পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী কী চায়?

মাসুম খলিলী | Apr 05, 2022 03:58 pm
জেনারেল বাজওয়া

জেনারেল বাজওয়া - ছবি : সংগ্রহ

 

সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন এবং জাতিকে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা উচিত। তিনি উল্লেখ করেন, ২৭ রমজানে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে এবং এ জাতি কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে, গণতন্ত্রীরা জনগণের কাছে যায়, নির্বাচন হয় এবং জনগণ সিদ্ধান্ত নেয় তারা কাকে শাসক করতে চায়।

এত সব ঘটনার পর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতেখার বলেছেন, যা হয়েছে তার সাথে সেনাবাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই। এই প্রথম সামরিক নেতারা এত খোলাখুলি বলেছেন যে তারা ইমরান খানের পদে থাকার দাবি সমর্থন করেননি। কারো কারো মতে, রাজনৈতিক সঙ্কট চলতে থাকলে তা সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।

এর আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার দেশের একটি ‘চমৎকার’ সম্পর্ক রয়েছে এবং চীনের সাথে একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষতি না করে তা প্রসারিত করতে চায় তার দেশ। এই বক্তৃতায়, জেনারেল বাজওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্ঘাতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নিরপেক্ষতার অবস্থান থেকে সরে যান। ‘রাশিয়ার বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগ’ স্বীকার করার পরও তিনি জোর দেন যে, একটি ছোট দেশের বিরুদ্ধে মস্কোর আগ্রাসন ক্ষমা করা যায় না।

বিদেশী ষড়যন্ত্র ও এর প্রভাব
ইমরান খান তার দল থেকে একাধিক এমপির পক্ষত্যাগের পর তার সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর মুখে পড়লে বারবার দাবি করেন যে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পদক্ষেপের পেছনে একটি ‘বিদেশী-সমর্থিত ষড়যন্ত্র’ ছিল। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিদেশী অর্থ লোকদের কেনার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।

বলা হচ্ছে, ইমরান খান পদত্যাগ ও অনাস্থার মুখোমুখি হওয়া আর নতুন নির্বাচন দেয়া- এই তিন বিকল্পের মধ্যে শেষটি বেছে নিয়েছেন। কিছুদিন আগ পর্যন্ত বিরোধী দলগুলো পাকিস্তানে নতুন নির্বাচন দাবি করে আসছিল। সে বিষয়ে ইমরান একমত হওয়ার পরও বিরোধী জোট আর তাতে সম্মত না হয়ে সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখে। সংসদ ভেঙে দেয়ার পর এখন সবকিছু উলটপালট হয়ে যায়।

সামরিক অ্যাস্টাবলিসমেন্টের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক পক্ষগুলোর জন্য কিছু করা কঠিন। তারা পাকিস্তানে সম্ভবত স্থিতি ফেরাতে চায়। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ দানের কথা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সেটি না হলে তা হতে পারে নতুন নির্বাচিত সরকারের সময়। নতুন সেনাপ্রধান কে হবেন তার ওপর পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ কিছুটা প্রভাবিত হতে পারে।

তবে পাশ্চাত্যের সাথে রাশিয়ার বর্তমানে যে সঙ্ঘাত সৃষ্টি হয়েছে তা ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ হলেও আরো অনেক দূর যেতে পারে। চীন ও রাশিয়া বিকল্প অর্থনৈতিক ও বিশ্ব ব্যবস্থার দিকে এগোতে চাইছে। এ ক্ষেত্রে ভারত পশ্চিমা বলয়ের সাথে না থাকলে পাকিস্তানকে কাছাকাছি রাখার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বিশেষভাবে সক্রিয় হতে পারে।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us