জাল ফেললেই ইলিশের ঝাঁক
জাল ফেললেই ইলিশের ঝাঁক - ছবি : সংগ্রহ
জাল ফেললেই মিলছে ইলিশের ঝাঁক। আর তাতে হাসি ফুটছে জেলের মুখে। ভোলার লালমোহনের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে জমজমাট হয়ে উঠেছে মাছের আড়তগুলো। জেলে, আড়তদার ও পাইকারদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে উপজেলার মাছঘাটগুলো। একবার জাল ফেললেই পাওয়া যাচ্ছে ১২ হাজার টাকার ইলিশ। মাত্র চার দিনে ৩৫ হাজার ইলিশও বিক্রি করেছেন এক জেলে।
দেরিতে হলেও নদীতে মাছ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলেদের মুখে। মাছ বিক্রির টাকায় লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশাবাদী জেলে পরিবারগুলো। জেলেরা জানান, এত দিন নদীতে মাছের দেখা মেলেনি, এতে বেশির ভাগ জেলে দাদন আর মহাজনের দেনায় চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু চলতি মাস ধরে নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। এতে দেনা পরিশোধ হবে। লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে তারা আশা করছেন। লালমোহনের বাত্তির খাল, কামারের খাল, সর্দারের খাল, শামপাটারির কাঠির মাথা, গাইট্রা, বুড়ির দোন, চাঁদমিয়ার হাটসংলগ্ন ঘাট ও বেতুয়া স্লুইস ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মেঘনার বাত্তির খাল এলাকার জেলে জসিম ও শাহে আলম বলেন, গত কয়েক মাস সারা দিন জাল নিয়ে ছুটলেও ফিরতে হতো প্রায়ই খালি হাতে। কিছু দিন হলো এখন যা মাছ পাওয়া যাচ্ছে তা অনেক সন্তোষজনক। এক খেও দিয়ে ১২ হাজার টাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে। বুড়ির দোন এলাকার জেলে আ: রহমান বলেন, চার দিনে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছি, মাছের আমদানি অনেক ভালো। এতে অনেক জেলেই দাদন শোধ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
বেতুয়া স্লুইসের মাছ ঘাটের এক আড়তদার বলেন, নদীতে মাছ ধরা পড়ায় জেলে ও আড়তদাররা অনেক খুশি। দিন যত বাড়বে মাছের আমদানি আরো বাড়বে। এখানকার মাছ ঢাকা, বরিশাল ও চাঁদপুর পাঠানো হয়ে থাকে।
মাহেআমল নামের এক আড়তদার জানান, মাছ ধরা পড়লেও আগামী মাসের মা ইলিশ অভিযান নিয়ে কিছুটা চিন্তিত, কারণ শেষ মুহূর্তে মাছ ধরা পড়া শুরু করেছে। তবুও জেলেরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
লালমোহনের মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ্ত মিশ্রর কাছে এ বছর ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার তথ্য জানতে চাইলে তার ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় ক্রেতারা ক্ষোভের সাথে জানান, আমাদের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও আমরা কিনতে পাই না; যদিও স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে কিছু জাটকা ইলিশের দেখা মিললেও বড় ইলিশগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে নিয়ে যান জেলেরা। স্থানীয় ক্রেতাদের দাবি, জেলেরা যেন স্থানীয় জনগণের চাহিদা মিটিয়ে পরে বাইরে বিক্রি বা চালান করেন।