আমার পরানে যে গান বাজিছে তাহার তালটি শেখো

রহমান মৃধা | Aug 04, 2022 02:02 pm
আমার পরানে যে গান বাজিছে তাহার তালটি শেখো

আমার পরানে যে গান বাজিছে তাহার তালটি শেখো - ছবি : অন্য এক দিগন্ত

 

প্রায় চল্লিশ বছর বিদেশে কর্মজীবনে। তাও হাইটেকনোলোজির সঙ্গে জড়িত থেকে, একজন ইন্ডাস্ট্রি প্রভাইডার এবং পরিচালক হিসেবে কাজ করেছি, দিক নির্দেশনা দিয়েছি। তা সত্ত্বেও গার্ডেনিং এবং কৃষিকাজ আমাকে মুগ্ধ করে চলেছে, এটা আমার নিজের কাছেও অবাক লাগছে। কী যাদু আর কী মধু রয়েছে এই কৃষিকাজে যা অন্য কিছুতে নেই!

মনে হচ্ছে এত বছর যা কিছু করেছি, আর এখন যা করছি তার মধ্যে রয়েছে বিশাল পার্থক্য। কৃষিকাজের মধ্যে মজাই আলাদা। বীজ বপন এবং ফল রোপণ থেকে শুরু করে ফুল এবং ফল ফলানো এবং সেগুলোকে নিজ হাতে যত্ন করে উৎপাদন করা, তুলে খাওয়া- What a excellent and wonderful excitement! এ সত্যি এক চমৎকার অনুভূতি যা শুধু হৃদয় দিয়ে অনুভব করার মতো। যদিও পাইলট প্লান্ট প্রজেক্টে তারপর বাংলাদেশের শাকসব্জির চাষ সুইডেনের মতো শীতের দেশে এটাই চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করা এবং তাকে ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা, কখনও একা কখনো সহধর্মিনীর সাথে কখনো আবার সুইডিশদের সাথে; সে যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতি। সর্বোপরি সেই ছোটবেলা বাংলাদেশে থাকাকালীন সময় ভেজালমুক্ত শাকসব্জির স্বাদ নতুন করে ফিরে পাওয়া দূরপরবাসে, ভাবতেই গা শিউরে উঠার কথা, কিন্তু না ভাবনা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। লালশাক, পালনশাক, লাউয়ের আগা, লাউয়ের ডোগা, লাউয়ের পাতা এবং ধরছে শত শত লাউ —এ অনুভূতি শুধু অনুভবে হৃদয় বুঝবে, হয়তো বাংলাদেশে বসবাসরত অনেকের কাছে মনে হবে এটা একটা ঘটনা হলো? কিন্তু ভাবুন চল্লিশ বছর দেশের বাইরে, সবকিছু থেকে বঞ্চিত, হঠাৎ সেই অতীতের স্মৃতি সাথে সেই প্রিয় খাবারে অংশ বিশেষ নিজের হাতে উদপাদন করা এবং রান্না করে খাওয়া একটু ভাবুন প্লিজ!

মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি সুইডিশদের বাংলা খাবার খাওয়ানো শিখাচ্ছি বাংলা কায়দায়। সরাসরি হাত দিয়ে খাওয়া এটা যেমন নিজের দেশকে তুলে ধরার একটি চমৎকার সুযোগ তারপর নানা ধরনের সব্জি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করা বাইরের পরিবেশে বাংলা কায়দায় সুইডেনের মাটিতে, কী মনে হয়? আর কিছু না হোক যদি কখনো কোনো বাংলাদেশীর সাথে এদের নতুন পরিচয় হয় চাকরি থেকে শুরু করে অন্য কোনো দরকারে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে কৃপণতা করবে না এরা, যাদের সাথে এত বছর সময় কাটালাম। এরা মনে করবে আমাকে, আমার জন্মভূমিকে, জন্মভূমির অতিথিপরায়ণতাকে, সে বিশ্বাস আমার আছে।

আমি মনে করি আমরা যারা দেশের বাইরে আছি, আমরা যেন সব সময় নানাভাবে ভালো কাজের মধ্যদিয়ে আমাদের দেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরি এতে করে নতুন প্রজন্ম যখন উচ্চশিক্ষার্থে, চাকরির সুবাদে বিদেশে আসবে, তারা সব সময় একটি পজেটিভ ফিডব্যাক শুরু থেকে পাবে। আমি নিজেকে গর্বিত বাংলাদেশী মনে করি। কারণ আমি পরের দেশে এসে, পরকে আপন করে নিতে পেরেছি আমার কর্মের মধ্য দিয়ে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলি—ভালোবেসে,সখী, নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো- তোমার মনের মন্দিরে।

লেখক : সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us