নো-বল বিতর্কে শাস্তি! জরিমানা মোস্তাফিজদের দলের অনেকের
নো-বল বিতর্কে শাস্তি! জরিমানা মোস্তাফিজদের দলের অনেকের - ছবি : সংগ্রহ
দিল্লি-রাজস্থান ম্যাচের শেষ ওভারে নো-বল বিতর্কে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্কে জড়ান দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ঋষভ পন্থ ও সহকারী কোচ প্রবীণ আমরে। এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করল আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। প্রতিযোগিতার নিয়ম ভাঙায় পন্থের ম্যাচ ফি-র ১০০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রবীণকে এক ম্যাচ নির্বাসিত করা হয়েছে।
আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিযোগিতার কোড অব কন্ডাক্টের ২.৭ ধারায় লেভেল ২ অপরাধ করেছেন পন্থ। নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন তিনি। তাই তাকে জরিমানা করা হয়েছে। প্রবীণ ২.২ ধারায় লেভেল ২ অপরাধ করেছেন। তাই তার ম্যাচ ফি-র ১০০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে ও এক ম্যাচ নির্বাসিত করা হয়েছে। ২.৮ ধারায় লেভেল ২ অপরাধ করেছেন দিল্লির আর এক ক্রিকেটার শার্দুল ঠাকুরও। তার ম্যাচ ফি-র ৫০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে।
শেষ ওভারে দিল্লির জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩৬ রান। প্রথম তিন বলে তিনটি ছক্কা মারেন পাওয়েল। কিন্তু তৃতীয় বল কোমরের উচ্চতার কাছাকাছি ফুলটস ছিল। মাঠের আম্পায়াররা নো বল না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দিল্লি শিবির। ডাগ আউট থেকে সমানে ওয়ার্নার, পন্থরা নো বলের ইঙ্গিত করতে থাকেন। তৃতীয় আম্পায়ারের আবেদন জানান। কিন্তু, সেই আবেদনে মাঠের আম্পায়াররা সাড়া না দেয়ায় দিল্লি শিবিরের ক্ষোভের পারদ আরো চড়ে। রিপ্লেতে দেখা যায় বল পাওয়েলের ব্যাটে লাগার সময় তার উচ্চতা ছিল কোমরের সামান্য উঁচুতে।
তা দেখেই পাওয়েল এবং কুলদীপ যাদবকে মাঠ থেকে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দেন দিল্লি অধিনায়ক। দুই ব্যাটার মাঠের বাইরে চলে যেতে চাইলে তাদের আটকান মাঠের আম্পায়াররা। তাদের বোঝান এ ভাবে ম্যাচ ছেড়ে চলে যাওয়া যায় না। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। পন্থ অবশ্য সমানে মাঠের বাইরে থেকে দুই ব্যাটারকে চলে আসার নির্দেশ দিতে থাকেন। এ সময় হঠাৎ করেই সবাইকে চমকে গিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন দিল্লির অন্যতম সাপোর্ট স্টাফ প্রবীণ আমরে। তিনি গিয়ে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। যদিও পরে পন্থ স্বীকার করে নেন, তারা যা করেছেন তা ঠিক নয়। তার পরও শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে পন্থদের।
নো-বল বিতর্কে পন্থদের দাবি বৈধ? কী বলছে আইপিএলের নিয়ম
দিল্লি-রাজস্থান ম্যাচের শেষ ওভারে নো-বল বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে। রভম্যান পাওয়েলকে করা ওবেড ম্যাকয়ের ফুলটস কোমরের উপরে ছিল বলে দাবি জানান ঋষভ পন্থরা। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়াররা। ফলে ক্রিকেটারদের মাঠ ছেড়ে চলে আসার নির্দেশ দেন পন্থ। যদিও শেষ পর্যন্ত তা ঘটেনি। এই বিতর্কে প্রাক্তন ও বর্তমান ক্রিকেটাররা নিজেদের মতামত দিচ্ছেন। কেউ দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়কের সমালোচনা করছেন, তো কেউ পাশে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু কী বলছে নিয়ম? সত্যিই কি তৃতীয় আম্পায়ারের দ্বারস্থ হতে পারেন মাঠের আম্পায়াররা? দিল্লি শিবিরের দাবি কি বৈধ?
ক্রিকেটের নিয়ম কী বলছে?
সাধারণত ক্রিকেটে যদি মাঠের আম্পায়াররা মনে করেন যে কোনও বোলারের করা ফুলটস ব্যাটারের কোমরের উপরে গিয়ে লেগেছে কি না তা নিয়ে তাঁরা সংশয়ে রয়েছেন, তা হলে তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে আবেদন করতে পারেন তারা। সে ক্ষেত্রে তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
আইপিএলের নিয়ম কী বলছে?
আইপিএলের নিয়ম অবশ্য কিছুটা আলাদা। এই প্রতিযোগিতায় যদি ফুলটসে কোনো ব্যাটার আউট হন, এক মাত্র তখনই তৃতীয় আম্পায়ার খতিয়ে দেখেন যে বলটি কোমরের থেকে বেশি উচ্চতায় ছিল কি না। অন্য কোনো ক্ষেত্রে কোমরের উপরে ফুলটস হয়েছে কি না সেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় মাঠের আম্পায়ারকেই। তৃতীয় আম্পায়ারের দ্বারস্থ তারা হতে পারবেন না।
অর্থাৎ দিল্লি শিবিরের তরফে যে আবেদন করা হচ্ছিল তাতে সাড়া দিতে পারতেন না আম্পায়াররা। কারণ রিপ্লে-তে যতই দেখা যাক যে ওবেড ম্যাকয়ের বল রভম্যান পাওয়েলের কোমরের উপরে লেগেছে, তার পরেও প্রথমে নেয়া সিদ্ধান্ত বদল করতে পারতেন না তারা। তবে সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হয়েছিল তাদের। কারণ রিপ্লে-তে স্পষ্ট দেখা যায় সেটি নো-বল ছিল। এই বিতর্কের পরে নিয়ম বদলের দাবি জানিয়েছেন অনেকে। তাদের মতে, সামনের পায়ের নো-বল হচ্ছে কি না সেটি যেমন প্রতি বলে তৃতীয় আম্পায়ার খতিয়ে দেখেন, কোমরের উপরে ফুলটসের ক্ষেত্রেও সেটা করা উচিত।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা