বিশেষ মিশনে ইরান-সৌদি মিশনে ইমরান খান : সফল হবেন তো?
ইমরান খান - ছবি : সংগৃহীত
দুই দিন আগে ইরানে এক দিনের সফরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মঙ্গলবার সৌদি আরব পৌঁছেছেন ওই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় তার উদ্যোগের অংশ হিসেবে।
রিয়াদে অবতরণের পর রাজকীয় টার্মিনালে ইমরান খানকে স্বাগত জানান রিয়াদের গভর্নর ফয়সাল বিন বন্দর আল সৌদ, প্রতিমন্ত্রী মাসাদ বিন মোহাম্মদ আল আইবান, সৌদি আরবে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কর্মকর্তা।
সফরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি, প্রবাসী পাকিস্তানিবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সৈয়দ জুলফিকার বুখারি।
পররাষ্ট্র দফতরের ভাষ্যমতে, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য নেতার সাথে তার সাম্প্রতিক আলোচনা তুলে ধরবেন সৌদি নেতৃত্বের সামনে। আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও আঞ্চলিক ঘটনাবলীও স্থান পাবে।
চলতি বছর এটা ছিল প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তৃতীয় সৌদি আরব সফর। এর আগে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফর করেন।
রোববার ইরানে এক দিনের সফরকালে ইমরান খঅন সাক্ষাত করেন ইরানি সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনি, ও ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সাথে। এসময় তারা আঞ্চলিক শান্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তেহরানে ইমরান খান বলেন, অতীতে সৌদি আরব ও ইরানকে স্বাগত জানাত পাকিস্তান। এখন আবারো ভ্রাতৃপ্রতীম দেশগুলোর মধ্যকার মতপার্থক্য নিরসনে কাজ করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, এটা মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করার পাকিস্তানি নিজস্ব উদ্যোগ।
ইরানের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে অবরোধ আরোপ করায় এই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ইরানের সাথে বিশ্বশক্তিগুলোর করা পরমাণু চুক্তি বাতিল করার পর ট্রাম্প ওই অবরোধ আরোপ করেন।
এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর গুরুত্বপূর্ণ সৌদি তেল ক্ষেত্রের উপর হামলা হলে উত্তেজনা আরো বাড়ে। ওই হামলার ফলে সৌদি আরবের তেল উৎপাদন হ্রাস পায়।
ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইরান দৃঢ়ভাবে তা অস্বীকার করেছে। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের হাউছিরা। এই গ্রুপটির বিরুদ্ধে সৌদি আরব কয়েক বছর ধরে যুদ্ধ করছে। তবে সিবিসির ’৬০ মিনিটস’ প্রগ্রামে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স বলেছেন যে ইরানের সাথে যুদ্ধ হবে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বিপর্যয়কর।
রুহানির সাথে আলোচনাকালে ইমরান খান বলেন, আমরা সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সঙ্ঘাত চাই না। আমরা মনে করি, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান পাওয়া সম্ভব। সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ হওয়া উচিত নয়।
১৯৮০-এর দশক থেকে পাকিস্তান অন্তত চারটি বড় ও ছোট মধ্যস্ততাকারীর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় পাকিস্তান মধ্যস্ততাকারীর হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।
তারপর ১৯৯৭ সালে ইসলামাবাদে ওইআইসি শীর্ষ বৈঠকের সময় ইসলামাবাদে ইরান ও সৌদি আরবের নেতৃত্বের মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিল পাকিস্তান।
সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ ২০০৩-২০০৪ সালেও একই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তবে তাকে খুব বেশি মার্কিন ঘনিষ্ঠ বিবেচনা করায় তিনি তেমন সাফল্য পাননি।
আর অতি সাম্প্রতিক সময়ের উদ্যোগ ছিল ২০১৬ সালে। শিয়া ধর্মীয় নেতা বাকির আল-নিমরকে ফাঁসি দেয়ার পর যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল তা নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন ওই সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও সেনাপ্রধান। ওই সময় সৌদি আরব উদ্যোগটিকে উৎসাহিত করেননি।
ডন