রাজপথে বিপুল সমর্থন দেখে আপ্লত ইমরান : ‘এমন জনসমুদ্র কখনো দেখিনি’
রাজপথে বিপুল সমর্থন দেখে আপ্লত ইমরান : ‘এমন জনসমুদ্র কখনো দেখিনি’ - প্রতীকী ছবি
শনিবার মাঝরাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন ইমরান খান। শেষমুহূর্ত পর্যন্ত গদি আঁকড়ে ধরার মরিয়া চেষ্টা চালিয়েও শেষরক্ষা করতে পারেননি তিনি। তবে এখনো হাল ছাড়তে নারাজ তিনি। রোববার রাতে ইমরানের ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানের রাজপথে নেমে পড়েন তার হাজার হাজার সমর্থক। আর এই ঘটনায় আপ্লুত পাকিস্তানের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে পাকিস্তান তেহরিক-ইনসাফ দলের প্রধান ইমরান লেখেন, 'এহেন জনসমুদ্র কখনো দেখিনি। এতেই বোঝা যায় মানুষ জালিয়াতদের আমদানি করা বিদেশী সরকারকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। স্থানীয় মির জাফরদের দ্বারা তৈরি মার্কিন মদতপুষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সকল পাকিস্তানি নাগরিককে ধন্যবাদ। মির জাফররা জামিনে মুক্ত জালিয়াতদের ক্ষমতায় বসাতে চলেছে।'
বলে রাখা ভালো, রোববার রাতে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে ইমরান খানের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল বের করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। মশাল হাতে ইসলামাবাদ, করাচির মতো শহরের রাজপথে নেমে পড়েন হাজার হাজার মানুষ।
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, মূল্যবৃদ্ধি ও আর্থিক দুর্নীতির জেরে অনেকেই ইমরান খানকে দুষছেন। কিন্তু অনেকেই আবার আমেরিকার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় ইমরানকে নায়ক বলে মনে করছেন। রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক মজবুত করার জেরে ওয়াশিংটনই যে কলকাঠি নেড়ে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে সেই কথা বিশ্বাস করেন পাকিস্তানি যুবসম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ।
উল্লেখ্য, লড়াই যে শেষ হয়নি সেই ইঙ্গিত দিয়ে রোববার বিকেলে টুইট করেন সদ্য ক্ষমতা হারানো রাষ্ট্রনেতা। ডাক দেন দেশের জন্য নতুন স্বাধীনতা আন্দোলনের। ক্ষমতা হারানোর পরে শনিবার রাত থেকে রোববার সারা দিন প্রকাশ্যে আসেননি ইমরান। আস্থা ভোটে হারের পরও টুইটারে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি তিনি। কোনো বার্তা দেননি দেশবাসীর উদ্দেশেও। ফলে ইমরানকে নিয়ে ক্রমশ জল্পনা বাড়ছিল। অবশেষে মুখ খুললেন তিনি। এবং তার গদি হারানোর পিছনে বিদেশী ষড়যন্ত্রের কথাই ফের শোনা গেল তার মুখে। এর আগেও ইমরান ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পাকিস্তানের সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে বৈদেশিক শক্তি। এমনকী, একবার তিনি আমেরিকার নামও নিয়ে ফেলেন। তার অভিযোগ, আমেরিকাই কলকাঠি নাড়ছে তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে। এবার ফের সেই ইস্যুতেই সরব হলেন তিনি।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন ইস্যুতে ইমরান খানের গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত
পাকিস্তান পার্লামেন্টে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগেই গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সোমবার পিটিআইয়ের (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) পার্লামেন্টারি দলের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, যারা পাকিস্তানকে লুট করেছে তাদের সাথে পিটিআইয়ের (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) এমপিরা বসবেন না। (বিরোধী জোটের) এসব ব্যক্তি বিদেশী শক্তিগুলোর দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
পার্লামেন্ট থেকে পিটিআই এমপিদের গণপদত্যাগের পর উপনির্বাচন
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার পর পার্লামেন্ট থেকে পিটিআই এমপিদের গণপদত্যাগের শঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) জানিয়েছে, যদি পার্লামেন্ট থেকে ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) এমপিরা গণপদত্যাগ করেন তবে তাদের আসনে উপনির্বাচন হবে। সোমবার এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে জিও নিউজ।
জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ অনুষ্ঠানে পিএমএল-এন (পাকিস্তান মুসলিম লীগের নওয়াজ গ্রুপ) নেতা আহসান ইকবাল বলেন, পাকিস্তান পার্লামেন্ট থেকে পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) এমপিরা গণপদত্যাগ করলে তাদের শূন্য আসনে উপনির্বাচন দেয়া হবে।
তিনি এ সময় বলেন, পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) এমপিদের পদত্যাগ প্রতিরোধে কাজ করছে ইমরানবিরোধীদের দলীয় জোট পিডিএম। তবে তার ধারণা পিটিআইয়ের অধিকাংশ এমপি পদত্যাগ করবেন না।
পিএমএল-এন (পাকিস্তান মুসলিম লীগের নওয়াজ গ্রুপ) নেতা আহসান ইকবাল আরো বলেন, পাকিস্তানের সমগ্র প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে ঝাঁকুনি দেয়ার মতো সাংগঠনিক শক্তি নেই পিটিআই দলের। তবে ইমরান খানের দল পিটিআই যদি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে অচলাবস্থা সৃষ্টি করে তবে নতুন নির্বাচন হবে।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের দল প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। যদি পার্লামেন্ট থেকে পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) এমপিরা গণপদত্যাগ করেন তবে তাদের শূন্য আসনে উপনির্বাচন হবে।
একটি সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি দেন দলটির তথ্য সম্পাদক শাজিয়া মারি ও ফয়সাল করিম কুন্দি।
সূত্র : জিও নিউজ, দ্যা নিউজ ইন্টারন্যাশনাল