বাচ্চাকে নিয়ে বিমান ভ্রমণের টিপস
বাচ্চাকে নিয়ে বিমান ভ্রমণের টিপস - ছবি : সংগ্রহ
বিমান যাত্রার লম্বা সময় বাচ্চা সামলানোর মতো কাজ কিছুটা কঠিন হওয়ায় শিশু নিয়ে বিমান ভ্রমণ করতে অনেক মা-বাবাই নিরুৎসাহিত হন।
তবে কিছু টিপস মেনে চললে বাচ্চা নিয়ে বিমান ভ্রমণ হতে পারে আরো আনন্দদায়ক হতে পারে।
দুই বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য সাধারণত আলাদা সিট থাকে না। বাচ্চা বাবা বা মায়ের কোলে বসে যেতে পারে।
তবে অল্প কিছু টাকা দেয়ার মাধ্যমে পাওয়া যায় ব্যাসিনেটের সুবিধা। এ ক্ষেত্রে আগে থেকে অনলাইন বা ট্রাভেল এজেন্টর মাধ্যমে ব্যাসিনেট বুকিং দিতে হবে।
তবে কেউ চাইলে আলাদা সিট বুকিং করতে পারেন। সেক্ষেত্র টিকেটের জন্য ফুল পেমেন্ট দিতে হয়।
কম বয়সী বাচ্চারা বিমান উড্ডয়ন বা অবতরণের সময় চিৎকার দিয়ে কান্না করতে পারে। গবেষণকদের দাবি, কানের অভ্যন্তরে বায়ুচাপ বেড়ে যায়, যার কারণে কানে অনেক ব্যথা হয়। তখন বাচ্চাকে শান্ত করার জন্য ব্রেষ্টফিডিং করানো ভালো অপশন।
বিমানে মায়েদের উঠার আগেই ব্রেস্টফিডিং কভার কেনা জরুরি। এই কভারগুলো বাচ্চা টান দিয়ে সরিয়ে ফেলতে পারে না। মায়েরা নিশ্চিন্তে ব্রেস্টফিড করাতে পারেন।
বিমানে বাচ্চাদের আর একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হলো ডায়াপার পাল্টানো। তবে এক্ষেত্রে চিন্তার কিছু নেই। বিমানের বাথরুমে বাচ্চাদের ডায়াপার পাল্টানোর চ্যাইঞ্জিং স্টেশন থাকে। কোনো কারণে ডায়াপার শেষ হয়ে গেলে বিমানবালাদের বললে পাওয়া যায়।
তাছাড়া একা ট্রাভেল করলে, বাচ্চাকে কেউ দেখার না থাকলে, বাথরুমে যাওয়ার সময় কেবিন ক্রুদের সাহায্য নেয়া যায়।
নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বাচ্চা নিয়ে বসার সময় ছোট এক্সট্রা সিট বেল্ট দেয় কেবিন ক্রু। এর মাধ্যমে বাচ্চা সামনের দিকে ঝুঁকে গিয়ে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বিমান টেক অন-অফের সময় নিরাপদে থাকে বাচ্চা। দুর্যোগে ইনফেন্ট সিট বেল্ট থাকা খুব জরুরি। মূলত বাচ্চার সিকিউরিটির জন্যই এটা দরকার।
ইনফ্যান্ট লাইফ জ্যাকেট শুরুতেই সিটের নিচে রেখে যায় কেবিনক্রু। যেকোনো জরুরি অবস্থায় অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার থেকে লাইফ জ্যাকেট পরার বিষয়টি আগে থেকেই নিশ্চিত হতে হয়।
বড় বাচ্চারা যেন নিজেরাই সিট বেল্ট পরে থাকে সে ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া প্রয়োজন।
বিমানে খালি পানির বোতল নিয়ে ঢুকতে হয়।
সিকিউরিটি চেকিংয়ের পর ওই বোতলে নিকটবর্তী ওয়াটার ফাউন্টেন থেকে খাবার পানি নিয়ে নিতে হয়। অথবা প্লেন উঠার পর কেবিন ক্রুকে বলে বোতলে পানি নিয়ে রাখতে হয়। লম্বা ফ্লাইটে ঘন ঘন পানির পিপাসা ধরে।
ছয় মাস থেকে বেশি বয়সের বাচ্চাদের জন্য পছন্দের স্ন্যাকস সাথে রাখতে পারা যায়। বাচ্চার কান্নার সময় দিলে তারা শান্ত থাকে। লিকুইড ছোট দুধের কৌটাও সাথে রাখা প্রয়োজন। প্রয়োজনে কেবিন ক্রুদের সাহায্য নেয়া যায়।
প্পানি, জুস, হালকা স্ন্যাক্স আপনার আর বাচ্চাদের জন্য চেয়ে নিতে পারেন কেবিন ক্রু দের কাছ থেকে। লিকুইড ছোট দুধের কৌটাও চাইতে পারেন দরকারে। খাবার গরম করার ব্যবস্থা থাকে প্লেনে। কেবিন ক্রুদের বললে ওরা করে দেবে।
মোটকথা যেকোনো প্রয়োজনে চুপ করে না থেকে কেবিন ক্রু-দের সাহায্য চাইবেন। যাত্রাপথে সহযাত্রীরাও সচরাচর সাহায্য পরায়ণ হয়।
বাচ্চাকে শান্ত রাখার আর একটি সহজ উপায় হলো ঘুম পাড়িয়ে রাখা। যতক্ষণ জেগে থাকবে, ততক্ষণ খাবার কিংবা খেলনা দিয়ে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। একটু সতর্ক হলেই হতে পারে বাচ্চা নিয়ে সুখকর, স্মরণীয় বিমান ভ্রমণ।
লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়