কাশ্মিরের সুন্দরী নারীদের বিয়ে করুন : দলীয় কর্মীদের নির্দেশ বিজেপি নেতার
কাশ্মিরের নারী - ছবি : সংগৃহীত
ট্রেন্ডিং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মে নানা ধরনের আলোচনায় মেতে ওঠেন নেটিজেনরা। ছড়িয়ে পড়ে মিম ও ব্যঙ্গাত্মক ছবি। কিন্তু জনসভায় দাঁড়িয়ে একজন জনপ্রতিনিধির মুখে কি সেই হালকা চালের মন্তব্য শোভা পায়? বিশেষত যদি তা নারীর অমর্যাদা বয়ে আনে? কিন্তু কার্যত সেই রকমই কাজ করে সমালোচনার মুখে ভারতের উত্তরপ্রদেশের কাটৌলির বিজেপি বিধায়ক বিক্রম সাইনি।
কিন্তু কী বলেছেন ওই বিজেপি বিধায়ক? মঙ্গলবার এক জনসভায় বক্তৃতা দেয়ার সময় তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের মুসলিম কর্মকর্তাদের উৎসব পালন করা উচিত। এ বার বিয়ে করুন না, কাশ্মীরের ফর্সা মেয়েদের। আনন্দ করুন। এ নিয়ে হিন্দু হোন বা মুসলিম সবার আনন্দ করা উচিত। এটা এমন একটা বিষয়, যা নিয়ে গোটা দেশের উৎসব করা উচিত।’’
কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া ৩৭০ ধারাটি ইতিমধ্যেই রদ করেছে মোদি সরকার। তার পর সেই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব বোঝাতে নিজেদের এলাকায় এলাকায় প্রচারে নেমেছেন বিজেপির স্থানীয় নেতামন্ত্রীরা। ৩৭০ ধারা রদের সিদ্ধান্ত উদ্যাপন করতে মঙ্গলবার নিজের এলাকায় সেই রকমই এক সভার আয়োজন করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের কাটৌলির বিজেপি বিধায়ক বিক্রম সাইনি। আর সেই সভায় দাঁড়িয়ে কাশ্মীরি মহিলাদের বিয়ে করা নিয়ে এ হেন মন্তব্য করেছেন।
৩৭০ ধারা রদের ফলে কী সুবিধা হবে সে কথা ফলাও করে এ দিন জানিয়েছেন এই বিধায়ক। তিনি বলেছেন, ‘‘সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমাদের কর্মীরা বেশ উৎসাহিত। বিশেষত যারা অবিবাহিত। আগে কাশ্মীরি মহিলাকে কোনো উত্তরপ্রদেশের ব্যক্তি বিয়ে করলে মেয়েটির নাগরিকত্ব বাতিল হতো। ভারত ও কাশ্মীরের জন্য আলাদা নাগরিকত্ব ছিল। কিন্তু এখন আর সেই বাধা নেই। ভারতের যে কেউ কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করতে পারেন।’’
মঙ্গলবারের সেই সভায় বিজেপি বিধায়ক বিক্রম সাইনি ৩৭০ ধারা রদের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন মোদিকে। হিন্দিতে দেয়া বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, ‘‘মোদিজি আমার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এই সিদ্ধান্তে সারা ভারত খুশি। চারিদিকে ঢোল বাজছে, উৎসব হচ্ছে।’’ নিজের পরিচিতকে ফোন করে কাশ্মীরে নিজের বাড়ি কেনার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেছেন এই বিজেপি বিধায়ক।
বিক্রম সাইনির এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই তার ‘নারীবিদ্বেষী’ মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা করছেন নেটিজেনরা। তবে সাইনির কাছে বিষয়টি নতুন কিছু নয়। এর আগেও এ বছর জানুয়ারি মাসে তিনি বলেছিলেন, ‘‘যারা দেশের মধ্যে থেকে নিজেকে অসুরক্ষিত ভাবছেন তারা দেশদ্রোহী। তাদের এখানে থাকা উচিত নয়। মন্ত্রিত্ব দিলে আমি ওই সব লোকেদের বোমা মেরে উড়িয়ে দেব।’’
আনন্দবাজার পত্রিকা