বিশ্বের ধনীদের সারিতে ইলন মাস্কের নাম প্রথমে
বিশ্বের ধনীদের সারিতে ইলন মাস্কের নাম প্রথমে - ছবি : সংগ্রহ
সম্প্রতি স্টক মার্কেটে টেসলার উত্থান, অন্যদিকে অ্যামাজন শেয়ারের পতন ঘটার কারণে বিলিয়নেয়ারের শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে টেসলার প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও ইলন মাস্ক। নিউজ এজেন্সি ব্লুমবার্গের মতে টেসলার সিইও অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসকে পিছে ফেলে এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়েছেন।
যেহেতু ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন ওয়াল স্ট্রিটের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, অনেকেই ভাবছেন যে মহামারী-চালিত পুনঃবিক্রয় বৃদ্ধি শেষ হয়ে গেছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহে অ্যামাজনের শেয়ার ১০ শতাংশের বেশি কমেছে।
অন্যদিকে, বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারক টেসলার দাম সম্প্রতি ৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গের বিলিয়নেয়ার ইনডেক্স অনুসারে ইলন মাস্ক অতীতের বিশ্বের সবচেয়ে ধনী জেফ বেজোসকে হারিয়ে সেরাদের তালিকার প্রথম স্থানটি দখল করেছেন।
নিচে বিশ্বের সেরা ধনীদের নাম এবং তাদের বর্তমান প্রফিটের একটি তালিকা বিলিয়ন ডলারে দেয়া হলো।
১ এলন মাস্ক, ২২০.২
২ জেফ বেজোস ১৯২.০৯
৩ বার্নার্ড আর্নল্ট ১৪৬.১
৪ বিল গেটস ১৬৮.৩
৫ মার্ক জুকারবার্গ, ১৬৬.৫
৬ ল্যারি পেজ ১৬৩.৭
৭ সের্গেই ব্রিন ১৫৮.১
৮ স্টিভ বলমার ১২৯.৪
৯ ওয়ারেন বাফেট ১২২.০
গত দুই সপ্তাহ আগে ইলন মাস্ক টুইটার কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ খবরে গোটা বিশ্বে সাড়া পড়ে যায়। মাস্ক বলেন, টুইটার একটি সম্ভাবনাময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। গণতন্ত্রের মূল কথা হচ্ছে বাকস্বাধীনতা। টুইটার হচ্ছে এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে মানবতা ও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক করা হবে। বিশ্বে যে জিনাসটির বেশি অভাব সেটা হচ্ছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা।
ইলন মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্লাটফর্ম আরো মজবুত করবেন বলে কথা দিয়েছেন।
এদিকে সুইডেনে স্ট্রাম কুর্স নামের কট্টরপন্থী পার্টি মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পুড়িয়ে দিচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ জন পুলিশ ও ১৪ জন জনসাধারণ আহত হয়েছে। এছাড়া ২০টির বেশি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
স্ট্রাম কুর্স পার্টির নেতা রাসমুস পালুদান কোরআন পুড়িয়ে ফেলার পর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে কোরআন পুড়িয়ে দেওয়া ছবি পোস্ট করে রাসমুস পালুদান ঘোষনা দিয়েছে সে আরো কোরআন পোড়াবে এ সপ্তাহের শেষের দিকে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এক ভিডিওতে রাসমুস বলেছে, ‘ইসলাম এবং মুসলিমরা হচ্ছে শত্রু। এই পৃথিবীতে যদি একজন মুসলিমও না থাকে তাহলে খুব ভালো হবে, তাহলে আমরা আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাবো।' ডেনমার্কে বর্ণবাদী ভাষণের কারণে ২০১৯ সালে ১৪ দিনের জেল হয় রাসমুসের। স্ট্রাম কুর্স কট্টরপন্থী দল ডেনমার্কের ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পায়নি। বর্তমানে সে আগামী ২০২৩ সালের জুনে নির্বাচনে ফের লড়বে বলে পরিকল্পনা করছে।
বিশ্বয়নে করোনা মহামারি চলছে ঠিক তেমন একটি সময় ইউরোপে যুদ্ধ লেগেছে। পাশাপাশি বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করছেন ইলন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্লাটফর্মের জন্য এবং স্ট্রাম কুর্স নামের কট্টরপন্থী পার্টি মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পুড়িয়ে ইসলাম ধর্মের পতন ঘটাতে উঠেপড়ে লেগেছে।
আর ঠিক একই সময় বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শিশু-কিশোরেরাও মামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি কার্যকর হয়েছে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবরে। এর পর থেকে এ আইনে মামলা হয়েছে শুনেছি ৪ হাজার ৬৫৭টি। তবে সারা দেশে মোট কত শিশুর বিরুদ্ধে এ আইনে মামলা হয়েছে, সে তথ্য পাওয়া যায়নি। অনেকে ভয়ে কিছু করছে না বা বলছে না। অনেকে মামলা খেয়ে জেলের মধ্যে বসে আর্তনাদ করছে মুক্তির জন্য, কিন্তু মুক্তি নেই! এই হচ্ছে বর্তমান বিশ্বয়ন!
লেখক : সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com