হিট স্ট্রোক এড়াতে যেভাবে সাবধান হবেন
হিট স্ট্রোক এড়াতে যেভাবে সাবধান হবেন - প্রতীকী ছবি
অসহ্য গরম থেকে এখনই নিস্তার নেই। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ছুঁয়ে যাচ্ছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলছে অসহ্য তাপপ্রবাহ। বৃষ্টির দেখা কবে মিলবে, এখনই বলা মুশকিল। এমন অবস্থায় কোথাও বেরোনো তো দূর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর ছাড়া বাড়ির ভেতরেও টেকা দায় হয়ে উঠেছে। এতটা অসহনীয় গরমে শরীর খারাপ হতেই পারে। বাইরে বেরোলে তীব্র তাপপ্রবাহে অসুস্থবোধ করতে পারেন অনেকেই। হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে সুস্থ রাখবেন কী ভাবে, তা জেনে রাখা প্রয়োজন।
পানির অভাব, ডিহাইড্রেশন, রোদ থেকে শরীর শুকিয়ে যাওয়া এবং পেশিতে টান ধরা (হিট ক্র্যাম্প), একটুতেই হাঁপিয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত ক্লান্তি (হিট ফ্যাটিগ) এবং হিট স্ট্রোক হতে পারে খুব বেশি তাপপ্রবাহে। কোন উপসর্গগুলো দেখলে সাবধান হবে?
১। রোদে শরীর শুকিয়ে গেলে বা হিট ক্র্যাম্প হলে জ্ঞান হারাতে পারেন। পাশাপাশি ১০২ ডিগ্রির কাছাকাছি জ্বর আসতে পারে। শরীরে নানা জায়গা ফুলে যেতে পারে।
২। বারবার হাঁপিয়ে যাওয়া, খুব বেশি ঘাম হওয়া, বমি হওয়া বা বারবার বমি হওয়ার প্রবণতা তৈরি হওয়া বা মাথা ধরা রোদ থেকে অতিরিক্ত ক্লান্তি বা হিট ফ্যাটিগের লক্ষণ।
৩। হিট স্ট্রোক হলে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রির কাছাকাছি চলে যেতে পারে। জ্ঞান হারিয়ে যাওয়া এর অন্যতম লক্ষণ। পরিস্থিতির অবনতি হলে রোগী কোমাতেও চলে যেতে পারেন বা মৃত্যুও হতে পারে।
যেভাবে সুরক্ষিত রাখবেন নিজেকে?
১। পারলে দুপুর ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। ঘরের ভিতরেই থেকে কাজ করুন। এই সময়ে রোদের তাপ সবচেয়ে বেশি থাকে।
২। সারা দিন ধরে ঘন ঘন পানি খান। শরীর শুকিয়ে যেতে দেবেন না।
৩। হালকা সুতির পোশাক পরুন যাতে ঘাম হলে তাড়াতা়ড়ি শুকিয়ে যায়। ঢাকা জুতার বদলে খোলা চপ্পল পরুন।
৪। বাইরে বেরোলে রোদচশমা, ছাতা অবশ্যই সাথে নেবেন। সূর্যের আলো সরাসরি গায়ে লাগতে দেবেন না। গা ঢাকা পোশাক পরবেন।
৫। সর্বাধিক তাপমাত্রার সময়ে শরীরচর্চা বা অতিরিক্ত ক্লান্তিকর কোনো রকম কাজ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। পরিশ্রমের কাজ দুপুর ১২টার আগে সেরে ফেলুন।
৬। চা বা কফিও খুব বেশি খাবেন না।
৭। তার বদলে ওআরএস, লেবুর পানি, ঘোল বা লস্যি সারা দিনে খান। ছাতু বা বেলের শরবত বানিয়ে খেতে পারেন।
৮। খেয়াল রাখবেন যাতে সারা দিনের খাবারে বেশি প্রোটিন থাকে। বাসি খাবার খাবেন না।
৯। শিশুদের বন্ধ গাড়িতে রেখে কোথাও যাবেন না। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়বে তারা। খুব বেশিক্ষণ বন্ধ গাড়িতে থাকলে গরমে জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে।
১০। অসুস্থ লাগলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
১১। ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে পারেন দিনে ২ থেকে ৩ বার।
১২। ঘর ঠান্ডা রাখুন। যদি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র বাড়িতে না থাকে, ভারী পরদা দিয়ে ঘর ঠান্ডা রাখুন। ফ্যানের তলায় ঠান্ডা পানির বাটিতে কয়েক টুকরো বরফ রেখে দিতে পারেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা