মিন্নি কি জামিন পাবে?
মিন্নি - ছবি : সংগৃহীত
বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আসামি তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদনের ওপর আজ মঙ্গলবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষে সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি শেখ মো: জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন।
গতকাল সোমবার জামিন চেয়ে মিন্নির করা আবেদনটি আদালতে দাখিল করেন তার আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সাথে ছিলেন, আইনজীবী এম মাইনুল ইসলাম ও মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো: রেজাউল করিম। এ প্রসঙ্গে মিন্নির আইনজীবী জেড আইন খান পান্না সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত রোববার আবেদন প্রস্তুত করে আজ (গতকাল সোমবার) ফাইল করেছি। কাল (আজ মঙ্গলবার) বিচারপতি শেখ মো: জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হবে।
আদালতে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ মামলায় মিন্নি চাক্ষুষ সাক্ষী, অথচ মামলার ১২ নম্বর আসামির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আসামি করা হয়েছে। অবশ্যই এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম আদালতের কাছে সময়ের আবেদন করে বলেন, এ মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল নিজে শুনানি করবেন। এ জন্য সময় প্রয়োজন। এরপর আদালত আজ মঙ্গলবার জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন।
কী যুক্তিতে মিন্নির জামিন চাওয়া হয়েছে জানতে চাইলে জেড আই খান পান্না সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমত তিনি একজন নারী এবং তিনি অসুস্থ। তা ছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৮ ধারায় তার জামিন পাওয়ার অধিকার আছে। আর তিনি এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী। ষড়যন্ত্র করে তাকে গ্রেফতার ও আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরদিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে।
সম্প্রতি মিন্নির শ্বশুর তার ছেলের হত্যাকাণ্ডে পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে আলোচনা নতুন দিকে মোড় নেয়। গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরদিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মিন্নিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষে মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হলে সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন বলে পুলিশ জানায়। ইতোমধ্যেই তিনি জবানবন্দী প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে। বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর তার আইনজীবীরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।