বালাকোট হামলা ও পাল্টা হামলা
বালাকোট হামলা ও পাল্টা হামলা -
(২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতের আধা সামরিক বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা বিএসএফের কনভয়ের ওপর আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় এক কাশ্মিরি স্বাধীনতাকামী। এতে নিহত হয় ৪৪ জন বিএসএফ সদস্য। আহত হয় আরো অনেকে। এ ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করে জইশ-ই-মুহাম্মদ (জেইএম) নামে পাকিস্তানভিত্তিক একটি সংগঠন। তাদের ভাষায়, ভারতের দখল থেকে কাশ্মিরকে মুক্ত করার জন্য লড়াই করছে তারা। তবে ভারত এ হামলার জন্য দায়ী করে পাকিস্তানকে। এ দিকে সারা ভারতে আলোড়ন সৃষ্টি হয় এ হামলায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর কঠোর প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেন। শুধু তাই নয়, এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনীকে কর্তৃত্ব প্রদান করেন তিনি। তখনই পরিষ্কার হয়ে যায় পাকিস্তানে ভারতের প্রতিশোধমূলক হামলা আসন্ন।
১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত সেই হামলা চালায়। ভারতীয় সময় ভোর সাড়ে ৩টায় ১২টি মিরেজ-২০০০ জঙ্গিবিমান পাকিস্তানে হানা দেয়। বিমানগুলো পাকিস্তানের ৪৮ মাইল অভ্যন্তরে প্রবেশ করে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত এলাকা বা খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে বোমাবর্ষণ করে। ভারতের তথ্য মতে, সেখানে জঙ্গিশিবির ছিল। বিমান হামলায় ওইসব শিবির গুঁড়িয়ে দেয়া হয় বলে ভারত জানায়। ভারতীয় মিডিয়া সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে জানায়, এ হামলায় তিন শ’র মতো জঙ্গি নিহত হয়েছে।
ভারতীয় সব জঙ্গিবিমান নিরাপদে ফিরে এসেছে বলেও জানানো হয়। একই সময় মুজাফফরাবাদ ও চাকোতি নামে আরো দুই জায়গায় বিমান হামলা করা হয় বলে ভারত জানায়। পাকিস্তান এ ভারতীয় বিমান হামলার মোকাবেলা করতে পারেনি। তবে পরদিন দেশটি পাল্টা আঘাত করে, যার পরিণতিতে ভারত ন্যূনপক্ষে একটি জঙ্গিবিমান হারায় এবং তাদের এক পাইলট পাকিস্তানের হাতে আটক হন। বালাকোটের এ হামলা ছিল উদীয়মান পরাশক্তি ভারতের প্রতিশোধ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি রক্ষা। পাকিস্তান এ হামলার পাল্টা জবাব দিয়েছে যাকে দুঃসাহসিক বলা যায়। পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী দুই দেশের মধ্যকার এ ঘটনা উপমহাদেশের শান্তিকামী মানুষদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্য দিকে তা স্বাধীনতাকামী কাশ্মিরিদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ক্ষেত্রে কোনো আলোর বার্তা বয়ে আনতে পারেনি।)
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। রাত সাড়ে ৯টা। বাইরের সব কাজ সেরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার ৭ লোককল্যাণমার্গের বাসভবনে ফিরলেন। সে রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে দেখা করতে এসেছিলেন অনেকেই। ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু কাউকেই সে কথা জানালেন না মোদি।
২৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত। পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালানোর তখনো কয়েক ঘণ্টা দেরি। কর্মচারীরা দেখে অবাক হলো যে অন্যান্য দিনের মতো মধ্যরাতেও প্রধানমন্ত্রী ঘুমাতে গেলেন না, বরং তিনি স্টাডিতে ফাইল নিয়ে কাজ করে চললেন। আর ই-মেইল পাঠাতে থাকলেন মাঝে মাঝে। কেউ জানল না যে তিনি আসলে বিমান হামলার খবর জানার জন্য অপেক্ষা করছেন।
ভোর ৩টার সময় তাকে জানানো হলো যে ভারতীয় জঙ্গিবিমান বহর আকাশে উড়েছে। শিগগিরই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়বে সেগুলো। আধা ঘণ্টা পর তাকে আবার জানানো হলো জঙ্গিবিমানগুলো পাকিস্তানে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে এবং নিরাপদে নিজ নিজ ঘাঁটিতে ফিরে এসেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাতের এ বিমান হামলা ১৯৭১ সালের পর পাকিস্তানে ভারতের প্রথম বিমান হামলা হতে চলেছিল। এটা ছিল এক সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত। এ রকম দু’টি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭৪ সালে ভারতের প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়ে আর ১৯৯৮ সালে আরেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে। চূড়ান্ত পরীক্ষা চালানোর মধ্য দিয়ে ভারত যেন তখন জানিয়ে দিয়েছিল যে, ভবিষ্যতে পাকিস্তানি মদদে সন্ত্রাস হলে সে কোন পথে হাঁটবে।
সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে মোদি তার মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠকে পুরো বিষয়টি ব্রিফ করলেন। কমিটিতে ছিলেন অর্থ, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সবাই তখন জানতে পারলেন কী ঘটেছে।
পরদিন সকালেই ভারতে পাল্টা হামলা চালাল পাকিস্তান। পরবর্তী ঘটনাবলি থেকে সন্দেহের কুয়াশা ঘন হতে থাকল : কী এমন ব্যাপার যে মোদি পাকিস্তানের একেবারে অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালানোর নির্দেশ দিলেন? জইশ-ই-মুহাম্মদের সক্রিয় প্রশিক্ষণ শিবিরই কি ভারতের জঙ্গিবিমানগুলোর লক্ষ্য ছিল নাকি পাকিস্তান যেমনটি দাবি করছে, তদনুযায়ী পরিত্যক্ত শিবিরেই হামলা চালিয়েছে ভারত? কী প্রমাণ আছে যে, ভারতের জঙ্গিবিমানগুলো অব্যর্থ ও ভয়ঙ্কর আঘাত হেনে জঙ্গিশিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে ও প্রায় ৩০০ জঙ্গি নিহত হয়েছে? নাকি পাকিস্তান যেমন উপহাস করে বলছে ওই এলাকার কিছু গাছ ধ্বংস ছাড়া এ হামলায় আর কিছু লাভ হয়নি, সেটাই সত্যি? বালাকোট হামলার পরদিন পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ জঙ্গিবিমান গুলি করে ভূপাতিত করার ভারতের দাবির কোনো প্রমাণ কি আছে?
১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলার কথা যখন মোদি শুনলেন, তার সহায়তাকারীরা বলেন, তিনি নিরাপত্তারক্ষীদের মৃত্যুতে ভীষণ ক্ষুব্ধ হলেন। এই হামলার মধ্য দিয়ে জেইএম ও তাদের পাকিস্তানি মদদদাতারা যে নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়েছে তা তাকে ক্ষিপ্ত করে। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করলেন, এ হামলার প্রতিশোধ নেয়া হবে। তারা বলেন, মোদির সিদ্ধান্ত আবেগবশত বা আকস্মিক কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। তিনি বললেন, এ ধরনের সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। তা হচ্ছে, কী করা হবে নয়Ñ কী করা হচ্ছে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে উরি হামলায় ২৩ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর মোদি সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর নির্দেশ দেন। এ পদক্ষেপ এ ইঙ্গিত বহন করছিল যে, ভারত এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না। তার আগেও ভারত এ ধরনের হামলা পাকিস্তানে চালিয়েছে, কিন্তু তা প্রকাশ করা হয়নি।
পাকিস্তানে হামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় মনে হয় মোদি চীনা জেনারেল সানজুর নীতি অনুসরণ করেছিলেন : তুমি যদি তোমার শত্রুকে জেনে থাকো ও নিজেকে চিনে থাকো, তাহলে শত যুদ্ধের ফল নিয়েও তোমার ভয় নেই। যদি তুমি নিজেকে চিনে থাকো কিন্তু শত্রুকে চেনা না থাকে, প্রতিটি বিজয় লাভের সাথে সাথে তোমার পরাজয়ও হবে। যদি তুমি শত্রু বা নিজেকে কাউকেই না চিনে থাকো, তাহলে প্রতিটি যুদ্ধেই তুমি পরাজিত হবে।
কোনো সন্দেহ নেই যে ভারত পাকিস্তানের চেয়ে শক্তিশালী, দ্রুতউন্নয়নশীল অর্থনৈতিক শক্তি। ভারতে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে একটি সরকার ক্ষমতাসীন, সরকারপ্রধান এমন ব্যক্তি যিনি ঝুঁকিপূর্ণ বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
মোদির নেতৃত্বাধীন ভারত চীনের পরই বিশ্বশক্তি। চীন বাদে প্রধান বিশ্বশক্তি দু’টি তার পক্ষে। অন্য দিকে পাকিস্তান মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কটে নিমজ্জিত, দেশটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভরশীল এক দুর্বল ব্যক্তি।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীন যথাক্রমে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখা ও নিজেদের জন্য জায়গা করে নিতে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এ দিকে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা করছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে, পাকিস্তানও পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী, অতএব তার সাথে সতর্কতার সাথে আচরণ করতে হবে। সে দেশে সরকারের উচ্চপর্যায় প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের মতবাদ লালন করে।
পাকিস্তানে আঘাতও হানা হবে এবং একই সাথে কোনো পারমাণবিক যুদ্ধেও জড়িত হওয়া নয়- মোদি এই পথে পা রাখলেন। সাথে সাথে দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার কাজ শুরু হয়ে গেল : ভারত পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু সন্ত্রাসী ও জঙ্গি এবং তাদের যারা লালন করে- তাদের বিরুদ্ধে। সিদ্ধান্ত নেয়া হলো, পুলওয়ামার জবাবে যা করা হবে তা যেন আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে অযৌক্তিক মনে না হয়। তাই অসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে মাপা আঘাত করা হবে, যেমন সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ শিবিরগুলো। সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর একজন সহযোগী বলেন, হামলার ব্যাপ্তি কম হবে না ও আঘাতের প্রচণ্ডতা হবে সমধিক, এটি স্থির হয়। ভারত জানত যে বিমানবাহিনী ব্যবহারে ঝুঁকি বাড়বে, আর সে ঝুঁকি এড়ানোর জন্য চেষ্টা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও সশস্ত্রবাহিনীর প্রধানদের সীমিত লক্ষ্যে আঘাত হানার একটি পরিকল্পনা তৈরির স্বাধীনতা দিলেন, তবে নির্দেশ থাকল যে সব ধরনের বিকল্প বিষয়ে তাকে যেন সম্পূর্ণ অবহিত করা হয়। আরেকজন উচ্চপর্যায়ের সহযোগী জানান যে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে বলেন, কোনোভাবেই যুদ্ধের বিস্তৃতি ঘটানো যাবে না। এ ধরনের কোনো উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য থাকবে না, কারণ ভারত তার ভূখণ্ড সম্প্রসারণ চায় না। মোদি তাদের বললেন, পাকিস্তানকে দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে, কিন্তু নিশ্চিত করতে হবে যাতে বেসামরিক প্রাণহানি না ঘটে। তিনি বললেন, সব কিছু যেন পরীক্ষা করা আর সব তথ্য যেন সঠিকভাবে যাচাই করা হয়। অতএব দোভাল, গোয়েন্দা প্রধানগণ ও তিন বাহিনীর প্রধান এমন এক টার্গেটের ব্যাপারে একমত হলেন, যেখানে হামলায় অতিরিক্ত ক্ষতি হবে না।
তারা তিনটি লক্ষ্যবস্তু নিয়ে আলোচনা করলেন। একটি হলো পাঞ্জাবের বাহওয়ালপুর, আরেকটি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের সাওয়াইনাল্লা এবং আরেকটি হলো পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোট। তবে প্রথমটি জেইএমের সদর দফতর হলেও তাতে হামলা বাতিল করা হলো ঘনবসতির জায়গা বলে, দ্বিতীয়টি বাতিল করা হলো যেহেতু ২০১৬ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক সেখানে চালানো হয়েছিল। টার্গেট স্থির হলো তৃতীয়টি অর্থাৎ বালাকোট। কারণ, এখানে জেইএমের শিবির ছিল আর তা অবস্থিত ছিল জনবিরল এলাকায়। বহু বছর ধরেই জায়গাটি ভারতীয় গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিল। প্রায় ৬ একর জায়গায় অবস্থিত এ শিবিরে ছিল ১০টি প্রধান ভবন ও একটি মাদরাসা কমপ্লেক্সসহ আরো স্থাপনা। এ শিবিরের দায়িত্বে ছিলেন জইশপ্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক ও প্রধান প্রশিক্ষক ইউসুফ আজহার।
পাকিস্তান বলেছে, ভারতের বিমান হামলার সময় বালাকোট ক্যাম্প ছিল ফাঁকা। কয়েক বছর আগে জইশ এটি ছেড়ে যায়। কিন্তু ভারত বলেছে, হামলার সময় ক্যাম্পটি ফাঁকা ছিল না। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া ছবিতে দেখা যায় সেখানে জেহাদিরা ছিল। তাদের গোয়েন্দা তথ্যে বলা হয়, ইউ আকৃতির প্রধান কমপ্লেক্সে ভারতীয় হামলার সময় ১ নম্বর কক্ষে ছিলেন ইউসুফ আজহার। অন্যান্য কক্ষে আরো ছয়জন নেতা। তারা ছাড়াও ছিলেন আরো পাঁচ থেকে আটজন প্রশিক্ষক এবং প্রশিক্ষণাধীন ৯৭ জন ফেদাইন। তারাসহ প্রায় ২০০ প্রশিক্ষণার্থী সেখানে ছিল। সব মিলিয়ে বালাকোট ক্যাম্পে লোকসংখ্যা ছিল প্রায় তিন শ’।
অজিত দোভালের নেতৃত্বাধীন মূল টিম হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করল। তিনি এ ব্যাপারে মোদিকে ব্রিফ করলেন। মোদি ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিমানবাহিনীকে হামলা চালানোর অনুমোদন দেন। প্রস্তুতি শুরু করে তারা। বিমানবাহিনীপ্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বীরেন্দর সিং ধানোয়া যখন শুনলেন, তার বাহিনীকে এই হত্যাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তার মুখ আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল। ধানোয়া ছিলেন এ ধরনের হামলার পরিকল্পনা প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ। ২০০১ সালে জম্মু ও কাশ্মির পার্লামেন্টে হামলার জবাবে পাকিস্তানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম। তখন গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাকে বালাকোট প্রশিক্ষণ শিবির ও কিভাবে সেখানে যেতে হয় তার একটি বিবরণ দেন। ধানোয়া তাকে বলেন, আপনারা কি আমাকে একটি রেস্তোরাঁয় যেতে ও সেখানে লাঞ্চ করতে বলছেন? আমার যা দরকার তা হলো জিওগ্রাফিক্যাল কো-অর্ডিনেটস যার ওপর ভিত্তি করে আমি বিমান হামলা চালাতে পারি।
১৮ বছর আগের সে কথা স্মরণ করে হাসলেন ধানোয়া। আজ ভারতের গোয়েন্দা প্রযুক্তির সাগরসমান পরিবর্তন ঘটেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা বালাকোট সম্পর্কে যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছে তা দেখে ধানোয়া ও তার টিম প্রশংসা করলেন। উপগ্রহের তোলা ক্যাম্পের হাই রেজুলিউশন ছবিসমর্থিত এসব তথ্য অমূল্য বলে বিবেচিত হলো। মোদির অনুমোদন পাওয়ার পর বিমানবাহিনীর শীর্ষ অফিসার ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা রোজ একসাথে বসে খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করলেন। এ দিকে মোদির প্রকাশ্য প্রতিশোধ গ্রহণের হুমকির পর পাকিস্তান উচ্চ সতর্কাবস্থায় ছিল। পাকিস্তান যাতে কোনো সন্দেহ না করতে পারে সেজন্য জম্মু ও শ্রীনগরে জঙ্গিবিমানের রাত্রিকালীন উড়ালের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয়া হলো।
এ দিকে ভারত বিমান হামলা চালানোর দিন ও সময় নির্ধারণে ভীষণ দক্ষতার পরিচয় দিলো। ২০ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি এয়ার শো ছিল ব্যাঙ্গালুরুতে। এত বিদেশী অতিথির উপস্থিতিতে বিমান হামলা চালানো যাবে না। তাই অপেক্ষা করলেন তারা। এ দিকে জানা গেল যে ২৫ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে নতুন রিক্রুট করা জঙ্গিরা আসছে। ব্যস, সময় নির্ধারণ হয়ে গেল ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোর। পাকিস্তানি চররা যাতে কোনো সন্দেহ না করে সেজন্য সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখা হলো।
২৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টায় ধানোয়া বাড়ি ফিরলেন। মনিটরিং শুরু করলেন তিনি।
এ দিন দিল্লিতে বৃষ্টি হচ্ছিল। তিনি চিন্তায় পড়লেন যে বালাকোটের আবহাওয়াও হয়তো খারাপ থাকবে। কিন্তু না, সেখানে আকাশ ছিল পরিষ্কার। আকাশে ছিল চাঁদের আলো। সময় নির্ধারণ করা হলো ভোর ৩টা। এ সময় সবাই ঘুমিয়ে থাকবে। মাত্র ১২টি মিরেজ-২০০০ জঙ্গিবিমান এ হামলায় অংশ নিলো। জঙ্গিবিমানগুলো সজ্জিত ছিল ইসরাইলের তৈরি স্পাইস (স্মার্ট প্রিসাইজ ইমপ্যাক্ট অ্যান্ড কস্ট ইফেক্টিভ) ২০০০ বোমায়। এগুলো সঠিক লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম। মিরেজ জঙ্গিবিমানগুলোকে সমর্থন দিতে চারটি সুখোই-৩০ জঙ্গিবিমান এবং দু’টি গোয়েন্দা বিমান ইসরাইলি ফ্যালকন অ্যাওয়াকস এবং মাঝ আকাশে জঙ্গিবিমানে জ্বালানি সরবরাহ করার জন্য দু’টি আইএল-৭৬এস সাথে থাকল। আরো থাকল বিশেষ প্রযুক্তি সজ্জিত একটি ড্রোন। পাকিস্তান বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা যাতে সতর্ক হওয়ার কথা না ভাবে সেজন্য বিমানগুলো উড়ল আগ্রা ও বেরেলি বিমানঘাঁটি থেকে। দিল্লির ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বিমানবাহিনী ট্রাফিক কন্ট্রোলকে সতর্ক করে দিলো যেন এয়ার স্পেসে একটি ডার্ক করিডোর তৈরি করা হয়, যাতে অশনাক্তকৃতভাবে সেগুলো উড়ে যেতে পারে।
পাকিস্তানি আকাশসীমায় পৌঁছনোর পর বিমানগুলো একটি মাত্র ঝাঁকে পরিণত হলো এবং মনে হলো যেন সেগুলো বাহওয়ালপুরে যাচ্ছে। জেইএমের সদর দফতরে হামলা হতে যাচ্ছে ধরে নিয়ে ভারতীয় বিমানকে বাধা দিতে বাহওয়ালপুরে গেল পাকিস্তানের জঙ্গিবিমানগুলো। এ দিকে এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে নিচু দিয়ে ওড়া মিরেজগুলো চলল বালাকোটের দিকে। পাকিস্তানি রাডারে যখন তা ধরা পড়ল ততক্ষণে সেগুলো বাধা দিতে ওড়া পাকিস্তানি জঙ্গিবিমানগুলো থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে। মিরেজগুলো বিনা বাধায় বালাকোটে হামলা চালাল এবং বোমা ফেলে ফিরে এলো। প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হলো তা। সব কিছু অক্ষত ও নিরাপদ জেনে মোদি ভোর ৪টায় রুটিন যোগব্যায়ামে বসলেন। আর অজিত দোভাল ছাড়াও ধানোয়া নিজে সেনা ও নৌবাহিনী প্রধানকে এক চুল ক্ষতি ছাড়া বিমান অভিযান শতভাগ সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার কথা জানালেন।
বালাকোটে পাঁচটি স্পাইস বোমা ফেলা হয়। ইউসুফ আজহার যেখানে বাস করতেন সেখানে কোনো বোমা ফেলতে পারেনি বিমানগুলো।
২৬ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টায় ভারত পাকিস্তানে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলা চালানোর কথা স্বীকার করে। বলা হয়, বালাকোটে জেইএম শিবির গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে ও বহু জঙ্গি নিহত হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সরকারি সূত্রের বরাতে জানায় যে নিহত জঙ্গির সংখ্যা ২৫০ থেকে ৩০০। পাকিস্তান ভারতের দাবি প্রত্যাখ্যান করে। তারা বলে, বালাকোটের ওই স্থানটি ছিল পরিত্যক্ত। কেউ নিহত হয়নি। ভারতের বোমায় কিছু গাছ ধ্বংস হওয়া ছাড়া ক্ষতি হয়নি আর। কতজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে, ভারতের বিমানবাহিনী প্রধানের কাছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাজ আক্রমণ করা, ক’জন মারা গেছে তা গোনার কাজ আমাদের নয়, সরকারের।
বিবিসি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা এবং উপগ্রহ কর্তৃক তোলা ছবি যাচাই করে বিশেষজ্ঞরা বালাকোট শিবিরের কোনো ভবন ধ্বংস বা প্রাণহানির প্রমাণ পাননি। কিন্তু ভারত গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে এক ডজনেরও বেশি লাশ বয়ে নেয়া এবং ঘটনার পর সেখানে প্রায় ৩৫টি অ্যাম্বুলেন্স ছুটে যেতে দেখার কথা জানায়। তবে বালাকোটে নিহতের সংখ্যা বিষয়ে ভারত সরকারিভাবে কিছু বলেনি।
পাকিস্তান যাই বলুক আর না বলুক, সীমান্ত থেকে ৪০ মাইল গভীরে গিয়ে ভারতের বিমান হামলার ঘটনায় এ দিন দেশটিতে তোলপাড় অবস্থা চলছিল। জনগণের ক্ষোভের মুখে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারভেজ খটক সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল বাজোয়াসহ সেদিন দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পাকিস্তানের বিমানবাহিনী প্রস্তুতই ছিল। কিন্তু যে সময়ে এ হামলা চালানো হয় তখন ছিল অন্ধকার। ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কিছু জানতে না পারার কারণে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তবে তাদের ধাওয়া খেয়ে ভারতীয় জঙ্গিবিমানগুলো ফিরে যায় বলে জানান তিনি।
অন্য দিকে এ দিন জানানো হয় যে পাকিস্তান তাদের সুবিধামতো সময়ে ভারতের এ হামলার জবাব দেবে।
২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে পাকিস্তান জানায়, তারা ভারতের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। তাদের চারটি জঙ্গিবিমান জম্মু ও কাশ্মিরে এ হামলা চালায়। তারপরই তারা সে তোলপাড় করা খবরটি দেয় যে পাকিস্তান ভারতের দু’টি জঙ্গিবিমান ধ্বংস করেছে। একটি ধ্বংস হয়েছে কাশ্মিরে ফিরে গিয়ে, অন্যটি পাকিস্তানে। তারা দু’জন ভারতীয় পাইলটকে আটক করেছে। কিছুক্ষণ পর বলা হয়, তারা একজন পাইলটকে আটক করেছে। তার নাম উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। কিন্তু সাথে সাথে ভারত এ দাবি নাকচ করে দেয়। তারা জানায়, তাদের কোনো বিমানের ক্ষতি হয়নি। এরপর অভিনন্দনের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর সুর পাল্টায় ভারত। নয়াদিল্লি স্বীকার করে, পাকিস্তানি জঙ্গিবিমানের সাথে ডগ ফাইটে তাদের একটি মিগ-২১ জঙ্গিবিমান নিখোঁজ হয়েছে। তারা দাবি করে তারা কাশ্মিরে পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ জঙ্গিবিমান গুলি করে নামিয়েছে। সেটার ধ্বংসাবশেষের ছবিও দেখানো হয়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে ছবিটি আর দেখানো হয়নি। এ দিকে স্বাধীন তদন্তকারী সংবাদ গ্রুপ বেলিংক্যাট নিশ্চিত করে যে, ভারত এফ-১৬এর যে ধ্বংসাবশেষ প্রদর্শন করেছে তা মিগ-২১ জঙ্গিবিমানের। পাকিস্তান এফ-১৬ ধ্বংসের দাবি নাকচ করে বলে, এ দিন তারা এ বিমান ব্যবহারই করেনি। তবে তারা তাদের কথিত দ্বিতীয় ভারতীয় জঙ্গিবিমান ধ্বংসের প্রমাণও দিতে পারেনি, যেটি কাশ্মিরে বিধ্বস্ত হয়েছে। অন্য দিকে বেলিংক্যাটের তথ্য সত্য হলে দ্বিতীয় ভারতীয় বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কথার সত্যতা মেলে।
যা হোক, এরপর তাদের কৌশলকে দ্বিমুখী করে ভারত। তারা আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী আটক পাইলটের মুক্তির জোর দাবি তোলে। সেই সাথে একটি এআইএম-১২০ ক্ষেপণাস্ত্রের ভাঙা অংশ দেখিয়ে জানায়, তারা যে পাকিস্তানের এফ-১৬ জঙ্গিবিমান ধ্বংস করেছে এটা তার প্রমাণ। কারণ, এ ক্ষেপণাস্ত্র শুধু পাকিস্তানের এফ-১৬ জঙ্গিবিমানেই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু পাকিস্তানি বিমানটি কোথায় ধ্বংস হলো, তার পাইলটের কী হলো তার কিছুই তারা জানাতে পারেনি। পরে ভারত জানায়, এফ-১৬ পাকিস্তানের অভ্যন্তরে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সে ছবি কেন সংগ্রহ করতে পারেনি, তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। কার্যত পাকিস্তানের বিমান ধ্বংস হয়েছে কি না তা নিশ্চিত নয়।
অন্য দিকে অঘোষিত যুদ্ধে আটক বন্দীকে যুদ্ধবন্দী আখ্যায়িত করে ভারত তার মুক্তির দাবি জোরদার করে। এ দিকে পাকিস্তান ভারতের সাথে শান্তি ও সুসম্পর্ক স্থাপনের আশা বা অন্য যেকোনো কারণে হোক, ঘটনার পরদিনই আকস্মিকভাবে আটক ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেয়ার কথা ঘোষণা করে। ১ মার্চ তাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২৭ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরে একটি ভারতীয় সামরিক হেলিকপ্টারও বিধ্বস্ত হয় ও এতে থাকা ছয়জন সৈন্য নিহত হন। ভারত জানায়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তাহলে এ দিন ভারতের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় দু’টি জঙ্গিবিমান ও একটি হেলিকপ্টার। একটি সীমিত সামরিক অভিযানে এ ক্ষতি কম নয়, বরং অনেক বেশি।
ভারত এখন পর্যন্ত পাকিস্তানি এফ-১৬ ধ্বংসের দাবিতে অটল রয়েছে। এমনকি আটক উইং কমান্ডার অভিনন্দনও একাধিকবার এফ-১৬ ধ্বংসের দাবি করেছেন। এ দিকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের এফ-১৬ বিমানবহর যাচাই করে দেখেছে যে কোনো বিমানই খোয়া যায়নি। অবশেষে পাকিস্তান বালাকোট হামলা ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর ১০ এপ্রিল ভারতীয় ও বিদেশী সাংবাদিকদের বালাকোটের কথিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দেখাতে নিয়ে যায়। তারা একটি বিরাট গর্ত দেখতে পান যা বোমা হামলায় হয়েছে মনে হয়। তবে কোনো ধ্বংস হওয়া ভবন দেখতে পাননি। তাদের আশপাশের এলাকাও দেখানো হয়। এ ঘটনায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে এ কারণে যে ভারতীয় বিমান হামলায় কোনো ক্ষতি যদি নাই হবে, তাহলে পাকিস্তান এত দিন সেখানে সাংবাদিকদের যেতে দেয়নি কেন এবং নিজেদের ব্যবস্থাপনায়ই বা তাদের নিয়ে গেল কেন?
ভারতের বিরোধী দলগুলো বালাকোট হামলার ক্ষয়ক্ষতির প্রমাণ দেখানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি তুলেছিল। কিন্তু ভারত সরকার বিভিন্ন কারণের কথা বলে কোনো প্রমাণ প্রদর্শন করেনি।
দুই পক্ষের দাবি-পাল্টা দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ভারত বালাকোটে হামলা চালিয়েছে। আর পাকিস্তান যতই সতর্ক থাকার কথা বলুক, তারা সে হামলা রুখতে পারেনি। এও নিরেট সত্য যে, ভারত কমপক্ষে একটি বিমান হারিয়েছে। আর পাকিস্তানের হাতে ভারতের পাইলট আটক হওয়ার ঘটনা ভারতের জনগণের কাছে আনন্দজনক হয়নি। যা হোক, বালাকোট হামলা চালিয়ে ভারত পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর পাকিস্তানের সন্ত্রাসীদের মদদ দেয়া অব্যাহত রাখার বিষয় বরদাশত করবে না। এখন ইতিহাসই বলবে, বালাকোটে জঙ্গিবিমান হামলা চালিয়ে ভারত পাকিস্তানের কাছ থেকে যা পেতে চাইছে তা পাবে কি না।
ইন্ডিয়াটুডে, দি ডন ও ইন্টারনেট অবলম্বনে