কিভাবে বুঝবেন আপনি ওরাল ক্যানসারে ভুগছেন?
কিভাবে বুঝবেন আপনি ওরাল ক্যানসারে ভুগছেন? - প্রতীকী ছবি
দিন দিন বাড়ছে মুখের ক্যানসার (Oral Cancer)। চিনে রাখলে প্রাণে বাঁচবেন সহজেই। জানাচ্ছেন আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের ওরাল প্যাথোলজির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর-গবেষক ডা. সন্দীপ ঘোষ। শুনলেন পৌষালি দে কুণ্ডু
ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার নিরিখে পুরুষরা সবচেয়ে বেশি ভুগছেন ওরাল ক্যানসারে। মৃত্যুর ঘটনাও এতেই সবচেয়ে বেশি। নিয়মিত জর্দা-খৈনি-পান-পানমশলা-সিগারেট প্রভৃতি তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য সেবনের জন্যই এই পরিণতি। একটু সতর্ক হয়ে রোজ একটু মুখের খেয়াল রাখলেই ওরাল ক্যানসার কিন্তু প্রতিরোধ করা যায়। ওরাল ক্যানসারের ঠিক আগের ধাপ হলো ওরাল প্রি-ক্যানসার। এই স্টেজেই যদি রোগ শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করা যায়, তাহলে আর দুশ্চিন্তা নেই। কর্কটরোগ থাবা বসানোর আগেই তাকে সমূলে বিদায় করে দেয়া যায়।
লিউকোপ্লেকিয়া কিভাবে চিনবেন?
মুখের ভিতরে মাড়ি, গালে বা যেকোনো অংশে সাদা সাদা দাগ হয়। একে লিউকোপ্লেকিয়া বলে। এমন হলে তা থেকে ভবিষ্যতে ক্যানসার হবেই তা গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায় না। আবার এমন দাগ হওয়ার বছর কয়েকের মধ্যে রোগীর ওরাল ক্যানসার হয়েছে, এমন উদাহরণও ভূরি ভূরি রয়েছে। লিউকোপ্লেকিয়া ক্যানসারের রূপ নিতে পারে কি না তা বুঝতে প্রথমে বায়োপসি করতে হয়। সেই রিপোর্ট দেখে বুঝতে অসুবিধা হলে জিনোমিক পরীক্ষা করা হয়। এই নতুন পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে ক্যানসারের আশঙ্কা থাকলে তা অনেকটাই আন্দাজ করা যায়। ইঙ্গিত মিললে চিকিৎসকরা দ্রুত অপারেশন করে সাদা অংশ বাদ দিয়ে দেন। এই অপারেশনের ফলে কিন্তু গাল, মাড়ি বা জিভে খুব গভীর ক্ষত হয় না। রোগীর কথা বলতেও কোনো অসুবিধা হয় না। কিছুদিন বাদে সেই ক্ষতস্থান ফের ভরাট হয়ে যায়।
ওরাল সাবমিউকাস ফাইব্রোসিস
আজকাল ৩০-৩৫ বছর বয়সি পুরুষ ও মহিলাদের মুখের ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ছে। যা অ্যালার্মিং। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এর কারণ ওরাল সাবমিউকাস ফাইব্রোসিস। গুটখা ও সুপুরি খেলে এই অসুখ হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। ওরাল সাবমিউকাস ফাইব্রোসিস হলে মুখের হাঁ ক্রমশ ছোট হয়ে আসে। মুখের ভিতরে গালের অংশ খসখসে, শুকনো হয়ে যায়, কিছু খেতে গেলে গালে জ্বালা করে। ভবিষ্যতে যা ক্যানসারে টার্ন নিতে পারে বা নাও নিতে পারে। ক্যানসারের অ্যাডভান্স স্টেজে মুখের হাঁ এত ছোট হয়ে যায় যে রোগীর খেতেও অসুবিধা হয়।
দাঁতে খোঁচা দিলেও ক্যানসার
অনেকেই খাবার খাওয়ার পর রোজ দাঁতে কাঠিজাতীয় কিছু দিয়ে খোঁচান। তাতে অল্পবিস্তর মাড়িতে লেগে নামমাত্র রক্তপাতও হয়। বিষয়টি এমন কিছু নয় ভেবে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এই অভ্যাসও ক্যানসার ডেকে আনে। আবার মুখের কোনো ঘায়ের চিকিৎসায় অনেক ডাক্তারবাবু স্টেরয়েড ওষুধ দেন। এই ওষুধ নির্দিষ্ট সময়ের পরও ডাক্তারকে না জানিয়ে রোগীরা ব্যবহার করে যান। স্টেরয়েড মলম যেকোনো ঘা-কে ক্যানসারের দিকে ঠেলে দেয়। তাই নির্বিচারে এর ব্যবহার কখনোই করা উচিত নয়।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন