চেনাবের পানিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র কেন্দ্র ভারতের, কী করবে পাকিস্তান?
চেনাবের পানি - ছবি : সংগৃহীত
ভারতের ত্বরান্বিত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জলবিদ্যুত প্রকল্পগুলোর অংশ হিসেবে বিজেপি শাসিত হিমাচল প্রদেশ বুধবার চেনাব নদীর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য কেন্দ্রীয় পাবলিক সেক্টর ইউনিটের সাথে (পিএসইউ) ২৫ হাজার কোটি রুপির বিনিয়োগ চুক্তি করেছে।
এই পদক্ষেপের ফলে ভারতের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াবে এবং সিন্ধু পানিচুক্তির আওতায় নিজের হিস্যার পানির পূর্ণ ব্যবহারে সহায়ক হবে। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্ততায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধ পানিচুক্তি হয়েছিল।
রাষ্ট্রীয় এনএইচপিসি লি. হিমাচল প্রদেশ সরকারের সাথে ৪৪৯ মেগাওয়াটের দুগার প্রজেক্ট নামে একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুকিত্ সই করেছে। আর ভারতের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান এনটিপিসি লিমিটেড সেলি (৪০০ মেগাওয়াট) ও মিয়ার (১২০ মেগাওয়াট) প্রকল্পের চুক্তি সই করেছে।
ভারত থেকে উৎপত্তি হয়ে পাকিস্তানে প্রবাহিত হয়েছে চেনাব। এটি একটি পশ্চিমাঞ্চলীয় নদী। ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলীয় সব নদীর পূর্ণ প্রবাহ অব্যাহত রাখতে বাধ্য ভারত। গৃহস্থালি ব্যবহার, কৃষিজ ব্যবহার, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়া অন্য কোনোভাবে ভারত এসব নদীর পানি ব্যবহার করতে পারবে না।
এনএইচপিসির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলরাজ যোশি মিন্টকে বলেন, দুগার প্রকল্পটি চেনাব নদীর ওপর বাস্তবায়িত হবে। এজন্য প্রয়োজন হবে ১১২ কোটি রুপির।
সীমান্ত এলাকায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ ভারতের একটি কৌশলগত পরিকল্পনা। তারা বিশেষ করে পাকিস্তান ও চীনের কথা চিন্তা করে এসব পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। গত মে মাসে ঝিলাম নদীর শাখা কিষানগঙ্গার ওপর ৩৩০ মেগাওয়াটের একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়।
পাকিস্তান এই প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছে, এটি সিন্ধু পানিচুক্তির পরিপন্থী। চেনাব নদীর ওপর ১০০০ মেগাওয়াটের পকল দুল ও ৪৮ মেগাওয়াটের লোয়ার কালনাই প্রকল্পের ব্যাপারেও আপত্তি জানিয়েছে পাকিস্তান।
রাষ্ট্রায়ত্ত এনএইচপিসি লিমিটেড ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী। ১২টি প্রকল্পের মাধ্যমে তারা ৭,০৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থঅকে।
প্রতিষ্ঠানটি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তারা মোট ৫২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য হিমাচল প্রদেশের সাথে দুটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে।
ভারত জম্মু ও কাশ্মিরে দ্রুততার সাথে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। চীন এখন চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ করতে থাকার প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ভারতের নদীগুলোতে প্রায় ১০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
ভারতের বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন সামর্থ্য হলো ৩৫৭,৮৭৫ মেগাওয়াট। এর মধ্রে ১৩ ভাগ তথা ৪৫,৩৯৯.২২ মেগাওয়াট আসে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো থেকে।
লাইভমিন্ট
ব্রিটিশ বিরোধী দলের কাশ্মির প্রস্তাব পাস, আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান
ব্রিটিশ বিরোধী লেবার পার্টি বুধবার ব্রাইটনে তাদের বার্ষিক সম্মেলনে জম্মু ও কাশ্মিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। প্রস্তাবটিতে কাশ্মির বিরোধ নিরসনে জাতিসঙ্ঘ-নেতৃত্বাধীন গণভোটেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
ব্যাকবার্ন, ডাডলি নর্থ, কেগলি, স্টকপোর্ট ও ওয়াকফিল্ড এলাকার লেবার পার্টির শাখাগুলো কাশ্মিরে ভারত সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের নিন্দা করে।
এদিকে নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে কাশ্মিরবিষয়ক ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার কন্টাক গ্রুপের সদস্যরা এক সভায় মিলিত হয়ে কাশ্মিরি জনগণের দুর্ভোগের প্রতি পূর্ণ সহমর্মিতা প্রকাশ করে, ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের ওপর থেকে নির্যাতনমূলক অবরোধ প্রত্যাহার ও অবৈধ সম্প্রসারণ বাতিল করার আহ্বান জানায়। ওআইসির মন্ত্রী পর্যায়ের সভার পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত এই ইস্তেহারকে ইতিবাচক ঘটনা হিসেবে অভিহিত করে।
কাশ্মিরি প্রতিনিধি ইশতিয়াক হামিদ ওআইসি কন্টাক গ্রুপের সাথে বৈঠককালে বলেন, কাশ্মির উপত্যকায় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে ভারত। এসব অপরাধ স্বাধীন মিডিয়া বা পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকেও তারা দূরে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এদিকে নিউ ইয়র্কের আইকনিক টাইমস স্কয়ারে আলোকসজ্জায় অধিকৃত কাশ্মিরের জনগণের প্রতি সংহতি জানানো হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা প্রদানের আগ দিয়ে এমনটা করা হয়। পাকিস্তানি সম্প্রদায়ের উদ্যোগে একটি স্ক্রিন বিজ্ঞাপনে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটিতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচালিত ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
কেএমএস।