বরগুনা হত্যাকাণ্ড : কী কী স্বীকার করেছেন মিন্নি
বরগুনা হত্যাকাণ্ড : কী কী স্বীকার করেছেন মিন্নি? - ছবি : সংগৃহীত
আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যায় জড়িত থাকার কথা তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। মামলার ৩ নম্বর আসামি রাশিদুল হাসান রিশান ওরফে রিশান ফরাজীকে (২০) গ্রেফতারের পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। এর আগে বুধবার বিকেলে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলার শুনানি শেষে মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক মো: সিরাজুল ইসলাম গাজী। এদিকে গতকাল সকাল ১০টার দিকে রিশান ফরাজীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: শাহজাহান হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে কোথা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা তদন্তের স্বার্থে জানায়নি পুলিশ।
গতকাল জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসপি মারুফ হোসেন বলেন, এ পর্যন্ত আটক আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী এবং মিন্নির কথা থেকে পাওয়া সুস্পষ্ট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তাকে এ মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিন্নি এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতেন। শুরু থেকে এ হত্যার সাথে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের সাথেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। হত্যাকাণ্ড ঘটাতে যা যা প্রয়োজন, সব ধরনের মিটিং করেছেন হত্যাকারীদের সাথে। হত্যার আগে ও পরে খুনিদের সাথে মিন্নির কথোপকথন হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও দু-একটি গণমাধ্যম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রকাশ করছে অভিযোগ করে এসপি বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’ রিফাত হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও তার স্ত্রী মিন্নিকে গত মঙ্গলবার ১৩ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকাণ্ডটি কোনো মাদকের কারণে ঘটেনি। ঘটেছে ব্যক্তিগত জিঘাংসার কারণে। মাদক বা অন্য কোনো ইস্যুর কথা উঠলে মামলাটির ফোকাস ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে পারে। এ মামলায় বাদি যাদের হত্যাকারী দাবি করেছেন, আমরা তাদের প্রায় সবাইকেই ধরেছি এবং কাউকেই ছাড় দিচ্ছি না। এ পর্যন্ত আমরা এজাহারভুক্ত আটজনকে গ্রেফতার করেছি। মোট ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই। এ মামলায় নয়ন বন্ডদের যারা প্রশ্রয় দিয়েছেন, তাদের কী হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, যাদেরই হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদেরই আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ কোনো রাজনৈতিক চাপের মধ্যে আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুলিশ কোনো চাপের মধ্যে নেই।’
গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরো চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।