আরাকান আর্মির হাতে আধুনিক প্রযুক্তি : ভয়াবহ বিপদে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী
আরাকান আর্মির হাতে আধুনিক প্রযুক্তি : ভয়াবহ বিপদে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী - ছবি : সংগৃহীত
রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির হাতে এখন আধুনিক প্রযুক্তি এসে গেছে। আর এতে ভয়াবহ বিপদে পড়ে গেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনোরেল জাও মিন তুন বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান আর্মি (এএ) এখন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় তারা বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।
সামরিক মুখপাত্র বলেন, আরাকান আর্মির এখন তাদের আক্রমণের সময় দূরনিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক ব্যবহার করায় নিরাপত্তা বাহিনীকে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছে।
জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, মোবাইল ফোন ও ওয়াকি-টকির মাধ্যমে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো যায়। ফলে আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আরো বেশি নজর দিতে হবে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে টার্গেট করে আরাকান আর্মি ব্লুটুথ ও ওয়াই ফাই প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থলমাইন বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে বলে ভারতীয় গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
কালাদান প্রকল্পে আরাকান আর্মির যে হুমকি সৃষ্টি করেছে, তা নিয়ে ভারত সরকার উদ্বেগে রয়েছে। বহুমুখী এই পরিবহন প্রকল্পটির মাধ্যমে ভারতের কলকাতা যুক্ত হবে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তুবির সাথে। তাছাড়া এটি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ভারতের প্রবেশদ্বার হিসেবেও কাজ করতে পারে।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, মিজোরামেও সক্রিয় আরাকান আর্মি।
জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও সন্ত্রাসদমনের জন্য মিয়ানমার সামরিক বাহিনী আন্তর্জাতিক সংস্থা, সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সাথে সহযোগিতা করছে।
তিনি বলেন, আরাকান আর্মিকে দমন করার মতো প্রযুক্তি আমাদের হাতে আছে। তবে কোনো প্রযুক্তিই ১০০ ভাগ নিশ্চয়তা দেয় না। সন্ত্রাসীরা প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে তা পরীক্ষা করে।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইঙ থুখা বলেন, তারা সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। তিনি বলেন, আক্রমণ চালাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
মিয়ানমার ইনস্টিটিউন ফর পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির নির্বাহী পরিচালক ড. মিন জাও ওও বলেন, মাইন বিস্ফোরণের জন্য রিমোর্ট কন্ট্রোল সরঞ্জাম ব্যবহার নতুন কিচু নয়। অনেক আগে থেকেই কয়েকটি জাতিগত গ্রুপ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের রাখাইনে স্থলমাইন পাওয়া গেছে। ইন্টারন্যাশনাল মাইন ব্যান ট্রিটির আওতায় স্থলমাইন ব্যবহার নিষিদ্ধ। তবে যে ৩২টি দেশ এখনো এই চুক্তিতে সই করেনি, তাদের অন্যতম মিয়ানমার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও চীনও এই চুক্তিতে সই করেনি। বাংলাদেশ এই চুক্তিতে সই করেছে।
আরাকান এলাকাতেই বাস করে রোহিঙ্গারা। এখান থেকেই উচ্ছেদ করা হয়েছে তাদেরকে। তারা এখন বাংলাদেশে বাস করছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন যে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে যে সঙ্ঘাত চলছে তাতে করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন আরো বিলম্বিত হতে পারে।
গত বছর থেকে আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সঙ্ঘাত ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
দি ইরাবতী