বস

বস - সংগ্রহ
‘বস’ বললেই হয়তো আমাদের অনেকের চোখের সামনে ভাসে গুরুগম্ভীর এক চেহারা। এর উল্টাটাও আছে, এ ক্ষেত্রে বস হয়ে ওঠেন ‘নেতা’।
আজ এমনই একজন জন্মগতভাবে নেতৃত্বের গুণ পাওয়া কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কথা বলার সৌভাগ্য হয়েছে।
তিনি আর আট/দশটা প্রথাগত বসের মতো নন। অমায়িক ও দুর্লভ আচরণের আন্তরিক একজন বস। কর্মচারীর সাথে যার বন্ধুসুলভ আচরণ, মিষ্টভাষী ব্যবহার, কর্মকর্তাদের প্রতি মায়া-মমতা এবং যত্ন সহকারে তাদের খোঁজখবর নেওয়া মনোমুগ্ধকর একজন লিডার।
আর্দশ, একাগ্রতা, সততা, নিষ্ঠা, শ্রম, বলিষ্ঠতা, মেধা ও শৃঙ্খলা একজন মানুষকে যে কত উপরে নিয়ে যেতে পারে তার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত তিনি।
Simple living and high thinking’- সহজ সরল জীবনযাপন উচ্চ চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশ ওনার সবচেয়ে বড় গুণ। তিনি আমাদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব মেট্রোসেম ইস্পাতের জেনারেল ম্যানেজার (প্ল্যান্ট) খাজা ময়েন উদ্দিন স্যার।
ক্যারিয়ারে সব সময়ই সোনার টুকরা ‘বস’ পেয়েছেন, এমন চাকুরে খুঁজে পাওয়া বেশ দুর্লভ। তেমন রাজকপাল সবার হয় না।
বিখ্যাত আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ২০১৯ সালে একটি তথ্য প্রকাশ করেছিলো। যেখানে ৭৫ শতাংশ মার্কিন বলেছেন, তাদের কর্মজীবনে সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপ সৃষ্টি করে থাকেন বস বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। করপোরেট সংস্কৃতির পেশাদারির দিক বিবেচনায় নিলে, যুক্তরাষ্ট্রের স্থান তালিকার বেশ ওপরের দিকেই থাকবে। তা সেখানেই যদি অধস্তন কর্মীদের এই হাল হয়, তবে এ দেশে কেমন, একবার ভেবে দেখুন তো!
গ্যালাপের করা এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি দুই চাকুরের একজন ক্যারিয়ার-জীবনের কোনো না কোনো সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা বসের কাছ থেকে মুক্তি পেতে চাকরিই ছেড়ে দিয়েছেন।
২০১৯ সালে সুইডেনের তিন হাজার ১২২ জন পুরুষ কর্মীর ওপর চালানো গবেষণা চালিয়েছিলো, যেখানে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য যারা খারাপ বসের অধীনে কাজ করেন, অন্যদের তুলনায় তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। অসংবেদনশীল বসের চাপে থাকা কর্মীরা মানসিক চাপ, বিষণ্নতা ও উদ্বেগে ভুগে থাকেন। আবার ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে চাকরি ছেড়ে দিলেও রক্ষা নেই। গবেষকেরা বলছেন, আগের মানসিক চাপ থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে নাকি ২২ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে! (তথ্যসূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ, দ্য মুজে ও ফোর্বস)
উপরে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে কর্মস্থলে ভালো বস পাওয়া চ্যালেঞ্জিং, একজন ভালো বসের আন্ডারে কাজ করা মানে ক্যারিয়ার বিশাল কিছু, সঠিক দিক নির্দেশনা, গাইডলাইন,পরামর্শ এটা শুধু একজন ভালো বস/স্যারের দ্বারাই সম্ভব। জীবনে চলতে গেলে ভালো গাইডলাইনের প্রয়োজন, তেমনি ভালো একজন বসের খুবই প্রয়োজন।
রেজুমে বা জীবনবৃত্তান্ত লেখার জন্য সেবাদানকারী বিশ্বের অন্যতম প্রতিষ্ঠান টপরেজুমের ক্যারিয়ার এক্সপার্ট অ্যামান্ডা অগাস্টিন একবার বলেছিলেন, আদর্শ বস প্রতিদিন তাঁর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁর ইতিবাচক কথোপকথন কর্মীদের সুন্দরভাবে কাজ সম্পন্ন করতে অথবা আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করে। অগাস্টিনের 'বস' নিয়ে চিন্তাধারা আর আমাদের খাজা মাইন উদ্দিন স্যারের চিন্তাধারার এই জায়গায় দারুন মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
আমি যদি পৃথিবীর বুকে তোমাদের সঙ্গে নিয়ে সবকিছু করতে পারতাম'- দ্য গ্রেট গ্যাটসবি সিনেমার এই এই বিখ্যাত লাইনগুলো যেনো আমাদের খাজা ময়েন উদ্দিন স্যারের অভিব্যক্তি।
যিনি তার প্রশস্ত হৃদয় শুধুমাত্র তার অধীনস্থ কর্মচারীদের জন্য অফিসের বাউন্ডারির ভিতরেই সীমাবদ্ধ রাখেননি! এর পরিধি তিনি বাড়িয়েছেন বাউন্ডারির বাহির অব্দি।আমার একমাত্র ছেলে জায়ানের অসুস্থতা নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলাম তখন বস অভিভাবক হিসেবে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। কিংবা পারিবারিক প্রয়োজনে আপনার সহযোগিতার কখনোই প্রতিদান দেওয়ার মতো নয়।
পৃথিবীর সুন্দরতম জিনিসগুলো হাতে ছোঁয়া যায় না, চোখে দেখা যায় না, সেগুলো একমাত্র হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়- ভালবাসা, দয়া, আন্তরিকতা। আমি হৃদয় দিয়ে আপনার ভালবাসা, দয়া, আন্তরিকতা অনুভব করেছি।
এই কৃতজ্ঞতা বোধ ভাষায় প্রকাশ করা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি এর প্রতিদান দেওয়া সম্ভব নয়। দাম্ভিক হওয়া সহজ, বিনয়ী হতে হলে প্রয়োজন অসাধারণ আত্মসম্মান এবং মানসিক শক্তিমত্তার যার পরিচয় আপনি প্রতিনিয়ত দিয়ে চলেছেন।
ফ্যাশন মানে ব্যক্তিত্বের প্রকাশ যা আপনার রুচিশীল পোশাকে প্রকাশিত হয়েছে সব সময়ই। আশি থেকে দু’হাজার পরবর্তী সময়কার মিলেনিয়াম ফ্যাশন আমাদের শিখিয়েছে, কীভাবে নিজের স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি করতে হয়। শুধু ব্র্যান্ডের সুন্দর পোশাক গায়ে জড়ালেই ফ্যাশন সচেতন হওয়া যায় না। পরিপাটি সাজের জন্য প্রয়োজন নিজের ব্যক্তিত্ব আর অভিব্যক্তির সঠিক প্রকাশ এবং পোশাকের বিন্যাস। ব্যক্তিত্ব আর অভিব্যক্তির সঠিক প্রকাশ এবং পোশাকের বিন্যাস আমি আপনার মাধ্যমে দেখেছি।
আপনাকে নিয়ে লিখতে গেলেই শুধু প্রশংসায় হয়ে যায়! সেই প্রশংসা নিয়ে সাকসেস সিক্রেটস্ অব সেল্ফ মেইড মিলেনিয়ারস্ ' বইয়ের লেখক ব্রায়ান ট্রেসি বলেছেন, 'প্রশংসা হলো দক্ষ লোক গড়ার উত্তম হাতিয়ার কেননা এটাই একজনকে নিজের শক্তি সমন্ধে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারে।
কিংবা বিখ্যাত স্কটিশ দার্শনিক, ইতিহাসবিদ ডেভিড হিউমের মতে, মানুষের প্রশংসা যাকে দুর্বল করে, সে ভালো কাজ করতে পারে না।
স্যার আমাদের প্রশংসা আপনাকে যেন দুর্বল না করে আপনি আপনার শক্তি সমন্ধে আত্মবিশ্বাসী থাকুন সবসময়।
'শুভ জন্মদিন বস।' আপনার অধীনস্থ কর্মচারী হিসেবে প্রাণভরে দোয়া কামনা করছি আপনার জন্য। শুভ হোক আপনার আগামীর পথচলা। আপনি শক্তিমান হয়ে উঠুন। সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতা দিয়ে মেট্টোসিম ইস্পাতকে আরো উন্নত ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, এটাই প্রত্যাশা আজকের দিনে।