প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে
- ছবি : সংগ্রহ
প্রকৃতিকে উপভোগ করা, বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সাথে আত্মিক বন্ধন গড়ে তোলা ও তাদের সমাজ-সংস্কৃতি জীবন যাত্রার সাথে পরিচিত হওয়ার আগ্রহ আমরা কিশোর বয়স থেকেই। সে আগ্রহ সার্থক করতে এ যাবৎ বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করেছি। উপভোগ করেছি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, এবং মানুষের বিচিত্র জীবনপ্রণালী। সাহিত্য সংগঠন পরিচালনা ও সাহিত্য চর্চার সুবাদে দেশ-বিদেশের অনেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সাথে আমাদের বিনি সুতোর বন্ধন গড়ে ওঠেছে। পত্র সাহিত্য ও মোবাইলের মাধ্যমে আন্তরিক আলোচনায় একে অন্যের মন মানসিকতা সম্পর্কে অনেকটা জ্ঞাত হতে পারি। সাক্ষাৎ পরিচয় না হলেও অনেকের সাথেই আত্মিক বন্ধন গড়ে ওঠে। পরবর্তীকালে সাক্ষাতে নামের পরিচয়েই মুহূর্তে মিশে যাই একে অন্যের প্রাণে। এভাবে বহু অঞ্চলে গিয়ে প্রাণের টানে মনের মানুষ পেয়ে মনের আনন্দে কাটিয়েছি অচেনা-অজানা জায়গায় নতুন আনন্দে জীবনের কয়টি দিন।
আমাদের সংগঠনের জীবন সদস্য বহু গ্রন্থ প্রণেতা শাহ্ মো: আবু রায়হান আল বেরুনী ভাই বর্তমানে বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সাহিত্যের চোখ দিয়ে পাহাড় ঝর্ণাধারা বেষ্টিত প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপলব্ধি করে বেশকিছুদিন যাবৎ আমাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছিলেন রুমা ভ্রমণের। তাঁর আমন্ত্রণে বারবারই ব্যক্ত হয়েছে ‘দার্জিলিং-নেপালের সৌন্দর্য এই রুমাতে পাবেন। একবার আসুন সত্যি ভালো লাগবে আপনার। না দেখলে বিশ্বাস হবে না আমাদের বাংলাদেশে এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। আমি রুমায় থাকতে একবার কয়েকজন মিলে চলে আসুন।’
তাঁর আন্তরিক আমন্ত্রণে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নিলাম বান্দরবান জেলাসহ রুমা ভ্রমণের। কিন্তু নভেম্বর-ডিসেম্বর ’০৫ মাসে বাংলা ভাই ও তার দোসরদের সিরিজ বোমা হামলাসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার নানাবিধ ঘটনায় সহসাথীরা মানসিকভাবে ভীত হয়ে যেতে রাজি হলো না। কয়েকবার তারিখ জানিয়েও যেতে না পারায় বেশ আশাহত হলাম। কিন্তু আমার ছোটবেলা থেকে মুদ্রাদোষ কিছু করব কিংবা কোথাও যাবো সিদ্ধান্ত নিলে যত সমস্যাই হোক সেটা সফল না করা পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি তো পাইই না, অস্বস্তিতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। ইতোমধ্যে কক্সবাজার থেকে আরেকজন আত্মীয় বিজন বিশ্বাস মোবাইলে তার বাড়িতেও যাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন। কয়েকদিন তার সাথে আন্তরিকভাবে কথা বলে বেশ প্রীত হলাম। তিনি আমার জন্য মিঠা জলের মাছ ( মাগুর, কৈ, ইলিশ, চিংড়ি..) সংগ্রহ করে ফ্রিজে রেখে মোবাইল করলেন শীঘ্রই যাওয়ার জন্য। মনটা এবারে আরো উৎসুক হয়ে উঠলো। বিগত প্রায় ২০ বছর আগে শিক্ষা সফরে বন্ধুদের সাথে চিটাগাং, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, টেকনাফসহ পাশের অঞ্চলগুলোতে বেড়িয়ে এসেছি। পরবর্তীতে ওই অঞ্চলে আর যাওয়া হয়নি। অন্যান্য অঞ্চলের প্রতি আগ্রহটা বেশি ছিল। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশেও গিয়েছি প্রাকৃতিক সৌদর্য উপভোগে।
ডিসেম্বর মাসে সন্তানদের স্কুল বন্ধ, ব্যবসায়িক চাপও কম তবুও সঙ্গীদের সিদ্ধান্তহীনতায় যেতে না পারায় অবশেষে ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে’ এ আদর্শকে পাথেয় করে ২৫ জানুয়ারি’০৬ বুধবার দুপুর ৩টার পাবনা এক্সপ্রেসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিলাম। রাত ৯টার দিকে গাবতলী পৌঁছে এস আলম কাউন্টারে গিয়ে রাত ১০-৩০ মিনিটের কোচে কক্সবাজার যাওয়ার টিকিট কিনলাম। রাতের হালকা খাবার খেয়ে বাসে উঠলাম। পরিচিত সফর সঙ্গীও জুটে গেল। বেশ আনন্দে গল্প করতে করতে দূর পাল্লার যাত্রা চলল। কুমিল্লা ক্যান্টিনে বাস থামলে চা নাস্তা খেয়ে আবার বাসে উঠলাম। রাতের অন্ধকার ও কুয়াশা ভেদ করে দ্রুত ছুটে চললো বাসটি। ভোর ৬টায় কক্সবাজার (চকোরিয়া) পৌঁছে ঠিকানা অনুযায়ী রিকশা নিয়ে পৌঁছুলাম সে বাড়িতে। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে ভিতরে নিয়ে গেলেন তিনি। ফ্রেস হয়ে নাস্তা খেয়ে ঘুম দিলাম। বেলা ১২টার দিকে পোশাক পড়ে ব্রিটিশ টোব্যাকো পরিচালিত দিশারী মৌলিক কম্পিউটার শিক্ষা কেন্দ্রে গেলাম। সেখানের সার্বিক পরিবেশ ও শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হলাম। তাদের নিয়ে ছবি উঠলাম, শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম। মৌলিক শব্দটির যথার্থতা খুঁজে পেলাম। সন্ধ্যায় বেরিয়ে চকোরিয়া প্রেস ক্লাব ও স্থানীয় পত্রিকাসহ ব্যুরো অফিসগুলোর সাংবাদিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় করে রাতে বাসায় ফিরলাম।
পরদিন শুক্রবার দুপুরে খাবার খেয়ে সবাই মিলে বের হলাম ‘বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক’ দর্শনে। মাইক্রোতে আমরা চারজন পৌঁছুলাম পার্কে বেলা চারটে নাগাদ। সেখানে দেখি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস, মাইক্রো নিয়ে শিক্ষা সফর ও পিকনিকে অনেকেই এসেছেন। প্রচুর জনসমাগম। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরলাম, বিভিন্ন জীবজন্তু দেখলাম, ছবি তুললাম, ক্যান্টিনে বসে চা-নাস্তা করলাম। বিরাট কাঠের সেতু অতিক্রম করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করলাম। তারপর আবার বাড়ির উদ্দেশে মাইক্রো নিয়ে ছুটলাম। চকোরিয়া এসে মনে হলো দুপুরে কথা দিয়েছিলাম দিশারী মৌলিক কম্পিউটার শিক্ষা কেন্দ্রের ছাত্রী দিনাকে তাদের বাড়িতে বেড়াতে যাব।
রিকশা নিয়ে সবাই মিলে বেশ খুঁজে দিনাদের বাড়িতে গেলাম। তাদের বাড়ির সবাই অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আমাদের বরণ করলেন ও বিভিন্ন রকমের ফল, পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন করলেন। তাদের আন্তরিক আতিথেয়তা সত্যিই স্মরণীয়। রাতে বাসায় ফিরে অনেক রাত পর্যন্ত গল্প করে খাবার সেরে ঘুমালাম।
পরদিন ছুটলাম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের উদ্দেশে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য পাহাড়, গাছপালা দেখতে দেখতে বেলা ১২টা নাগাদ সাগর পাড়ে পৌঁছে গেলাম। কিন্তু রৌদ্রের চমক অপরদিকে নীরব নিথর সমুদ্র দেখে তৃপ্তি পেলাম না। সমুদ্রের গর্জন, ঢেউ না থাকলে কি সমুদ্র মনে হয় বলুন তো?
সাগর পার থেকে উঠে এসে একটি অটো রিজার্ভ করে নিয়ে ছুটলাম হিমছড়ি’র উদ্দেশে। দু’পাশের সারিবদ্ধ ঝাউগাছ আর অপরূপ পাহাড়ি পরিবেশ দেখে মনটা ভরে উঠল। পূর্বে যদিও সমুদ্রের পাশ দিয়ে বালুর ওপর দিয়ে ফোর হুইল জিপ গাড়িগুলি চলতো এখন পর্যটনের উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন পিচঢালা পথ তৈরি হচ্ছে। সেই নির্মাণাধীন পথ দিয়েই আমরা চলছি। সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে এক সময় অটো থেমে গেল, পাশেই নজরে পড়ল হিমছড়ি পিকনিক স্পট লেখা সাইবোর্ড। অটো থেকে নামতেই কয়েকজন শিশু কিশোর এসে ঘিরে দাঁড়াল, ‘স্যার আমারে নেন, আমি আপনারে সব দেখামু, ছবি তওল দিমু।’ সবার একই কথা, তন্মধ্যে একটু বড় দেখে একজনকে নিয়ে জনপ্রতি দশ টাকা মূল্য দিয়ে টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করলাম।
প্রথমেই গেলাম ঝর্ণাধারার কাছে, কিন্তু সরুপথে বেগহীন ঝর্ণাধারা দেখে মনটা ভরল না। চারিদিকে মাথা উঁচু করে পাহাড় দেখলাম, কয়েকটি ছবি তুললাম। তারপর ঘুরে এসে সম্প্রতি নির্মিত সিঁড়ি ধরে উপরে উঠতে লাগলাম। কিছুদূর খাড়া সিঁড়ি বেয়ে উঠে হাঁপিয়ে উঠলাম। মাঝে মধ্যে দম নেয়ার জন্য কৃত্রিম ছাতাঘর তৈরি করা আছে। সেখানে বসারও ব্যবস্থা আছে। কয়েকবার এভাবে দম নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছুলাম। কাছের পানি ফুরিয়ে গিয়েছিল, তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পরলাম। তখন গাইড বলল- স্যার ওই রেস্টহাউসের ক্যান্টিনে পানি, ঠাণ্ডা পাবেন।
সেখানে গিয়ে ভাগ্যগুণে মাত্র একটি সেভেনআপ পেলাম ছোট বোতল। তাই নিয়ে দুজনে গলাটা ভিজিয়ে কয়েকটি ছবি তুলে গাছের ছায়ায় বসে প্রকৃতিকে উপভোগ করলাম। দূরে সমুদ্রের বিশাল ঢেউ আমাদের ডাকতে লাগল। আবার ধীরে ধীরে নেমে নিচে এসে ঠাণ্ডা পানি আর খিরা খেয়ে আবারো অটোতে চেপে ফিরে এলাম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ধারে। সেখানে গোধূলি লগনে সাগরের অপরূপ সৌন্দর্য প্রাণভরে উপভোগ করে সন্ধ্যার পর এস আলম গাড়িতে ফিরলাম চকোরিয়া।
মনটা পরে আছে বান্দরবানের সৌন্দর্য উপভোগের আশায়। কিন্তু যাঁর আমন্ত্রণে গেলাম সেই (ইউ এন ও, রুমা) শাহ্ মো: আবু রায়হান আল বেরুনী ভাইকে এখনো মোবাইলে পাইনি। নতুন জায়গা যোগাযোগ না করে যেতে কেমন লাগছে। হঠাৎ বুদ্ধি এলো ভাইতো ভাবীর মোবাইল নম্বরটা দিয়েছিল, দেখি তো সেখান থেকে কোনো যোগাযোগের মাধ্যম পাওয়া যায় কি না। রাতে ভাবীকে কল দিতেই তিনি জানালেন, হ্যাঁ, আপনার ভাইতো এখন রুমাতেই আছেন। আজ জেলা সদরে থাকার কথা। আগামীকাল মিটিং আছে। কাল সকালে আমার সাথে ফোনে কথা হবে, তখন আপনার কথা বলব। মনে একটু স্বস্তি নিয়ে ঘুমালাম। পরদিন সকালে বেলা ১১টার দিকে মোবাইল বাজতেই রিসিভ করে জানলাম।
‘ইউএনও ভাই বান্দরবান সার্কিট হাউসে আছেন। মিটিং সেরে দুপুরে ২-৩টা পর্যন্ত বিশ্রাম নেবেন। বান্দরবানে তো মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। ওই সময় ফোন করলে পাওয়া যাবে।’ নম্বরও দিলেন। আমি দুপুরের খাবার সেরে পাশেই টেলিফোন বুথে গিয়ে ওই নম্বরে ফোন দিতেই তিনি রিসিভ করলেন। পরিচিত কণ্ঠস্বর দীর্ঘদিন পরে হলেও উভয়ের চিনতে অসুবিধা হলো না। তিনি বললেন, আপনি আজ বিকালেই চলে আসুন। সার্কিট হাউসে আমি আপনাদের রুম রাখছি। রাতে এখানে থেকে সকালে আমার সাথে গাড়িতে একত্রে রুমা যাবো। আত্মীয়ের বাসায় ফিরে ব্যাগটা গুছিয়ে ৪টার পূর্বাণী কোচে বান্দরবানের উদ্দেশে যাত্রা করলাম। দুই ঘণ্টায় পৌঁছে গেলাম, পাহাড়ের ওপরে সার্কিট হাউসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের মাধ্যমে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই ইউএনও সাহেব পৌঁছলেন। শুভেচ্ছা বিনিময় করে রুমে গেলাম। রুমে ফ্রেস হয়ে গল্প করে বিশ্রাম নিলাম।
পরদিন সকালে নাস্তা সেরে যাত্রা করলাম কাক্সিক্ষত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। পাহাড়ি পথে এঁকে বেঁকে গাড়ি চলছে, কখনো উর্ধ্বমুখী কখনো নিম্নমুখি গতিতে। আমি অনুভব করছি স্মৃতির দার্জিলিং ভ্রমণের দিনগুলো। কিছুদূর যাওয়ার পর জানলাম আমরা ক্রেউক্রাডাং পাহাড়ে যাচ্ছি। সত্যি ধীরে ধীরে বড় বড় গাছ, পাহাড়গুলো ছোট হয়ে নিচে চলে যাচ্ছে, আর আমরা উপরে উঠছি। এভাবে একসময় পৌঁছলাম সেই সর্ব্বোচ্চ পাহাড়ে। চারিদিকে সৌন্দর্য উপভোগ করে মুগ্ধ হয়ে বললাম ‘আমার নিজের দেশে প্রকৃতির এত সৌন্দর্য থাকতেও আমরা পাসপোর্ট ভিসাসহ নানান খরচ ও পথের ক্লান্তি সয়ে ভারতে যাই কেন? পর্যটন কর্পোরেশন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, আর আবাসনের সুব্যবস্থা করলে, টেলিভিশনে সচিত্র প্রচার করলে মানুষ আকৃষ্ট হবেই। সমতল ভূমির মানুষদের জন্য বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কল্পনার রাজ্য।
পাহাড় থেকে নেমে আঁকাবাঁকা পথ ধরে এক সময় আমরা পৌঁছালাম রুমা উপজেলার সাঙ্গু নদীর তীরে। অর্ধ নির্মিত সেতু ক্ষমতা বদলের জটে আর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি জন্য উপজেলা সদরের সাথে পরিবহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। নৌকা নিয়ে নদী পার হয়ে ওপারে গিয়ে একটা পিকাপ ভ্যানে উপজেলা চত্বরে পৌঁছুলাম। অনুভব করলাম সাধারণ ট্যুরিস্ট হিসেবে বেড়াতে এলে কি ভোগান্তি পোহাতে হতো।
মুনলাইট রেস্ট হাউসে উঠে ফ্রেস হয়ে দুপুরে ইউএনও সাহেবের বাংলোতে খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে উপজেলা অফিসে সবার সাথে পরিচিত হলাম। বান্দরবান জেলা পরিষদের ডেস্ক ক্যালেন্ডার ও একটি মিনি ডায়েরি উপহার দিলেন আমাকে। শুভেচ্ছা- সৌহাদ্য বিনিময় ও চা পর্ব সেরে তারপর বের হলাম পাহাড়ি জীবনযাত্রা উপভোগ করতে। স্থানীয় একজন কর্মচারীকে দিলেন সঙ্গী হিসেবে। হাঁটতে হাঁটতে গেলাম রুমা বাজারে। রাস্তার দু’ধারে নজরে পড়ল অনেক বাড়ি, অফিস, দোকান, স্কুলসহ এনজিও অফিস। সঙ্গী স্থানীয় লোকটিকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিলাম সব। পাহাড়ি অনেক ছবি তুললাম। এক সময় পৌঁছুলাম রুমা বাজারে। আশ্চর্য হলাম, যে উপজেলা অফিস চত্বরে একটি চা, পান-এর দোকান নেই। নির্জন এলাকা মনে হয়েছিল। সেই রুমাতে বিশাল এলাকাজুড়ে বাজার! প্রায় সর্ব প্রকার সামগ্রী পাওয়া যায়! বেসরকারি রেষ্ট হাউজও রয়েছে। সন্ধ্যার পর ক্যান্টিনে সবাই বসে গল্প করে কোয়ার্টারে ফিরলাম। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম মুনলাইটে। পরদিন সকালেই ইউএনও সাহেব বাড়ি ফিরবেন, দুর্গম এলাকায় থাকতে সাহস পেলাম না, সেজন্য নাস্তা সেরে রেস্ট হাউজের ভাড়া মিটিয়ে ইউএনও’র গাড়িতে একই নিয়মে সবাই মিলে ফিরে এলাম।