ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কিছু অজানা দিক

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান - ছবি : সংগ্রহ
প্রাথমিক জীবন : মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আযীয ১৯৮৫ সালের ৩১ আগস্ট জেদ্দায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাদশাহ সালমানের তৃতীয় স্ত্রী ফাহদা বিনতে ফালাহ বিন সুলতান বিন হাতলিনের সন্তান। প্রিন্স মোহাম্মদ কিং সউদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ করেন।
ক্যারিয়ার : বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তার বাবার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করার আগে কয়েক বছর বেসরকারি খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। সউদী মন্ত্রিসভার জন্য দায়িত্ব পালনকারী বিশেষজ্ঞ কমিশনের পরামর্শক হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন।
২০০৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাবা সালমান রিয়াদের গভর্নর থাকাকালে মোহাম্মদ বিন সালমান তার বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দিয়ে রাজনৈতিক অভিযাত্রা শুরু করেন। এ সময় প্রিন্স সালমান বিভিন্ন পদবি পেতে শুরু করেন। রিয়াদ কম্পিটিটিভ কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল, কিং আবদুল আযীয ফাউন্ডেশন ফর রিসার্চ অ্যান্ড আর্কাইভসের বোর্ড চেয়ারম্যান, রিয়াদ অঞ্চলের আলবির সোসাইটির বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্য পদ এর মধ্যে অন্যতম।
২০১১ সালের অক্টোবরে ক্রাউন প্রিন্স সুলতান বিন আবদুল আযীয মৃত্যুবরণ করেন এবং প্রিন্স সালমান তার উত্তরাধিকারী হিসেবে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন আর ২০১১ সালের নভেম্বরে হন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সালমান এসব দায়িত্ব পাওয়ার পর ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ব্যক্তিগত উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন।
কোর্টের প্রধান : ২০১২ সালের জুন মাসে ক্রাউন প্রিন্স নায়েফ বিন আবদুল আযীয মৃত্যুবরণ করেন। এরপর প্রিন্স সালমান সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে উন্নীত হন। তিনি এ সময় ক্রাউন প্রিন্স ও প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। এতে তিনি নিজের প্রভাব প্রতিষ্ঠার মতো করে কোর্টে বিন্যাস আনেন। ২০১৩ সালের ২ মার্চ হাউস প্রিন্স কোর্টের প্রধান প্রিন্স সউদ বিন নায়েফ ইস্টার্ন প্রভিন্সের গভর্নর নিযুক্ত হলে মোহাম্মদ বিন সালমান ওই পদে নিযুক্তি লাভ করেন। এ সময় তাকে মন্ত্রীর পদমর্যাদাও দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল প্রিন্স মোহাম্মদ প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স
২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আযীয ইন্তেকাল করলে সালমান বিন আবদুল আযীয সউদী আরবের বাদশাহ নিযুক্ত হন। আর তখন বাদশাহ সালমান প্রিন্স মোহাম্মদকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। একই দিন রয়েল
কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবেও তার নাম ঘোষণা করা হয়। একই সাথে তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদমর্যাদাও অব্যাহত থাকে।
সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকনোলজিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার সিনিয়র ফেলো জেমস ডারসি বলেছিলেন, সউদী আরবে বিন সালমান রাজ্যের যুবসমাজের সাথে সংযোগ স্থাপনের ক্ষমতাসহ এমন অনেক ধরনের সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন, যাতে তিনি যা পারেন বিশেষত সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণ করার মূল বিষয়ে; তা সেভাবে প্রবীণ প্রজন্ম পারে না।
মানবকল্যাণ
মোহাম্মদ বিন সালমান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে নিজে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এই প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হলো- সুবিধাবঞ্চিত যুবকদের সহায়তা করা। ফাউন্ডেশনটি ২০১৩ সালে নবম ইউনেস্কো যুব ফোরামের অংশীদার ছিল। ফাউন্ডেশনটি কাজ করে দেশের যুবকদের ওপর দৃষ্টি রেখে। কলা ও বিজ্ঞানের বিকাশের মতো অনুকূল পরিবেশে প্রতিভা, সৃজনশীলতা এবং নানাবিধ আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য বিভিন্ন উপায়-উপকরণ সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি।
ফাউন্ডেশন স্থানীয় এবং বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বিত কর্মসূচি তৈরি করে এবং অংশীদার হয়ে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের চেষ্টা করে। এটি যুবকদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা বিকাশের পাশাপাশি সউদী নাগরিকের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্যও বিশেষ প্রচেষ্টা গ্রহণ করে।