এরদোগানের সিরিয়া অভিযানের নেপথ্যে
এরদোগানের সিরিয়া অভিযানের নেপথ্যে - ছবি : সংগ্রহ
গত ৯ অক্টোবর সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক। অভিযানে তুর্কি বাহিনীর মূল লক্ষ্য হলো, ওই অঞ্চল থেকে কুর্দি নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়াদের উৎখাত করে সেখানে তুরস্কে অবস্থানরত ৩৬ লাখ সিরীয় শরণার্থীর পুনর্বাসন।
‘অপারেশন পিস স্প্র্রিং’ নামের এই অভিযান একেবারে নতুন নয়। এর আগেও তুরস্ক কুর্দিদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযান চালিয়েছে। এবারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে ফোনে আলাপের পর অভিযান শুরু করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তারও আগে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকেও পরিকল্পনাটি উত্থাপন করা হয় বলে জানা যায়।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে যেখানে তুরস্ক অভিযান শুরু করেছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক, আর্থিক এবং সামরিক সব ধরনের সহায়তা নিয়েই কুর্দিরা এক ধরনের রাষ্ট্রকাঠামো তৈরি করেছে। নতুন এই রাষ্ট্রের আবির্ভাবের মধ্যে আঙ্কারা নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি দেখছে। কারণ এই কথিত রাষ্ট্রকাঠামোর যারা নেতৃত্বে আছেন, তারা আমেরিকার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) নেতা। গত শতকের আশির দশক থেকে পিকেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই পিকেকে’কে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করেছে। অপর দিকে, সীমান্তের ওপারে সিরিয়ায় ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে ওয়াইপিজি এবং তাদের সহযোগী কুর্দি মিলিশিয়ারা। ২০০৪ সাল থেকে সেখানে সক্রিয় এই মিলিশিয়ারা কুর্দিদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি জানিয়ে আসছে। আইএস এবং অন্যান্য চরমপন্থী দলের বিরোধিতা করায় এই মিলিশিয়াদের প্রতি পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন রয়েছে। সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের আইএসবিরোধী অভিযানে মার্কিন সেনাদের সাথে যৌথভাবে কাজ করেছে কুর্দি যোদ্ধারা। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে উত্তরাঞ্চলে একটি ‘শান্তিপূর্ণ উপত্যকা’ও প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল তারা। উপত্যকাটির নাম দিয়েছিল রোজাভা। ধীরে ধীরে অন্যান্য আঞ্চলিক দলও তাদের সাথে যোগ দেয় ও একপর্যায়ে সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স গঠিত হয় (এসডিএফ)। এই এসডিএফই বর্তমানে তুরস্কের মূল টার্গেট।
এসডিএফের প্রতি সব রকম সমর্থন থাকার পরও যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে মার্কিন বাহিনী সরিয়ে নিয়ে সেখানে তুরস্ককে অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্রের সর্বশেষ খবরে জানা যাচ্ছে, মার্কিন বাহিনী বাস্তবে সরিয়ে নেয়া হয়নি। তুর্কি বাহিন মার্কিনী সেনা অবস্থান এড়িয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে। এ দিকে, ট্রাম্প অনুমোদন দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকরা তুর্কি অভিযানের পক্ষে নন।
তুরস্কের এই পরিকল্পনা বেশ কয়েক বছর আগের। ওবামা যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তখনই আঙ্কারা তুরস্কে আশ্রিত সিরীয় শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য সিরিয়ার অভ্যন্তরে একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ে তোলার প্রস্তাব দেয়। আঙ্কারা এই পুনর্বাসন কার্যক্রমের সব আর্থিক দায়িত্ব নেয়ার কথাও জানায়। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার সমর্থন না পাওয়ায় সেই অ্যাজেন্ডা স্থগিত থাকে। ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আঙ্কারা নতুন করে তৎপর হয় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে। যা হোক, এরদোগানের এই অভিযান বিশ্বজুড়ে আলোচনার শীর্ষে এখন। ইইউ, ন্যাটো, আরব লিগ, যুক্তরাষ্ট্র, সিরিয়াসহ বিশ্বজুড়ে নেতারা এই অভিযানের সমালোচনা করছেন।
এ পর্যায়ে কুর্দিদের সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেয়া যেতে পারে। কুর্দি সম্প্রদায় মধ্যপ্রাচ্যের একটি নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এরা আরব নয়। ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও তুরস্কজুড়ে বিস্তৃত ভূখণ্ডে তাদের বসবাস। ধর্ম শাফেয়ি মাজহাবের অনুসারী সুন্নি মুসলমান। শিয়াও রয়েছে তাদের মধ্যে। তাদের ভাষা কুর্দিশ (Kurdish), যা উত্তর-পশ্চিম ফারসি ভাষার অংশ। উল্লিখিত সব ক’টি দেশ মিলিয়ে কুর্দিদের মোট সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তানে এরা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। প্রতিবেশী তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরানে সংখ্যালঘু। এসব অঞ্চলে কুর্দি জাতীয়তাবাদীরা স্বায়ত্তশাসনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে।
কুর্দিরা সব সময়ই দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে খ্যাত। ইসলামের বিখ্যাত বীর সুলতান নূরুদ্দীন জঙ্গী, আসাদুদ্দীন শেরকুহ ও তার ভাতিজা মহান বীর সালাহ উদ্দিন আইয়ুবিসহ অনেক ইতিহাস খ্যাত মুসলিম ব্যক্তিত্বের জন্ম হয়েছে কুর্দিদের মধ্যে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এবং তুর্কি ওসমানী খেলাফতের পতন হলে কুর্দিরা একটি স্বাধীন কুর্দিরাষ্ট্র গঠনের দাবি জানায়। প্রথম দিকে তাদের একটি রাষ্ট্র দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তৎকালীন বিশ্বনেতারা। কিন্তু সময়ের আবর্তে পুরো অঞ্চলটি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলেও প্রতিশ্রুত রাষ্ট্র পায়নি কুর্দিরা। ফিলিস্তিনিদের মতোই একটি ভাসমান জাতি হিসেবে রয়ে গেছে। এর পর বহুবার রাষ্ট্র গঠনের দাবি বাস্তবায়নে তারা চেষ্টা চালিয়েছে; কিন্তু সেসব চেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়া হয়। ১৯৭৮ সালে আবদুল্লাহ ওসালান তুরস্কে পিকেকে গঠন করেন। এ দলের প্রধান দাবি ছিল তুরস্কের মধ্যে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র গঠন। ১৯৮৪ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে দলটি। এর পর থেকে তুর্কি বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে ৪০ হাজারের বেশি কুর্দি নিহত হয়েছে। ১৯৯০-র দশকে পিকেকে স্বাধীনতার দাবি বাদ দিয়ে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন চালায়। তবে সে সময়ও সশস্ত্র সংগ্রাম অব্যাহত রাখে তারা। ২০১৩ সালে গোপন আলোচনার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির সমঝোতা হয়। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে তা অকার্যকর হয়ে পড়ে। ২০১৬ সালের মার্চে তারা আইএসের দখলে থাকা কয়েকটি আরব এবং তুর্কি এলাকা নিয়ে ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। সে ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে সিরিয়ার সরকার, সিরিয়ার বিরোধী দল, তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্র। তারপর আর কখনোই তাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবের ভিত্তি পায়নি।
অনেকে আশঙ্কা করছেন, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের সামরিক অভিযানে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগে ওই অঞ্চলে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে আইএস। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কাভেহ আফরাসিয়াবি মিডল ইস্ট আই পত্রিকায় লিখেছেন, সিরিয়ায় তুরস্কের সামরিক হস্তক্ষেপ অত্যন্ত সন্দেহজনক। সিরিয়ার সাথে ৯০০ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি সীমান্ত এলাকাজুড়ে ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রমের করিডোর’ বন্ধ করার জন্য এবং লাখ লাখ সিরীয় শরণার্থীর প্রত্যাবাসনের জন্য একটি ‘সেফ জোন’ বা নিরাপদ এলাকা তৈরির যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
তুরস্কের সরকারি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের জাতিসঙ্ঘ শীর্ষ সম্মেলনে সিরিয়ার কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের ৪৬০ কিলোমিটার এলাকায় সেফ জোন তৈরির তুর্কি পরিকল্পনার মানচিত্র উত্থাপন করা হয়। এই মানচিত্র বিশ্বকে দেখিয়েছে, এরদোগান কিভাবে সিরিয়ার অভ্যন্তরে একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়তে চান এবং সেই অঞ্চলে তুরস্কে বসবাসরত সিরীয় শরণার্থীদের পুনর্বাসন করতে চান।
ইরানি এই অধ্যাপক বলছেন, যদি তুরস্কের এই পরিকল্পনা সফল হয়, তবে দেশটি সিরিয়ার বেশির ভাগ তেল ও গ্যাসসম্পদ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে, যা বর্তমানে কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের (এসডিএফ) হাতে রয়েছে।
সিরিয়ায় তুর্কি অভিযান শুরুর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই অঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে দুটি বিমানঘাঁটিসহ এখনো প্রায় ১৮টি মার্কিন ঘাঁটি এবং ‘অপারেশন পয়েন্ট রয়েছে’। ট্রাম্পের বহুল প্রচারিত সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
অধ্যাপক আফরাসিয়াবি বলছেন, তুরস্ক নিজের নিরাপত্তা বিধানের জন্য সিরিয়ার অভ্যন্তরে নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে না। এই অভিযানে ইতোমধ্যে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে এবং ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এই অভিযানের ফলে সিরিয়ার কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের আইএস জঙ্গিরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। কেননা, তুরস্কের সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে কুর্দি যোদ্ধাদের প্রধান কাজ হবে আত্মরক্ষা এবং পাল্টা আক্রমণ। আইএস যোদ্ধাদের বন্দিশিবির পাহারা দেয়াটা তাদের জন্য গৌণ কাজ হয়ে পড়বে। এই আইএস যোদ্ধারা আটকাবস্থা থেকে বের হতে পারলে তাদের অনেকে হয়তো নানা পথ দিয়ে ইউরোপে বা তাদের নিজ দেশে চলে যাবে এবং লন্ডন, প্যারিস বা বার্সেলোনার ঘটনার মতো বড় আকারের হামলা পরিকল্পনা শুরু করবে। আফরাসিয়াবির মতে, তুরস্কের সিরিয়া পরিকল্পনার আরেকটি প্রধান ত্রুটি হলো, কুর্দিদের লড়াই করার ক্ষমতাকে ছোট করে দেখা; যেমনটা দেখা হয়েছে ইয়েমেন হুতি বিদ্রোহীদের ক্ষেত্রে।
তবে এটা সত্য যে, তুরস্ক যা করছে তাতে কোনো লুকোচুরির বিষয় নেই। নিজের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমেরিকা যদি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে, যেকোনো স্বাধীন দেশে সামরিক হামলা চালাতে পারে, সরকারের পতন ঘটাতে পারে, রাশিয়া যদি ইউক্রেনের অংশবিশেষ দখল করে নিতে পারে, ইসরাইল যদি একের পর এক ফিলিস্তিনিসহ আরব ভূখণ্ড দখল করতে পারে, তাহলে তুরস্কের এই প্রকাশ্য পরিকল্পনাকে কোনোভাবেই ‘বেআইনি বা অনৈতিক’ বলার সুযোগ নেই। বিশেষ করে যখন এটি জাতিসঙ্ঘের অনুষ্ঠানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। তার ওপর একটি দেশের জন্য ৩৬ লাখ বিদেশী শরণার্থীকে লালন-পালন করা যে কতটা দুরূহ, সেটা আমরা, বাংলাদেশীরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার পর বুঝতে পারছি।
তুরস্কের ‘সেফ জোন’ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনায় আপত্তিকর কিছু নেই বলেই তুর্কি অভিযানের পক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না দিলেও ন্যাটো আঙ্কারাকে সমর্থন করেছে। রাশিয়া শুধু সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে তুরস্কের প্রতি। সিরিয়ার মিত্র ইরান তেমন কোনো উচ্চবাচ্য করেনি।
আমাদের মনে রাখা দরকার, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একা যুক্তরাষ্ট্র দাবার ঘুঁটি চালছে না। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, রাশিয়া, ব্রিটেনসহ পাশ্চাত্যের অনেক বৃহৎ শক্তিই নিজ নিজ স্বার্থে সেখানে সক্রিয়। এই নানামুখী তৎপরতার পেছনে একটি সাধারণ সত্য কিন্তু স্পষ্ট। সেটা হলো, মুসলিম রাষ্ট্রশক্তিকে যেকোনোভাবেই হোক দুর্বল করে দেয়া এবং মাথা তুলে দাঁড়াতে না দেয়া। এ জন্য ‘বিভক্ত করো, যুদ্ধে জড়িয়ে দাও’ এবং তেলসহ সব সম্পদ শোষণ করার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে বিশ্বশক্তিগুলো। এরদোগানের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যের বিষয়েও তারা উদ্বিগ্ন। পাশ্চাত্যের আশঙ্কা, এরদোগান নিশ্চিতভাবেই ওসমানী খেলাফতের মতো একটি বৃহত্তর মুসলিম সালতানাত গড়ে তোলার এবং তার নেতৃত্ব অর্জনের চেষ্টা করছেন। এ জন্য ন্যাটোর সদস্যপদ দিলেও দেশটিকে এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ দেয়া হয়নি। নানাভাবে তুরস্ককে চাপে রাখার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে তারা।
এই পরিস্থিতিতে আশা করা বাহুল্য হবে না যে, এরদোগান যদি তুরস্কের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করতে চান এবং মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের আসনটি নিজের করে নিতে চান তাহলে তিনি পরিমিতিবোধের পরিচয় দেবেন এবং যতটুকু তার নাগালের মধ্যে রয়েছে শুধু সেটুকুর দিকেই হাত বাড়াবেন। সবটা একবারে অর্জনের চেষ্টা কখনোই বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক নয়। আর বিশ্ব সবসময় বিজয়ীকেই সালাম জানায়। বিজিতকে নয়।