দেহে এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমলে হতে পারে যেসব বিপদ
দেহে এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমলে হতে পারে যেসব বিপদ - প্রতীকী ছবি
শরীরের কোলেস্টেরল মাত্রা বাড়লেই মুশকিল! এই একটা রোগের হাত ধরে শরীরে বাসা বাঁধে হাজার একটা রোগ। হৃদ্রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বাড়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও। তবে কোলেস্টেরল মানেই খারাপ নয়, শরীরে বেশ কিছু উপকারী কোলেস্টেরলও থাকে। হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল) কোলেস্টেরল শরীরের পক্ষে ভালো। এইচডিএল খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে শরীর সুস্থ রাখে। তাই শরীরে এইচডিএল সঠিক মাত্রা বজায় রাখা জরুরি। খাদ্যতালিকায় এবং জীবনযাত্রায় কোন পরিবর্তনগুলো আনলেই আমরা রক্তে এইচডিএল মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পারি?
১) শরীরে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে চাইলে ধূমপানের অভ্যাস ছাড়তে হবে। ধূমপান করলে আপনার রক্তে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। বাড়াতে পারে লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এলডিএল)-এর মাত্রা, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
২) শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ জরুরি। শরীরে মেদ জমলেই খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে, আর ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। তাই মেদকে জব্দ করতেই হবে। খাদ্যাভাসে বদল আনুন, নইলে মুশকিল।
৩) নিয়মিত শরীরচর্চা করার অভ্যাস আপনার শরীরে এইচডিএল-এর মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে অ্যারোবিক ব্যায়াম, ভারী শরীরচর্চা দারুণ কার্যকর। বয়স বাড়লে ভারী শরীরচর্চা করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত হাঁটাহাটি করলেও উপকার পেতে পারেন। রোজ অন্তত ৩০ মিনিট একটু দ্রুত গতিতে হাঁটলেও শরীরে এইচডিএল-এর মাত্রা বাড়ে। সাঁতার কাটলেও উপকার পাওয়া যায়।
৪) খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দিতে হবে। অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি খেলে শরীরে ক্যালোরির মাত্রা অত্যধিক হারে বেড়ে যায়। পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়ে।
৫) খাদ্যতালিকায় বদল আনুন। শরীরে এইচডিএল- এর মাত্রা বাড়াতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটযুক্ত খাবার খেতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনার খাদ্যতালিকায় আমন্ড বাদাম, আখরোট, তিসি, চিয়ার বীজ, ফ্যাটযুক্ত মাছ, সর্ষের তেল, জলপাই, অ্যাভোকাডো, সিম অবশ্যই রাখুন। তা ছাড়া বেগুনি রঙের সব্জি খেতে পারেন। বেগুন, বেগুনি বাঁধাকপিতে অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, এই উপাদানটি রক্তে এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
ইফতারিতে খেজুরের উপকারিতা
ডা: সাহিদা সুলতানা
বিজ্ঞানময় ইসলাম। এতে নেই সন্দেহের অবকাশ। বিজ্ঞান যত এগিয়ে যাচ্ছে ইসলাম তত শক্তিশালী হচ্ছে। অথচ অন্ধকার যুগের একজন উম্মি জগতের শ্রেষ্ঠ মানব হজরত মুহাম্মদ সা: নিজে পড়াশোনা না জানলেও এতটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কিভাবে দেয়া সম্ভব তা নিয়ে বছরের পর বছর চিন্তা করলেও কুলকিনারা পাওয়া সম্ভব নয়। এতেই প্রমাণিত হয় ইসলাম কোনো মানব রচিত নয়। এটি মহান আল্লাহর মনোনীত।
রমজান মাস এলেই খেজুর ছাড়া আমাদের চলেই না। অনেকেই জানেন না ইফতারিতে এটি খেলে উপকারিতা কী? কিন্তু মহানবী সা: দেড় হাজার বছর আগেই জানিয়েছেন এর উপকারিতা। হাদিসে আছে, রাসূল সা: বলেছেন, ‘খেজুর দ্বারা রোজা ভাঙলে শরীরে উপকারিতা অনেক’। অন্য একটি হাদিসে আছে, ‘তোমরা খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙো না পারলে পানি দ্বারা, এতেই কল্যাণ নিহিত।’
আল কুরআনের সূরা মারইয়ামে আছে যখন মারইয়াম আ: প্রসব বেদনায় কষ্ট পাচ্ছিলেন তখন তাকে বলা হলো ফ্রেশ পাকা খেজুর তার প্রসব সহজ করবে।
তাই বলা যায় খেজুরের উপকারিতা নিঃসন্দেহে অনেক। বর্তমানে তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কুয়েত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিচালিত ‘খেজুরের উপকারিতা’-নামক গবেষণা প্রকল্প থেকে জানা গেছে খেজুরের গুণাগুণ। এ গবেষণায় গবেষকরা দেখতে চেয়েছেন, খেজুর রোজাদারদের জন্য কতটা স্বাস্থ্যসম্মত। গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুর ইফতারিতে রোজাদারদের ছয়টি স্বাস্থ্য উপকারী ভূমিকা রাখে।
খেজুর সহজপাচ্য। সারাদিন অভুক্ত থাকার পর খেজুর খেলে পাকস্থলির ওপর কোনো চাপ পড়ে না।
খেজুরে যে শর্করা থাকে তা দ্রুত শোষিত হয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে শরীর দ্রুততার সাথে শক্তি পায়। সারা দিনের ক্লান্তি, কষ্ট লাঘব হয় নিমিষেই।
এতে প্রচুর ফাইবার থাকে। রোজা রাখলে পানি কম পান করা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কিন্তু খেজুর খেলে এ সম্ভাবনা কমে যায়, যদিও কেউ ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার কম খায়।
সারাদিন অভুক্ত থাকার পর মন চায় খাই আর খাই। এতে কিন্তু রোজার আদর্শ ঠিকমতো পালিত হয় না। আবার এতে পাকস্থলির ওপর চাপ পড়ে। রোজা রাখলে যেসব স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায় তাও ব্যাহত হয়। ইফতারিতে খেজুর খেলে ক্ষুধা ভাব কমায়। ফলে কমে অতিরিক্ত খাবার পরিমাণ।
খাবার ডাইজেস্ট বা পাচিত করার জন্য পাকস্থলি থেকে নিঃসৃত জুস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেজুর পাকস্থলির জুস নিঃসরণ হার বাড়িয়ে খাবার পাচিত করতে সহায়তা করে।
রক্তের অম্ল-ক্ষার ভারসাম্য রাখে।