কোথাও কেউ নেই
কোথাও কেউ নেই - ছবি : সংগ্রহ
পূর্ব এবং পশ্চিম বার্লিনের প্রাচীর যেদিন ভেঙ্গেছিল,
পুরো ইউরোপ নতুন আশার স্বপ্ন দেখেছিল,
দেখেছিল গণতন্ত্রের বাতিঘরে নতুন আলো,
ভেবেছিল এ আলো আজীবন জ্বলবে মনের আনন্দে,
প্রায় দুই যুগ পরে সে আলো নিভে গেলো,
মাত্র একজন স্বৈরাচারীর কারণে সমস্ত আশা হঠাৎ হতাশায় পরিপূর্ণ হয়ে গেল।
কিন্তু কেন এমন হলো?
গোটা পৃথিবীর মানুষের কি কিছুই করার ছিল না?
তারা কি প্রতিবাদ করতে পারত না?
পারবে কী করে, তারা তো নিজেরাই এভাবে শাসন এবং শোষণ করে যুগে যুগে পৃথিবীর বুক চিরে ভূখণ্ড তৈরি করেছে।
একটা মাত্র পৃথিবী, অথচ তাকে ভেঙ্গে চুরে টুকরো টুকরো করা হয়েছে।
আমরা বলি মানুষ মানুষের জন্য, কিন্তু এসব শুধু কথার কথা,
আমরা বলি ধনী আর গরিবে ভেদাভেদ নাই, কিন্তু এসব শুধু কথার কথা,
আমরা বলি সাদা-কালো সবাই সমান, কিন্তু এসব শুধু মুখের কথা।
আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান,
আমরা এশিয়ান, ইউরোপিয়ান, আমেরিকান,
আমরা মন্ত্রী, রাজা, বাদশা, গরিব, ফকির, কিষাণ।
কারণ ওইযে বলেছি, মাটির পৃথিবী সেতো একটা, কিন্তু তাকে ভেঙ্গে চুরে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে।
ঠিক তেমনি ভাবে মানুষ জাতিও তার নৈতিকতার বিসর্জন দিয়ে নিজেকে ধ্বংস করে একা হয়েছে।
আজ আর কেউ পুতিনকে মানুষ বলে না,
সবাই তাকে স্বৈরাচারি জালেম বলে গালি দেয়,
কারণ সে জুলুম করে হরণ করছে একটি ভূখন্ড।
আমরা বলি আমরা, কিন্তু আমরা সত্যিকার্থে আমরা নই,
আমরা সেই আগের মতোই আমি, তুমি বা সে।
তাইতো আজ সেই পুতিন পৃথিবীটা ধ্বংস করছে।
আর আমি তুমি চেয়ে চেয়ে দেখছি।
আমার এবং তোমার কিছুই বলার নেই?
বলার থাকলেও কিছু করার নেই,
করার আছে, তবে ইচ্ছে নেই,
ইচ্ছে আছে হয়তো সামর্থ নেই।
সামর্থ আছে কিন্তু দরকার নেই,
দরকার আছে তবে সময় নেই।
সময় আছে তবে শক্তি নেই,
শক্তি আছে কিন্তু একতা নেই,
শুধু নেই আর নেই।
লেখক : সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন থেকে rahman.mridha@gmail.com