শ্রীলঙ্কার মতো হবে ভারতের অবস্থা!
শ্রীলঙ্কার মতো হবে ভারতের অবস্থা! - প্রতীকী ছবি
কথা হলো, এখন চীনা খারাপ ঋণ গছিয়ে নাকি সবাইকে ‘ঋণের ফাঁদে’ ফেলে, বলে ‘প্রপাগান্ডার রাজা’, খোদ ভারতকেই আবার ‘ঋণের ফাঁদে’ ফেলল কে? এটা তো একেবারে নিজের ফাঁদে নিজেই পড়া!
শ্রীলঙ্কা গত কয়েক মাস ধরে হেডলাইনে, কারণ তার দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ প্রায় শূন্য, কোনো বৈদেশিক মুদ্রা সেখানে নেই। অবস্থা এতই করুণ যে, যেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন স্কুল-কলেজের স্টুডেন্টদের লিখার কাগজ যা শ্রীলঙ্কা আমদানি করে চলে তা এখন কেনার মতো বৈদেশিক মুদ্রাও হাতে নাই। ফলে স্কুল-কলেজ লাটে উঠেছে। এ ছাড়া আমদানি করা খাদ্যের বেলায় সমস্যা আরো ভয়াবহ। সব মিলিয়ে এতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে।
আর এই সুযোগেই কিছু প্রো-আমেরিকান ও ইন্ডিয়ান প্রপাগান্ডিস্ট মাঠে নেমে পড়েছে। তারা এটাকে চীনবিরোধী ক্যাম্পেইনের এক সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করতে চায়। এমনকি বাংলাদেশ নিয়েও- আমেরিকান ও ইন্ডিয়ান প্রপাগান্ডিস্ট যারা চীন বিরোধিতা করে থাকে তারাও কিছু আর্টিকেল বা ইউটিউব কনটেন্ট ছড়ানো শুরু করে দিয়েছে যেখানে কোনো ফ্যাক্টস ফিগার ছাড়াই তারা বলছে যে বাংলাদেশেও শ্রীলঙ্কা হবে? তবে এখানে এই লেখার গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এসব প্রপাগান্ডিস্টদের কবল থেকে প্রসঙ্গটাকে বাস্তবে আনা, যদিও তা ঠিক তাদের বিরোধিতা করে নয়। কারণ পক্ষ-বিপক্ষে প্রপাগান্ডা, যারা এ নিয়ে বাঁচতে চায়, কিছু কামাই করে চলতে চায় তারা তা করবেই। তাহলে ‘প্রসঙ্গটাকে বাস্তবে আনা’ বলতে ঠিক কী করতে চাই?
গত কয়েক বছর ধরে যারা এই ক্যাম্পেইন ‘মাস্টার’, তারা যে ভাষ্যের ওপর দাঁড়িয়ে প্রপাগান্ডা করেছে তাকে বলা যায় ঋণ-গ্রহণের বিরোধিতা। মানে হলো, কিছু প্রপাগান্ডা বক্তব্য যে, চীন ফাঁদে ফেলে কোনো দেশকে অতিরিক্ত ঋণ গছিয়ে দিয়ে থাকে। তাই এসব সমস্যা তৈরি হয়েছে।’ তাই এই প্রপাগান্ডাকে তারা শিরোনাম করে থাকে ‘ডেট ট্রাপ’ বা ‘ঋণের ফাঁদ’ বলে। এতে ভাবনাটা অনেকটা ছেলে ধরার গল্পের মতো যে, এই তোরা আর বাইরে যাস না, চীনের ‘ঋণের ফাঁদ’ পড়িস না!
বাস্তবে শ্রীলঙ্কায় হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্র বন্দর গড়া নিয়ে যে চীনের ঋণ নেয়ার এত কথা, সেই প্রকল্প পরে কার্যত শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে আর কোনো বোঝা হয়েই দাঁড়ায় নাই। কারণ, পরের প্রো-ইন্ডিয়ান সরকারের আমলেই ওই সরকার চীনের সাথে কথা বললে চীন এক সহজ সমাধান করেছিল। তা হলো, পুরা প্রকল্প এক চীনা প্রাইভেট কোম্পানি কিনে নিয়েছিল, তাতে চীনের ঋণ পরিশোধের দায়ও ওই পোর্ট ক্রেতা নয়া কোম্পানির, তাতে শ্রীলঙ্কা সরকারকে কোনো ঋণের দায় আর বইতে হবে না, পরিশোধ করতে হবে না। এমন কোনো দায় আর ছিল না। ফলে এই পোর্ট প্রকল্প থেকে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চাপ ফেলাজাতীয় কোনো প্রভাবের আর বালাই থাকেনি। অর্থাৎ পোর্ট প্রপার্টিটাই আর সরকারের থাকেনি। বরং যেকোনো প্রকল্পের মোট মূল্যের প্রায় ২৫-৩০ ভাগ মালিকানা হোস্ট দেশের এমনিতেই হয়ে যায় কোনো বিনিয়োগ করা ছাড়াই। কারণ প্রকল্পকে দেয়া জমি বা অবকাঠামো দেয়ারও একটা মূল্য ধরা থাকে বলে সরকার কোনো অর্থ খরচ না করেই তেমন প্রকল্পে ২৫-৩০ ভাগ মালিকানার ভাগ পেয়ে যায়। ফলে চীনা ওই প্রাইভেট কোম্পানি এখন হাম্বানটোটা পোর্টের বাকি অংশ, প্রায় ৭০ ভাগের মালিক। কিন্তু সেই থেকে তবু প্রপাগান্ডা আর কখনো বন্ধ হয়নি- ‘হাম্বানটোটা’ আর ‘চীনের ঋণের ফাঁদ’- এ দুই শব্দ থেকে যায় জব্বর প্রপাগান্ডা শব্দ হয়ে।
তাহলে এই লেখা থেকে আমরা ঠিক কী করব? কী জানব?
এসব প্রপাগান্ডার সবচেয়ে দুর্বল ভিত্তিমূলক দিক যেটা তা হলো, কোনো দেশ কী পরিমাণ ঋণ নিলে তা ‘ঋণের ফাঁদ’ হয়ে যায়? (এক কথায় কোনো দেশের জন্য কতদূর ঋণ নেয়া সেফ? তা কি আগাম জানা যায়? তা মাপার কি কোনো স্টান্ডার্ড আছে?) নাকি চীনা বা বিদেশি ঋণ মাত্রই ‘ঋণের ফাঁদ’? প্রপাগান্ডিস্টরা এটা কেন পরিষ্কার করে বলে না, উহ্য রেখে পাশ কাটিয়ে থাকে? অর্থাৎ পরিসংখ্যান ও স্টান্ডার্ড কী তা হাজির না করেই দাবি করতে থাকে চীনা ঋণ নেয়া একটা ফাঁদ! এই হলো এসব প্রপাগান্ডার কৌশল। এমনকি আমেরিকান প্রশাসনে যে কোম্পানিকে দিয়ে চীনবিরোধী প্রপাগান্ডা প্রায় এক বছর চালানো হয়েছিল সেই কনসাল্টিং কোম্পানিও এদুই প্রশ্নের উত্তর দেয় নাই, পাশ কাটিয়েছে। তাদের ছাপানো কোনো প্রপাগান্ডা আর্টিকেলেও এ নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই।
এমনকি পরে এই প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে এক ডাচ কনসাল্টিং কোম্পানিও ওই দাবি নাকচ করে আর্টিকেল ছেপেছিল যদিও সেখানেও ঋণ নেওয়ার স্টান্ডার্ড কী, কতদূর ঋণ নেয়া বৈধ আর আলোচ্য দেশের পরিসংখ্যান গত ফ্যাক্টস কী- তা নিয়ে কোনো আলাপ করা হয়নি। এতে সবার বক্তব্যই হয়ে গেছে শেষ বিচারে এক আন্দাজি কথাবার্তা বা সরাসরি প্রপাগান্ডা। আমার এই লেখার উদ্দেশ্য ও প্রসঙ্গ- কোনো দেশ নিজ অর্থনীতিতে কী পরিমাণের বেশি বিদেশী ঋণ নিয়ে ফেললে তা রিস্কি হওয়া শুরু হতে পারে, এ নিয়ে একটা গবেষণা স্টাডির ফলাফল পাঠকের সাথে সহজ ভাষায় আলাপ করা, শেয়ার করা।
সৌভাগ্যবশত এটা কোনো খামখেয়ালি কথা নয়; গবেষণা, অবজারভেশন আর স্টাডি থেকে বাস্তবে পাওয়া রেজাল্ট। এই গবেষণাটা করেছিল বিশ্বব্যাংক এবং তা টানা ১৯৮০-২০০৮ এই ২৮ বছরের ডাটা নিয়ে। আর তা ১০১টা দেশের অর্থনৈতিক ডাটা নিয়ে যাদের মধ্যে গরিব ও ধনী উভয় ধরনের দেশই ছিল।
রাষ্ট্রীয় ঋণ পরিমাপ করার এক প্রচলিত পদ্ধতি হলো তা ওই দেশের জিডিপির কত অংশ বা অনুপাতে কত তা জেনে নিয়ে প্রকাশ করা। অর্থাৎ ওই দেশের নেয়া মোট ঋণ, মোট জিডিপির কত অংশ তা দিয়ে। যেমন যদি বলা হয় একটা দেশের ঋণ ৭৭%। তাহলে এ কথার মানে ওই দেশের জিডিপির ৭৭%- এই অঙ্কই হলো ও দেশের নেয়া ঋণ। আসলে এটাই ও দেশের ঋণ-বনাম-জিডিপির অনুপাত।
এই হিসাবে এই গবেষণায় পাওয়া ফলাফল হলো, কোনো দেশের নেয়া রাষ্ট্রীয় ঋণ ওই দেশের জিডিপির ৭৭% বেশি হলে বা ছাড়িয়ে গেলে তা বিপদ জোনে প্রবেশ করেছে মনে করা হবে। তবে এই হিসাব অগ্রসর অর্থনীতির দেশের (যেমন জি৭ গ্রুপের দেশ) বেলায় যারা পুরোনা ও বড় অর্থনীতির দেশ বলে অনেক ঘাত সইবার সক্ষমতা থাকে।
আর এর পরের ক্যাটাগরির মানে যাদেরকে উদীয়মান অর্থনীতি (যেমন জি২০ গ্রুপের দেশ) বলে, এদের ক্ষেত্রে টিপিং পয়েন্ট বা বিপজ্জনক জোন ধরা হয় ঋণ-জিডিপি অনুপাত তাদের ৬৪% এর বেশি ছাড়িয়ে গেলে।
এই হলো, বিশ্বব্যাংকের ওই গবেষণা ফলাফল থেকে পাওয়া ফলাফল। তাই তখন থেকে এটাই বিশ্বব্যাংকের স্টান্ডার্ড বলে মানা হয়। এই বক্তব্যগুলো পাওয়া গেছে- ‘টিপিং পয়েন্ট খোঁজা- কখন রাষ্ট্রের নেয়া ঋণ খারাপ ঋণে পরিণত হবে’- এই শিরোনামে পাওয়া গবেষণা ফলাফল থেকে, যা বিশ্বব্যাংকের লাইব্রেরিতে রক্ষিত। আর ‘টিপিং পয়েন্ট’ বলতে সহ্য সীমা বা ভেঙে পড়ার আগের বিন্দু বুঝা যেতে পারে।
তাহলে আমরা এখন আন্দাজে মন গড়া কথা বলে, যাকে দেখতে পারি না তার বিরুদ্ধে কথা বলা প্রপাগান্ডা থেকে চাইলে বের হয়ে আসতে পারি। কারণ অন্তত বিশ্বব্যাংকের স্টান্ডার্ড বলে একটা কিছু আমাদের হাতে আছে। কোনো স্টান্ডার্ড মানে কোনো ধরনের মাপকাঠি ছাড়াই চীনবিরোধী প্রো-আমেরিকান বা প্রো-ইন্ডিয়ান হয়ে ইচ্ছামতো খামখেয়ালি প্রপাগান্ডা থেকে আমরা এখন চাইলে বের হয়ে আসতে পারি।
যদিও বিশ্বব্যাংকের ওই রিপোর্টে দুটা দেশের ক্যাটাগরির কথাই বলা আছে। তবু অনেক মিডিয়া রিপোর্টে আরেকটা বা গরিব দেশের ক্যাটাগরির কথা বলতে দেখা যায় যাদের বেলায় নেয়া বিদেশী ঋণ নিজ জিডিপির ৪০%-এর বেশি হলে সেটাকে টিপিং পয়েন্ট বলে দাবি করা হয়েছে। এই হিসাবেও বাংলাদেশে (যতগুলো উৎস থেকে দেখা যায় এর সবটাই) এখনো ৩১% এর নিচে আছে। আর বাংলাদেশের মোট ঋণের মাত্র ৬.৮১% হলো চীনের ঋণ আর সবচেয়ে বড় দাতাটা হলো বিশ্বব্যাংকের; সেটা ৩৮%।
কাজেই এটা পরিষ্কার আমরা দেখছি যে, তবুও চীনবিরোধী একটা প্রপাগান্ডার নহর বয়ে যাচ্ছে।
টিপিং পয়েন্ট নিয়ে কিছু মজার তথ্য
বিশ্বব্যাংকের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, জি৭ ভুক্ত বড় অর্থনীতির আমেরিকার বেলায় তার ঋণের টিপিং পয়েন্ট হচ্ছে ৭৭%। কিন্তু সেই ১৯৪৬ সালেই মানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে যখন আমেরিকা একচ্ছত্র গ্লোবাল নেতা হিসাবে উঠে এসেছিল তখনই খোদ আমেরিকার টিপিং পয়েন্ট ছিল ১০৬% যার সোজা মানে এটা ৭৭% চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু এটা সত্ত্বেও আমেরিকা সেকালে গ্লোবাল নেতাই ছিল এবং অন্য সব দেশকে ঋণ দেবার মূল উৎস ছিল- তা সরাসরি দ্বিপাক্ষিকভাবে অথবা বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে।
এ ছাড়া আরো বড় ঘটনাটা হলো, পরে আমেরিকার এই ঋণ-বনাম-জিডিপি অনুপাত কমতে থাকে। শেষ ১৯৭৪ সালের মধ্যে এটা নেমে ২৩% হয়ে যায়।
তাহলে এখন কত?
পরে ১৯৮০ সাল থেকে আমেরিকার এই অনুপাত আবার বাড়তে থাকে; ২০০৭ সালের গ্লোবাল মহামন্দার সময় আরো বাড়ে। আর ২০০৯ সাল থেকে এটা ৭৭% এর বেশি হতে শুরু করেছিল যেটা এখনো বৃদ্ধির দিকে। ২০২০ সালের সেকেন্ড কোয়ার্টারে এটা সর্বোচ্চ ১৩৫.৯% (গড়ে ১৩৪%) হয়ে আছে।
সার কথায়, বিশ্বব্যাংকের টিপিং পয়েন্টই শেষ কথা নয়; একটা স্টান্ডার্ড মাত্র। ফলে এটা ছাড়ালেই সব ভেঙে পড়বেই এমন নয়, তবে হতে পারে। আর দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বড় অর্থনীতির দেশের ঘাত সহ্য ক্ষমতা বেশি, অভিজ্ঞতায় তাই দেখা গেছে।
কোন দেশ সর্বোচ্চ অনুপাতে
২০২০ সালের হিসাবে এমন দেশ হলো ভেনিজুয়েলা। তার অনুপাত ছিল ৩০৪%। আমরা সবাই কমবেশি ভেনিজুয়েলার অবস্থা জানি। তার ওপর আমেরিকান তেল অবরোধ দেয়া আছে সুদীর্ঘ সময় ধরে। ফলে সুনির্দিষ্ট কিছু দেশেই সে একমাত্র ডলার ছাড়া অন্য মুদ্রাতেই কেবল তেল বিক্রি করে যেটুকু বিদেশি মুদ্রা আয় করতে পারে। সে কারণে ভেনিজুয়েলার অনুপাত অমন উঁচু। তুলনায় সেকেন্ড সর্বোচ্চ অনুপাত ছিল জাপান ২০৪%। আর আমেরিকা ছিল ষষ্ঠ প্লেসে, ১৩৪%। তাহলে বিশ্বব্যাংকের স্টান্ডার্ড ৭৭% এখানে কার্যত অকেজো!
তাহলে ভারতের কী অবস্থা
এশিয়ার সবদেশই ‘চীনা ঋণের ফাঁদে’ পড়ে ডুবে গেল- এই হলো ভারতের প্রবল প্রপাগান্ডার সার কথা। এই মিথ্যা প্রপাগান্ডায় আবার আমেরিকার থেকেও ভারতের গলা বেশি উঁচু। তাহলে ভারতের নিজের কী অবস্থা এই প্রসঙ্গে? সে খবর নিতে হয়। ব্লুমবার্গ আমেরিকার ফাইন্যান্সিয়াল নিউজ মিডিয়াগুলোর মধ্যে অন্যতম। সে ভারতের কুয়িন্ট নিউজের সাথে খবর শেয়ার করে ভারতে ছাপে। তাদেরই এক রিপোর্ট বলছে, ভারতের ঋণ বনাম জিডিপি অনুপাত ২০২১ সালে ৮৭.৮%। এই রিপোর্টের শিরোনাম হলো, ‘বাজেট ২০২২- রাষ্ট্রের ঋণ নামিয়ে আনতে হলে একটা শক্ত অর্থনৈতিক উন্নতি দেখাতে হবে।’ আর তাহলেই নাকি আগামী বছর এই অনুপাত কমে ৮৭.৪% হতে পারে। অর্থাৎ ভারতকে যদি রাইজিং অর্থনীতির দেশ গণ্য করি, তাহলেও ওর বিশ্বব্যাংক স্টান্ডার্ড অনুপাত হয় ৬৪%। অথচ এই স্টান্ডার্ড থেকে ৮৭% অনেক দূরের ফিগার অবশ্যই। তাহলে কোন সুখে ভারত সব দেশের বিরুদ্ধে লেগে সেখানে ‘চীনা ঋণের ফাঁদ’ খুঁজে ফেরে?
তাহলে শেষ অবস্থাটা কী
গত ৪ এপ্রিল ভারতের অনেক পত্রিকাতেই একটা নিউজ ছাপা হয়েছে। তা হলো, অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়ে মোদি তার দু’ডজন সিনিয়র সচিব বা কর্তাদের নিয়ে লম্বা চার ঘণ্টার এক মিটিং করেছেন। ওই রিপোর্টের শিরোনাম হলো, ‘বুরোক্রাটেরা মোদিকে লাল পতাকা দেখিয়েছেন এই বলে যে, শ্রীলঙ্কার মতো ক্রাইসিস ভারতেও দেখা দিতে পারে।’ তারা আসলে বলতে চাইছেন অনেক রাজ্যে যেভাবে নয়া প্রকল্প নেয়া হচ্ছে তা ভালো হচ্ছে না। এতে অর্থ সঙ্কটে পড়বে ভারত। হিন্দুস্থান টাইমস এ নিয়ে একটা ভিডিও ক্লিপও বানিয়েছে। আর এতে ভারতে হৈ চৈ পড়া অবস্থা যে, তাহলে কি খোদ ভারতই এখন শ্রীলঙ্কা হতে যাচ্ছে? এর সাথে এক অসমর্থিত খবর বলছে, সম্প্রতি মোদিকে যে বাইডেন ফোন করেছিলেন, রাশিয়া থেকে ভারত যেন তেল না কিনে এই ইস্যুতে, সেখানে ভারত বাইডেনের কথায় আসলে রাজি হয়েছে। কারণ, বাইডেন মোদিকে শ্রীলঙ্কা ধরনের অর্থনৈতিক ক্রাইসিস সামলাতে ফাইন্যান্সিয়াল সাপোর্ট দিতে কবুল করেছেন। ভারতের ৬১৪ বিলিয়ন বৈদেশিক ঋণ শোধে কিস্তি দেরিতে দিতে ও সুদ কমাবার আবেদন করেছেন মোদি।
তাহলে দাঁড়াল এই যে কার প্রপাগান্ডা কখন যে কাকে খায়? এখন প্রধান প্রশ্ন হলো, তাহলে, ভারতকে ঋণের ফাঁদে ফেলল কে?
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com