যে ৫ খাবারে ডেকে আনতে পারে পুরুষদের বন্ধ্যত্ব
যে ৫ খাবারে ডেকে আনতে পারে পুরুষদের বন্ধ্যত্ব - প্রতীকী ছবি
পরিসংখ্যান বলছে, বিগত চল্লিশ বছরে বিশ্বে পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে গড়ে ৫৯ শতাংশ।
পৃথিবীতে বহু মানুষ চাইলেও সন্তানধারণ করতে পারেন না। এর একটি অন্যতম প্রধান কারণ পুরুষদের শুক্রাণুর সমস্যা। পরিসংখ্যান বলছে, বিগত ৪০ বছরে বিশ্বে পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে গড়ে ৫৯ শতাংশ। ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটছে, তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা বলছে, দৈনন্দিন জীবনচর্চা ও খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে বন্ধ্যত্বর আশঙ্কা। দেখে নিন, কী কী খাবার খেলে বেড়ে যেতে পারে এই আশঙ্কা—
১। সম্পৃক্ত ফ্যাটিঅ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার : ট্রান্স ফ্যাট ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার শুক্রাণু উৎপাদনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে। পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটিঅ্যাসিড অন্ডকোষে জমা হতে পারে। বীর্যে এই ধরনের স্নেহ পদার্থের উপস্থিতি শুক্রাণুর স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে। কমাতে পারে শুক্রাণুর ঘনত্বও।
২। প্রক্রিয়াজাত গোশত : বিশেষজ্ঞদের মতে প্রক্রিয়াজাত গোশত শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাসের অন্যতম প্রধান কারণ। প্রক্রিয়াজাত গোশতেও প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটিঅ্যাসিড থাকে। পাশাপাশি, এই ধরনের গোশতে কৃত্রিম সংরক্ষক ও উৎসেচকের অবশিষ্টাংশ থাকে। তা শুক্রাণু উৎপাদনে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৩। ধূমপান ও মদ্যপান : একাধিক গবেষণা বলছে, গাঁজা ও সিগারেট শুক্রাণুর সমস্যা ডেকে আনতে পারে। মদ্যপাও শুক্রানুর গঠনগত বিকৃতি ঘটাতে পারে।
৪। অতিরিক্ত স্নেহজাতীয় পদার্থযুক্ত দুগ্ধজাত পদার্থ : বর্তমানে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গবাদি পশুকে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দেয়া হয়ে থাকে। এর প্রভাব পরে দুধেও। এই ধরনের গবাদি পশুর দুধে স্নেহজাতীয় পদার্থ থাকে অনেক বেশি। সম্প্রতি ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সী যুবকদের উপর করা একটি সমীক্ষা বলছে, এ ধরনের দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য খেলে শুক্রাণুর চলাচল, গতি ও আকৃতিতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
৫। অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ : উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য ফসলে যে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, সে রাসায়নিক পদার্থগুলোও শুক্রাণুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার, অধিকাংশ খাদ্যেই এ ধরনের রাসায়নিক মিশে থাকে, যা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। সব্জি রান্নার আগে ভালো করে ধুয়ে নেয়া ছাড়া এ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ দূর করার কোনো অন্য উপায় নেই। তবুও শাক-সব্জি সম্পূর্ণ রাসায়নিক মুক্ত করা অত্যন্ত কঠিন।
কতটা পানি পান প্রয়োজন? যেভাবে বুঝবেন
শরীরে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বের করতে আর শরীরের ভেতরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে ঠিক পরিমাণে পানি পান করা প্রয়োজন। অথচ আমরা অনেকেই পানি খাওয়ার কোনো হিসাবই রাখি না। ওষুধ, খাবার সবই সময় মেনে, মাপ মতো খাওয়া হয়। কিন্তু পানির বেলায় সব হিসাবই যেন গোলমাল হয়ে যায়। আপনার মনে হতেই পারে পানি খাওয়ার আবার হিসাব আছে না কি? খেলেই হলো! এমন অনেকেই আছেন যারা সারা দিনে বোতলের পর বোতল পানি খেয়ে ফেলেন, আবার কেউ এক বোতল শেষ করতেই হাঁপিয়ে ওঠেন।
পানি খাওয়ার পরিমাণ নিয়ে নানা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অনেকেই ভাবেন, অতিরিক্ত পানি খেলেই বুঝি সব শারীরিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই ধারণা মোটেই ঠিক নয়। এক জন সাধারণ মানুষ, যার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে এবং হার্ট ও লিভারেরও কোনো বড় অসুখ নেই, তার সাধারণত দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার তরলের প্রয়োজন হয়। তরল মানে কিন্তু শুধু মাত্র পানি নয়। যিনি দিনে অনেক বার চা খান, তাকে সেই মাপটাও নিতে হবে। ফলের রসও এর মধ্যে পড়ে। এমনকি খাবারের সাথেও বেশ খানিকটা পানি ঢোকে আমাদের শরীরে। মাপতে হবে সেটিও!
সারা দিনে ঠিক কতটা পরিমাণ পানি খাওয়া উচিত?
পুষ্ঠিবিদদের মতে, আপনার ওজনের উপর নির্ভর করবে দিনে ঠিক কতটা পরিমাণ পানি খাবেন। এক ব্যক্তি যার ওজন ৮০ কেজি তাকে ৬০ কেজি ওজনের কারো তুলনায় বেশি পানি খেতে হবে। আপনার মোট ওজনকে ৩০ দিয়ে ভাগ করুন। ভাগের ফলাফলই বলে দেবে আপনার আদতে ঠিক কতটা পরিমাণ পানি খাওয়া উচিত। অর্থাৎ, আপনার ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তা হলে আপনাকে সারা দিনে দু’লিটার পানি খেতে হবে। আপনার ওজন ৮০ কেজি হলে আপনাকে ২.৬ লিটার পানি খেতে হবে।
শরীরচর্চার সময়ে : শরীরচর্চার সময়ে আমাদের ঘাম ঝরে। ফলে, অতিরিক্ত পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। সেই ঘাটতি মেটাতে ব্যয়ামের কিছু ক্ষণ আগে এবং পরে পানি খাওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যদি ঘণ্টা খানেকের বেশি সময় ধরে শরীরচর্চা চলে, তা হলে আপনাকে প্রায় ৭০০ মিলিলিটার পানি বেশি খেতে হবে। শুধু পানি না খেয়ে ‘স্পোর্টস ড্রিঙ্ক’-ও চলতে পারে।
ঠিক একই ভাবে, যাদের দিনের বেশির ভাগ সময়টা বাইরে কাজ করতে হয়, তাদের পানির প্রয়োজনও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গায় বসে কাজ করা মানুষদের চেয়ে বেশি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা