ব্লুটুথ দিয়ে স্থল মাইনে বিস্ফোরণ আরাকান আর্মির, উদ্বেগে ভারত

মনিশ শুক্লা | Sep 12, 2019 09:10 am
ব্লুটুথ দিয়ে স্থল মাইনে বিস্ফোরণ আরাকান আর্মির, উদ্বেগে ভারত

ব্লুটুথ দিয়ে স্থল মাইনে বিস্ফোরণ আরাকান আর্মির, উদ্বেগে ভারত - ছবি : সংগৃহীত

 

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নতুন একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্থলমাইনে বিস্ফোরণ ঘটাতে ‘ব্লুটুথ’ ও ‘ওয়াই ফাই’ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

মিজোরামের লংটালা জেলাজুড়ে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প স্থাপন করেছে আরাকান আর্মি। এর ফলে কালাদান প্রজেক্টটি হুমকির মুখে পড়েছে। এটি একটি বহুমুখী ট্রানজিট পরিবহন প্রকল্প। একে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ভারতের প্রবেশদ্বার মনে করা হয়।
মিজোরামেও উপস্থিতি রয়েছে বিদ্রোহী গ্রুপটির। এ কারণেই ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো স্থল মাইন বিস্ফোরণে তারা এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে কিনা তা যাচাই করছে।

ভারতীয় নিরাপত্তা এস্টাবলিশমেন্টের সাথে কাজ করা এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্রোহী গ্রুপগুলো স্থল মাইনে বিস্ফোরণ ঘটাতে ব্লুটুথ ব্যবহার করছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে আমরা আসাম রাইফেলসকে অনুরোধ করেছি।
জি নিউজের কাছে থাকা বিশেষ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এসব স্থল মাইনের হুমকি নস্যাৎ করার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনী সেখানে জ্যামার স্থাপন করেছে। উত্তর রাখাইন রাজ্যে মোতায়েন মিয়ানমার সেনাবহিনীর পদাতিক ব্যাটালিয়ন এসব এলাকা দিয়ে চলাচলের সময় বারবার জ্যামার ব্যবহার করছে। মিয়ানমারের আরেকটি বিদ্রোহী গ্রুপ কচিন ইন্ডিপেডেন্স আর্মিকেও আরাকান আর্মি আইইডি ব্যবহার শিখিয়েছে।
চলতি বছরের প্রথম দিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় তারা বিদ্রোহীরে ১২টি ক্যাম্প ধ্বংস করে দেয়।

এসব অভিযান সত্ত্বেও কালাদান প্রকল্প বড় ধরনের হুমকির মুখে রয়েছে। দক্ষিণ মিজোরাম সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অভিযানে বিপুল সাফল্য লাভের দাবি করেছে। তবে বাস্তবে পরিস্থিতি একই রকম রয়েছে। কালাদান প্রকল্পটি রক্ষার জন্য ভারতের কাছ থেকে আরো সহায়তা প্রত্যাশা করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
ভারতীয় নিরাপত্তা এস্টাবলিশমেন্টের সাথে সক্রিয় এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বরেন, আরাকান আর্মি পালেটওয়া সেতুর জন্য ৩০০ টন স্টিল ফ্রেম বহনকারী বার্মার জাহাজে হামলা চালিয়ে পুরো ইঞ্জিন ক্রু অপহরণ করেছে। পরে তাদের অবশ্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জাহাজটি ইয়াঙ্গুন থেকে পালেটওয়া যাচ্ছিল। আরাকান আর্মি এ ধরনের আরো হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে।
জি নিউজ


মিয়ানমারে কাচিন যাজকের বিরুদ্ধে মামলার উদ্যোগ, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
রয়টার্স
মিয়ানমারে ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেনা নিপীড়নের ব্যাপারে অভিযোগ করায় হাকালাম স্যামসন নামে এক যাজকের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। গত জুলাইয়ে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতে এই অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে ‘মিনিস্টিরিয়াল টু অ্যাডভ্যান্স রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ নামে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন মিয়ানমারের কাচিন ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশনের যাজক হাকালাম স্যামসন। গত জুলাইয়ে হোয়াইট হাউজের ওই অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাতে মিয়ানমারে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন তিনি। এ কারণে দেশটির সেনাবাহিনী হাকালাম স্যামসনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই অনুষ্ঠানে মিয়ানমার ছাড়াও আরো কয়েকটি দেশে ধর্মীয় কারণে নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মানহানি মামলার বিষয়টি বিশ্বব্যাপী প্রচারের উদ্দেশে তখন সম্প্রচার করেছিল হোয়াইট হাউজ। আশা করা হচ্ছে, ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই মামলা নিয়ে আদালত এগোবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নেবে।

মিয়ানমারের সেনাকর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান যাজক হাকালাম স্যামসন। তিনি বলেন, ‘সেখানে খ্রিষ্টানরা মিয়ানমান সেনাবাহিনীর নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।’
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মর্গান ওর্টাগাস বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বক্তব্য দেয়ার জন্য সম্মানীয় স্যামসনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগে মামলা ও গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত গভীর সমস্যার সৃষ্টি করবে। যুক্তরাষ্ট্র সবার বাক ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং মৌলিক স্বাধীনতাগুলো ও মানবাধিকারের অপব্যবহার বা লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতার জন্যও।’

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নৃশংসতা এবং এসব ঘটনায় সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে মানহানি আইন ব্যবহারেরও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
ওর্টাগাস বলেন, ‘স্যামসনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ তার মত প্রকাশকে সীমিত করার চেষ্টা করে এবং এতে সম্ভবত হাজার হাজার অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের পক্ষে তার দায়িত্বশীল কাজ ব্যাহত করতে পারে।’
মার্কিন সরকার এই বিবৃতি প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ আগেও দেশটির শীর্ষ সেনাকর্মকর্তাদের ওপর বর্ধিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেখানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা রয়েছে। এ কারণেই দেশটির সেনাপ্রধান ও অন্য তিন শীর্ষ কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আইনসম্মত অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ দিকে সেখানে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে দাবি করেছে জাতিসঙ্ঘের তদন্ত প্রতিনিধিরা।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us