ভেট্টরির এত দাম? ১ দিনে ৪ লাখ ২০,০০০!
ড্যানিয়েল ভেট্টরি - ছবি : সংগ্রহ
জাতীয় দলের নতুন স্পিন বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরির আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা আছে। তাই বলে সাবেক এই অলরাউন্ডারের বেতন এক দিনে পাঁচ হাজার ডলার (প্রায় চার লাখ ২০ হাজার টাকা)। ক্রিকেটপাড়ার গুঞ্জন, দিনে প্রায় পাঁচ হাজার ডলার সম্মানী নেবেন তিনি। চুক্তি মোতাবেক ১০০ দিনে প্রায় পাঁচ লাখ ডলার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির একজন পরিচালক জানান, ‘ভেট্টরি বড় ক্রিকেটার ছিলেন, তবে কোচ হিসেবে পরীক্ষিত নন। যেটা শুনছি, ১০০ দিন কাজ করলে পাঁচ লাখ ডলার সম্মানী নেবেন তিনি।’
অনেকে মনে করছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হলে এই টাকা ঠিক ছিল। কিন্তু একটা জাতীয় দলের স্পিন কোচ হিসেবে সম্মানীটা বেশি মনে হচ্ছে। বিসিবির বেশির ভাগ পরিচালকই জাতীয় দলের বিদেশী কোচিং স্টাফের বেতন সম্পর্কে জানেন না। তাই পরিচালকদের বেশির ভাগই নতুন এই কোচের সম্মানী নিয়ে ধোঁয়াশায়। কোচিং স্টাফের বেতন কেন পরিচালকদের জানানো হয় না, সেটা বড় প্রশ্ন।
এ নিয়ে পরিচালকেরাও অসন্তুষ্ট। ‘চুক্তির ও আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই পরিচালনা পর্ষদের সভায় বিষয়টি প্রকাশ করা উচিত। গত সভায় পেস ও স্পিন বোলিং কোচের নাম জানালেন বোর্ড সভাপতি। কিন্তু তাদের পেছনে কত টাকা ব্যয় হচ্ছে, এই তথ্যগুলো দেয়া হয়নি। এগুলো পরিচালনা পর্ষদের জানার অধিকার আছে। শুনেছি, চাকরি ছেড়ে দেয়ার পরও হাতুরাসিংহেকে তিন মাসের বেতন দিতে হয়েছে। তিনি চাকরি ছেড়ে গেলেন, অথচ তাকে তিন মাসে ৮০ হাজার ডলারের মতো বেতন দেয়া হলো।’
পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া জানান, ১০০ দিনে দুই লাখ ডলার দেয়া হবে ৪০ বছর বয়সী এ স্পিন কোচকে। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাকি কোচদের মতোই পাবেন। বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী নতুন স্পিন বোলিং কোচের প্রকৃত বেতন নিয়ে বলতে নারাজ। তবে এটুকু বলেন, ‘ভেট্টরিকে অত বেশি সম্মানী দেয়া হচ্ছে না। ভেট্টরিকে বাজারমূল্যের চেয়েও কম সম্মানী দেয়া হচ্ছে। অবশ্যই সেটা দিনে পাঁচ হাজার ডলার না। তিন লাখের চেয়েও কম দেয়া হচ্ছে।’
নিজাম উদ্দিনের হিসাবে ১০০ দিনে তিন লাখ হলে দিনে তিন হাজার ডলার সম্মানী। বাকি সুযোগ-সুবিধা এবং বোনাস মিলে সেটা পাঁচ হাজার ডলার হতেও পারে। তবে ল্যাঙ্গেভেল্টের বেতন প্রায় ১৫ হাজার ডলার বলে জানা গেছে। সাবেক পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশও ১৫ হাজার ডলার বেতন পেতেন বিসিবি থেকে। তবে সবচেয়ে বেশি মাসে ২৬ হাজার ডলার বেতন নিয়েছেন চন্ডিকা হাতুরাসিংহে।
কোচকে চাকরি ছেড়ে দেয়ার পরও তিন মাসের বেতন দিতে হয়েছে, এমন নজির রয়েছে। তবে স্টিভ রোডসকে নিয়োগ দেয়ার সময় চুক্তিতে এমন ভুল আর হয়নি। যে কারণে রোডসকে সহজেই বিদায় দিতে পেরেছে।
বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস পর্যন্ত জাতীয় দলের নতুন নিয়োগ পাওয়া পেস ও স্পিন বোলিং কোচের বেতন এবং সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানেন না। ভেট্টরির বেতনের কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন, ‘এত টাকা বেতন হতে পারে না।’ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বোর্ড সভায় উন্মুক্ত আলোচনা হওয়া উচিত কি না জানতে চাইলে আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি বলেন, ‘আমি মনে করি, যেকোনো বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকা ভালো। বোর্ড সভায় বিষয়গুলো জানাতে পারত।’
গুঞ্জন আছে কোচ সরবরাহ করার ক্ষেত্রে এজেন্সি কমিশন নিয়ে থাকেন পরিচালকেরাও। এই কমিশন বাণিজ্যকে বৈধ মনে করেন পরিচালকদের অনেকেই। এ দিকে স্পিন আর পেস বোলিং কোচ নিয়োগ দেয়া হলেও প্রধান কোচের বিষয়টি ঝুলে আছে। জালাল ইউনুস জানান, ‘পুরো সময়ের জন্য প্রধান কোচ পাওয়া যাচ্ছে না। আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’