তুরস্ক আর ভারত : আপন বলয়ে শুধুই একা
এরদোগান ও মোদি - ছবি : সংগ্রহ
তুরস্ক ও ভারত দুয়ের মধ্যে অনেক অমিল অনেক। কিন্তু ইতিহাস, সংস্কৃতি, সামাজিকতা, ধর্ম দর্শন ভিন্নতার মধ্যে ও এই দেশের মধ্যে ও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সাদৃশ্য বিদ্যমান ।
দুটি রাষ্ট্রই নিজের আপন বলয়ে একা, শুধুই একা। এটাই আজকের বাস্তবতা, এটাই তাদের সবচেয়ে ট্রাজেডি সাদৃশ্য :
যেমন :
* তুরস্ক ও ভারত দুটি দেশই সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র এবং সার্বিকভাবে চর্চা করে। দুটি দেশই সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষরাষ্ট্র হলেও রাষ্ট্র দুটিই বর্তমানে ধর্মীয় ভাবধারায় পরিচালিত হচ্ছে।
* শক্তিশালী রাষ্ট্র দুটির ঐতিহাসিকভাবে বৈশ্বিক অভিজাত প্রভাবশালী রাষ্ট্র শক্তি হিসেবে পরিগণিত হতো এবং বর্তমানেও হয়ে আছে ।
* উভয় রাষ্ট্রেই বর্তমানে আছেন দুজন ক্যারিশমাটিক এবং স্মার্ট নেতা। উভয়ই বৈশ্বিক রাজনীতির ইনফর্ম স্টার খেলোয়াড় এবং তারা দশকব্যাপী ক্ষমতাসীন।
* নেতা দুজন উভয়ই নৈতিক, অর্থনৈতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক সার্বিক একটা বিপ্লব, সংস্কার ও পরিবর্তন সাধনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ আবহের মধ্যে ও নিজেদের ধার্মিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত হচ্ছেন।
* বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক মাঠে তারা নিজ রাজনৈতিক মেরুতে নিজদের পক্ষে যথেষ্ট পরিমাণ বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে পারছেন না। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাদের নিজ মেরুর পক্ষের সাথে দর্শন, নৈতিকতা, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, সামাজিক, সামরিক ও রাজনৈতিকভাবে মতৈক্য প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না। যার প্রেক্ষাপটে রচিত হচ্ছে এক বিশাল দূরত্ব ।
ন্যাটো ও তুরস্ক
ন্যাটো (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গ্যানাইজেশন) একটি সামরিক সহযোগিতার জোট। মূলত যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি, যে চুক্তির আওতায় জোটভুক্ত দেশগুলো পারস্পরিক রাজনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। উল্লেখযোগ্য যে ন্যাটো হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক সংগঠন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালের এপ্রিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং আরো আটটি ইউরোপীয় দেশসহ ১২ প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসনের হাত থেকে পশ্চিম বার্লিন এবং ইউরোপের নিরাপত্তা বাস্তবায়ন করা এবং একে অপরকে রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে উত্তর আটলান্টিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।
তুরস্ক ন্যাটোর সভ্য পদ লাভ করে ১৯৫২ সালে কোরীয় যুদ্ধের কারণে। ন্যাটোয় যোগদানের পর থেকেই ন্যাটো জোটের সদস্য ৩০টি দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী হচ্ছে তুরস্কের।
তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অন্তরালগুলো
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ :
* প্রথমত যে বিষয়টি সামনে আসে হলো, তুরস্কের রাশিয়া থেকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ক্রয় করা। এই ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা কেনাকে কেন্দ্র করে আমেরিকা তুরস্কের উপর সামরিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান তৈরির প্রকল্প থেকে বের করে দিয়েছে। এখানে আমেরিকার যুক্তি হলো, তুরস্ক এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনে আসলে ন্যাটো সামরিক জোটকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ওয়াশিংটনের একটাই দাবি এই অস্ত্র রাশিয়ার কাছে ফেরত দেয়া অথবা কখনই ব্যবহার করবে না মর্মে লিখিত চুক্তি করবে।
* অন্যদিকে, তুরস্কের চীন এবং রাশিয়ার প্রতি বেশি ঝুঁকে যাওয়া নিয়েও আমেরিকার অভিযোগের শেষ নেই। এ ক্ষেত্রে তুরস্কের যুক্তি হচ্ছে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত কয়েক বছরে আঙ্কারার বিরুদ্ধে যে শত্রুতামূলক আচরণ করছে সে কারণেই তুরস্ক বাধ্য হচ্ছে এই পূর্ব বলয়ে ঝুঁকতে।
* তুরস্কের এজিয়ান সাগর এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধান নিয়েও আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যথেষ্ট নাখোশ। এক্ষেত্রে চাপ, হুমকি-ধামকি দিয়ে তুরস্ককে অনুসন্ধান প্রচেষ্টা বিরত রাখার চেষ্টা করছে তারা।
* সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক, কারাবাখ এবং বলকান অঞ্চলে তুরস্কের প্রভাবকে ভালোভাবে নিচ্ছে না মার্কিনিরা। যদিও এসব এলাকায় তুরস্ক রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকার পক্ষেই কাজ করছে। কিন্তু তারপরেও তুরস্ককে মার্কিনিদের স্বার্থে কাজ করার জন্য আহ্বান করছেন বাইডেন প্রশাসন।
* ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার উপর অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু তুরস্ক তাতে কর্ণপাতই করেনি, বরঞ্চ তুরস্ক রাশিয়ার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক সহযোগী হিসেবে উঠেছে। তার উপর রাশিয়ার সাথে মিলে তুরস্কে জ্বালানি হাব প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়াধীন। বর্তমান সময়ে তুরস্ক রাশিয়ার বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু। যা মার্কিনিদের গাত্রদাহের কারণ হয়ে গেছে।
তুরস্কেরও অভিযোগ :
* তুরস্কে আমেরিকার মদদপুষ্ট একটি রক্তক্ষয়ী সামরিক অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়, যা তুরস্কের সরকার ও আপামর জনগণ এই সামরিক অভ্যুত্থানকে প্রতিহত করে। এ অভ্যুত্থানের মূল হোতা ছিলেন ফেতুল্লাহ গুলেন। এই মাষ্টারমাইন্ডকে আমেরিকা সামরিক এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো সার্বিক আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।
* তুরস্কের হাল্ক ব্যাংক নামের একটি সরকারি ব্যাংকের বিরুদ্ধে আমেরিকার আদালতে অনেকগুলো মামলা চলছে, যেগুলোতে বলা হয়েছে যে এ ব্যাংকটি আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করেছে। এই মামলা এখন রাজনৈতিক একটি মামলায় রূপ নিয়েছে।
* তুরস্ক এবং আমেরিকার সম্পর্কের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হলো সিরিয়াতে কুর্দি সশস্ত্র সংগঠনটিকে আমেরিকার প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র এবং সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া। এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলে একটি কুর্দি রাষ্ট্র গঠনের পায়তারা করছে তারা। যেটি তুরস্ক তার ভূখণ্ডের উপর সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছে। কারণ, তুরস্কের মতে সিরিয়াতে পিকেকে সন্ত্রাসী গ্রুপটি যত শক্তিশালী হবে। তারা তুরস্কের বিরুদ্ধে তত বেশি সন্ত্রাসী আক্রমণ চালাবে। এমনকি ওখানে নতুন একটি কুর্দি রাষ্ট্রের আবির্ভাব হলে তা তুরস্কের অখণ্ডতার প্রতি বিশাল হুমকি সৃষ্টি করবে।
* তাছাড়া তুরস্ক ইউরোপের এলিট ক্লাবের সভ্য হতে বড়ই খায়েশ, কিন্তু ইউরোপের এলিটরা সব সময় তাদেরকে নিয়ে একটি এবোয়েড টেন্ডেন্সি কাজ করে। তারা মনে করে তুরস্ক এখনো সেই 'ইউরোপের রুগ্ন শিল্প' অথবা মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। ইউরোপের এলিটরা ন্যাটো সম্মেলনে আশ্বাস দিলে ও এখন টালবাহানা শুরু করে দিছে। কিছু দিন আগে তুরস্ক বলেছে তারা ইউরোপ ইউনিয়নের সদস্য হবার শখ আর নেই।
* এখন আটলান্টিক পারের পুরনো বন্ধুদের সাথে তাদের আর রসায়ন যেন আর মিলছ না। ন্যাটোর সংসারে তুরস্ক যেন একঘরে হয়ে পরেছে। অন্যদিকে পূর্ব গোলার্ধের সাথে তাদের গলাগলি ভাব প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে। তুরস্ক কিন্তু ন্যাটোর মধ্যেই আছে।
জোটনিরপেক্ষ-সমাজতান্ত্রিক ও ভারত
১৯৬১ সালে গঠিত হয় জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন বা নন অ্যালায়েন্ড মুভমেন্ট বা ন্যাম। এটি একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্নায়ুযুদ্ধকালীন পুঁজিবাদী দেশগুলোর জোট ন্যাটো এবং সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর জোট ওয়ারশ প্যাক্ট থেকে নিরপেক্ষ হিসেবে আন্দোলনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়, যার নেতৃত্বে ছিল ভারত, যুগোস্লাভিয়ার, মিসর, ঘানা আর ইন্দোনেশিয়া। এরা মূলত সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় প্রভাবিত। কিন্তু তারা ওয়ারশ প্যাক্ট থেকে নিজেদের সরিয়ে এই জোট সৃষ্টি করে। তবে এই জোটের অনেক রাষ্ট্রের সাথে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে নীতিগতভাবে সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল।
এছাড়া ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান অভ্যুদয়-পরবর্তী মেরুকরণের অভিযোজনে ভারত সোভিয়েতপন্থী আর পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রপন্থী হিসাবে পরিচিত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পক্ষে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর প্রেক্ষাপটে সেভিয়েত রাশিয়া পর্যবেক্ষক নৌবাহিনী পাঠায়। সাম্প্রতিক ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত রাশিয়াকে তাদের ঐতিহাসিক বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে। তাছাড়া হালে ও ভারত রাষ্ট্রটি রাশিয়া নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জোট যেমন : ব্রিকস, সাংহাই কো-অপারেশন ওর্গানেজিশন ও অন্যান্য জোটে অন্তর্ভুক্ত হয়।
মেরু নেতৃত্ব
এ মেরু পক্ষের সমন্বিত নেতৃত্ব মূলত রাশিয়া ও চীন। এ জোটে রাশিয়া মূলত সামরিক নেতৃত্বে আর অর্থনৈতিক নেতৃত্ব আছে চীন।
* 'কারো আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলানো নয় অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব'- নীতি নিয়ে চীন সারা বিশ্বে তার অর্থনৈতিক জাল বিছিয়ে আছে। এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার রাষ্ট্রগুলো চীনের অর্থ-জালে আত্মসমর্পণ করে যাচ্ছে একের পর এক। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের এক শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদার। আধুনা সমাসাময়িককালে ডলারকে চ্যালেঞ্জ করার সফল প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউয়ান।
* অর্থনৈতিক প্রভাবালয় ছাড়া ও বৈশ্বিক রাজনীতি ও কূটনীতিতে ও চীন বেশ সাফল্যের স্বাক্ষর দেখাচ্ছে। এশিয়া, আফ্রিকা লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলের পর তাদের মধ্যপ্রাচ্য বিজয় ছিল তার অনিস্বীকার্য সাফল্য। তাদের মধ্যস্থতায় মধ্য প্রাচ্যের ঐতিহাসিক বৈরী দুই রাষ্ট্র সৌদি আরব আর ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সখ্য স্থাপন ছিল নজিরবিহীন সাফল্য।
* ভারত আবার দক্ষিণ এশিয়া ও আশেপাশের আঞ্চলিক নেতৃত্বের অংশীদার। আঞ্চলিক বিভিন্ন রাষ্ট্রগুলো তার প্রত্যক্ষ প্রভাবাধীন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তার বংশোদ্ভূত অভিবাসীরা সারা বিশ্বময় প্রভাব বিস্তার করে আছেন। বিভিন্ন প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোকে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। এছাড়া বিশ্বের লোক সংখ্যায় চীনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত। যার কারণে তারা বিশ্ববাজারে এক বিশাল প্রভাব বিস্তার করে আছে।
দ্বন্দ্ব ও বিভেদ
ভারত আর চীন দ্বন্দ্বই হলো এই মেরুর মূল সমস্যা। এগুলো হলো
* ভারত চীনের মূল সঙ্কট হচ্ছে আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন রাষ্ট্রগুলো নিয়ে ভারত তাদের আধিপত্যকে নিজের অধিকার মনে করে থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে চীন এই রাষ্ট্রগুলোর উপর তার আধিপত্য বিস্তার মনোনিবেশ করে। তার উপর ভারতের জন্ম শত্রু পাকিস্তানের সাথে অঙ্গাঅঙ্গী বন্ধুত্ব তার চক্ষুশূল।
* ভারত চীন সীমানা সঙ্কট এক বিশাল সমস্যা। চীন ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক সীমান্ত বিরোধের দ্বারা চিহ্নিত হয়েছে, যার ফলস্বরূপ তিনটি সামরিক দ্বন্দ্ব- ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধ, ১৯৬৭ সালে চোলার ঘটনা এবং ১৯৮৭ সালের চীন-ভারত সংঘাত। ২০১৩ সালের গোড়ার দিকে, বিতর্কিত চীন-ভুটান সীমান্তে ডোকলাম মালভূমিতে দুটি দেশ সংঘর্ষ করেছিল। সমসাময়িক ২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় ও চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের প্রায় আড়াই বছর পর আবারো ২০২২ ডিসেম্বরে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সীমান্তে সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষই মেরুর মেরুদণ্ডই সঙ্কটে পড়েছে।
* অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিরোধ এই প্রতিবেশীদের প্রতিযোগীতা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বৈরিতায় রূপ নিয়েছে।
* চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে ভারত-চীন পরস্পর বিপরীতে অবস্থান করছে। সদ্য ভারতে অনুষ্ঠিত বেল্ট ও রোড ইনশিয়েটিভের বিপরীতে ঘোষণা করে এই নতুন করিডোর, যার মাধ্যমে ভারত, পশ্চিম এশিয়া তথা মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপকে যুক্ত করা হবে রেল ও সমুদ্রপথে। এই অনুচুক্তি সই করার কালে উচ্ছ্বাসের সাথে ভারত বলে, এটি এক ‘ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব’।
* সর্বশেষ ব্রিক্স সম্মেলনে চীনের অপেক্ষায় ভারতের গুরুত্ব অনেক কম ছিল বলে অনেকেই বলে ছিল। ভারতের মত উপেক্ষা করে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা ছিল অপমানজনক।
* আর রাশিয়া চীন থেকে ভারত থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কোনো যুক্তি নেই। তাছাড়া ন্যাটো প্লাস (জাপান, দ. কোরীয়া, অষ্ট্রেলিয়া ও ভারত) নামে নতুন জোট করার চিন্তা-ভাবনা করছে বলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুঞ্জন আছে। তার উপর ভারতের সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ভক্তি, ভালোবাসা তাদের উপর আস্থা ও কমে এসেছে।