কেন চুল পড়ে, কী করবেন?
কেন চুল পড়ে, কী করবেন? - ছবি : সংগ্রহ
চুল পড়া মানুষের জীবনে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ছোট বড় সবারই চুল পড়তে পারে। তবে যখন এই চুল পড়াটা অস্বাভাবিক পরিমাণে হয়, তখনই চুল পাতলা হয়ে আমাদের দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাড়ায়। এই চুল পড়ার কারণ জীবন চর্চার মাঝেই লুকিয়ে থাকে।
১. আপনি যথেষ্ট প্রোটিন খাচ্ছেন না। চুল গঠনে প্রোটিন (আমিষ খাবার) প্রয়োজন হয়। প্রোটিনের অভাবে চুলের বৃদ্ধি থেমে যায়, এমন কি রং এ পরিবর্তন আসে। এ জন্য দৈনিক অন্তত ৪০ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত। তাই শুধু মাছ-মাংসই নয়, ডিম, দুধ, ডাল, এবং শিমজাতীয় খাবার আপনার প্রোটিনের অভাব পুরণ করতে পারে।
২. খাদ্যে যথেষ্ট আয়রন থাকা উচিত। যারা প্রোটিন একেবারেই খান না (ভেজিটারিয়েন) তাদের প্রোটিনের পাশাপাশি আয়রনের অভাব ও দেখা দেয়। ১৯ থেকে ৫০ বৎসর বয়সে নারীদের দিনে ১৮ মি গ্রাঃ আয়রন গ্রহণ করা উচিত। এর থেকে বয়স বেশী হলে দৈনিক ৮ মি গ্রঃ যথেষ্ট। এ জন্য আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার চাইতে খাদ্যের মাধ্যমে আয়রন গ্রহণ বেশী উপকারী।
৩. মানসিক চাপ- বিভিন্ন কারনেই মানুষের মানসিক চাপ (ষ্ট্রেস) থাকতে পারে। ষ্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন, তাহলে চুল পড়া কমে যেতে পারে। এ জন্য নিয়মিত নামায পড়া চাপ কমাতে ভুমিকা রাখতে পারে।
৪. গর্ভধারনের সময় চুল না পড়লেও সন্তান জন্মের পর এক সাথে অনেক চুল পড়তে পারে। এটা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই, কিছুদিনের মধ্যেই এটা স্বাভাবিক হয়ে থাকে।
৫. থাইরয়েড সমস্যা চুল পড়ার অন্যতম কারণ। এ জন্য এ রোগের চিকিৎসার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৬. ঔষধ- কিছু ঔষধ যেমন উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঔষধ খেলে চুল পড়তে পারে। এ রকম অবস্থায় ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ঔষধ ঠিক করে নিতে পারেন।
৭. এছাড়া আবহাওয়ার পরিবর্তন, রক্তশূন্যতা, চুল বেশী টাইট করে বেধে রাখা, বংশগত কারণ, মেয়েদের মেনোপজ, ইত্যাদি কারণেও চুল পড়তে পারে।
চুলপড়ার প্রতিকার :
চুল পড়া শুরু হলে নিয়মিত শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে পরিস্কার রাখুন। প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্য খান, ভিজে চুল ব্রাস করবেন না, যথেষ্ট পানি পান করে নিজেকে সতেজ রাখুন, পরিমিত বিশ্রাম ও ঘুম ঠিক রাখুন। তাছাড়া ধুমপান ত্যাগ করা, এ্যালকোহল ও ক্যাফিন ছেড়ে দেয়া জরুরী। সপ্তাহে ৫ দিন প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে ঘামের মাধ্যমে চুলের গোড়া পরিস্কার হয়ে যায়। বিভিন্ন প্রকার তৈল (নারিকেল, যয়তুন, ইত্যাদি) দিয়ে মাথা মেসেজ চুল পড়া, পাতলা হওয়া কমাতে পারে। গ্রীন চায়ের এন্টিঅক্সিডেন্ট চুল পড়া বন্ধে সহায়ক।
ডাঃ মো: আকমান আলী,
এমবিবিএস, এফসিজিপি.
চীফ মেডিকেল অফিসার,
ইবনে সিনা হাসপাতাল।
দাঁত নিয়ে শিশুর জন্মগ্রহণ
বিরল হলেও সত্য, কোনো কোনো শিশু জন্মের সময় অতি ক্ষদ্রাকৃতির দাঁত নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে। জন্মের সময় শিশু যে দাঁত নিয়ে জন্মায় সেটি ন্যাটাল দাঁত নামে পরিচিত। ন্যাটাল দাঁতকে ফিটাল দাঁতও বলা হয়। ন্যাটাল দাঁত নিওন্যাটাল দাঁতের চেয়ে আলাদা, যা জন্মের ৩০ দিনের মধ্যে জন্মায়। জন্মগতভবে একটি শিশু যখন দাঁত নিয়ে জন্মায় তখন পরিবারের সবাই তো বটেই, আশপাশের মানুষের মধ্যে শিশুটিকে কেন্দ্র করে একটি অদম্য কৌতূহল জন্মায়। আলাপ-আলোচনা, সমালোচনা কোনো কিছুই বাদ যায় না। ন্যাটাল দাঁত দেখার জন্য সবার মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
ন্যাটাল দাঁত বা ফিটাল দাঁত সাধারণত নিচের মাড়িতে উঠে থাকে, যেখানে পরবর্তীকালে নিচের সেন্ট্রাল ইনসিসর অর্থাৎ কর্তন দাঁত উঠে থাকে। ন্যাটাল দাঁতের গোড়ার গঠন খুবই ছোট হয়ে থাকে, যা নরম কোষের মাধ্যমে গাম বা মাড়ির সাথে সংযুক্ত থাকে। ন্যাটাল বা ফিটাল দাঁত নিয়ে বহু বছর ধরে কুসংস্কার বিদ্যমান। ন্যাটাল দাঁত সাধারণত একটি হয়, তবে একের অধিকও হতে পারে। ন্যাটাল দাঁতের গঠন তত শক্ত নয়।
তবে ন্যাটাল দাঁতের কারণে জিহ্বায় ক্ষত দেখা দিতে পারে। দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য ন্যাটাল দাঁত খুবই অসুবিধার সৃষ্টি করে থাকে। বিশেষ করে দৃগ্ধদান করার সময়। জন্মের সময় শিশু হাসপাতালে থাকাকালে ন্যাটাল দাঁত ফেলে দেয়া উচিত, যদি ন্যাটাল দাঁতের অবস্থা নড়বড়ে থাকে। কারণ, এ ধরনের ন্যাটাল দাঁতের কারণে শিশু দাঁতটি খেয়ে ফেলতে পারে। আবার দাঁতটি শ্বাসনালীতে প্রবেশ করতে পারে। যাদি রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে তাহলে ন্যাটাল দাঁত তখন তোলা যাবে না। ১০ দিন অতিবাহিত হলে ভিটামিন ‘কে’ ইনজেকশন প্রয়োগ করার পর দাঁত তুললে কোনো সমস্যা হবে না।
ন্যাটাল দাঁত সাধারণত কোনো শারীরিক অবস্থার সাথে সংযুক্ত থাকে না। তবে কখনো কখনো ন্যাটাল দাঁত যেসব শরীরিক অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে, সেগুলো হলো- (ক) এলিসভ্যান ক্লিভেন্ড সিনড্রোম, (খা) হলারম্যান স্ট্রিফ সিনড্রোম, (গ) পিয়ারি রবিন সিনড্রোম, (ঘ) সটো সিনড্রোম। এ ছাড়া ন্যাটাল দাঁত ঠোঁট কাটা এবং তালু কাটা শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যেতে পারে।
ডা: মো: ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
ইমপ্রেস ওরাল কেয়ার
বাড়ি- ৪২৮, সড়ক- বর্ণমালা
ইব্রাহিমপুর, ঢাকা।
মোবাইল : ০১৮১৭৫২১৮৯৭