিকটবর্তী স্থানে রয়েছে একটি ভগ্নস্তূপ, এতে সুপ্রাচীন গৃহের চিহ্ন বিদ্যমান। পাথরের পিলারসমেত এই স্তূপের মধ্যে ঘর থাকার কথা। যা খনন করলেই পরিষ্কার হবে। সম্ভবত এটি ছিল বখতিয়ার খিলজির শেষ আবাসস্থল। সমাধি ও আবাসের এ স্থানটির অবস্থান প্রাচীন দেবকোটের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি।

সমাধির ‘পীরপাল দরগা’ শিরোনামে পরিচয় ফলকের বর্ণনা এরূপ : ‘কথিত আছে, ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজী ছিলেন দাশ বংশের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দিন আইবকের বিশ্বস্ত সেনাপতি। এ তুর্কি সেনাপতির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হলো বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করা। ১২০৬ সালে তিব্বত আক্রমণের জন্য ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজী দেবকোট শহর ত্যাগ করেন। তিব্বত অভিযানের সময় খিলজী বাহিনী একটি বিধ্বংসী পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছিল এবং প্রায় এক শ’ জীবিত সৈন্যসহ দেবকোটে ফিরে এসেছিল। ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজী ভারতে ফিরে আসার সময় যখন তিনি দেবকোটে অসুস্থ হয়েছিলেন সেই সময় আলী মর্দান কর্তৃক তিনি নিহত হন এবং দেবকোট অধুনা পীরপাল নামক স্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। সেই সময় থেকেই এই সমাধিস্থল অত্যন্ত পবিত্র ও উল্লেখযোগ্য।’

পুনর্ভবা নদী থেকে দেড় কিলোমিটার এবং বানগড় দুর্গ থেকে ২.৫ কিলোমিটার আগে শুকদেবপুর বাজারের অদূরে অত্যন্ত সাদামাটা পরিবেশে সমাধিটির অবস্থান। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ দিনমজুর ও কৃষিজীবী। হিন্দু-মুসলিম উভয়েই এই সমাধির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রাচীনকাল থেকেই বখতিয়ারের ওই সমাধি নিয়ে নানা লোকাচার পালিত হয়ে আসছে। যেহেতু তাদের ‘বুড়াপীর’ এখানে শুয়ে আছেন সে কারণে এখানকার লোকজনের খাটে শোয়া নিষেধ। বর্তমানে এ নিয়ম পাল্টে গেলেও সাবেকি মানুষেরা এ প্রথা আজো মেনে চলেন। এ অঞ্চলের একটি প্রাচীন ছড়া- যা আজো লোকমুখে শোনা যায় :

‘বখতিয়ার আইলো রে
সোনার জমি দখল হইলো রে ॥
হিন্দু আজা (রাজা) লক্ষ্মণ পলাইলো রে
হিন্দু ধ্বংস হইয়া যবন ভরিয়া গেলো রে ॥’

সমাধির সংস্কার

বখতিয়ার খিলজির সমাধি সংস্কার করে এর সংরক্ষণের গুরুত্ব অনুধাবন করেন স্থানীয়রা। সমাধিটির আসল নকশা মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। পরে নারায়ণপুরের বাসিন্দারা ধুলোর স্তর সরিয়ে মূল কাঠামো উদ্ধার করেন। তারা উপলব্ধি করেন, সমাধিটির মূল আকৃতি এবং শৈলী সংরক্ষণের জন্য বৈজ্ঞানিক পুনরুদ্ধারের প্রয়োজন। প্রতি বছর বৈশাখ মাসে কিছু মানুষ কবরে মোমবাতি জ্বালান এবং মিষ্টি বিতরণ করেন। কয়েক বছর ধরে তারা দাবি করে আসছেন, জেলা প্রশাসন পর্যটকদের জন্য তিন কিলোমিটার পথ নির্মাণ করবে, যাতে স্পটে সহজেই পৌঁছা যায়। সরকারি কর্মকর্তারা সমাধি পরিদর্শন করেন এবং আশ্বস্ত করেন, এর কাঠামো পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাষ্ট্রীয় প্রতœতাত্ত্বিক বিভাগে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানা যায়।

অন্য সব নিদর্শন

গঙ্গারামপুরে আরো যেসব প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, নারইগ্রামে মোগল সৈন্যদের সমাধি, আতাশাহর দরগা, ধলদীঘি, কালদীঘি প্রভৃতি। পানির রঙ ধলা বা সাদা ছিল তাই দীঘির নাম ধলদীঘি। এই দীঘির উত্তর পাশে বিখ্যাত ইসলাম প্রচারক আতাশাহ’র মাজার অবস্থিত। আতাশাহ রহ: ইসলাম প্রচার ও আরবি-ফারসি ভাষা শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে দেবকোটে এসেছিলেন। কারো কারো মতে, এখানে অবস্থিত বৌদ্ধ বিহারটি পরিত্যক্ত হওয়ায় এর সামান্য পরিবর্তন সাধন করে বখতিয়ার খিলজি একে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। এই মসজিদকে কেন্দ্র করে আতাশাহর তত্ত্বাবধানে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠে। আধ্যাত্মিক ক্ষমতাসম্পন্ন এই সাধকের নির্দেশে মসজিদেরই এক কোণে তাকে সমাহিত করা হয়।

ঐতিহাসিকেরা মনে করেন, সমগ্র বঙ্গদেশে প্রথম মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মাদরাসা শিক্ষার প্রচলন সূচিত হয় এই কেন্দ্র থেকে। বখতিয়ার খিলজী এখানকার এক ডালাতে একটি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করেন এবং চিরামতি ও বলিয়ার মাঝখানে খাল কেটে পরিখা নির্মাণ করেন। বর্তমানে এক ডালা দুর্গের কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় দুর্গটি খুঁজে পাওয়া যায়।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us