সর্বক্ষণ ক্লান্ত লাগে? কোন রোগের সঙ্কেত!
সর্বক্ষণ ক্লান্ত লাগে? কোন রোগের সঙ্কেত! - ছবি : সংগ্রহ
অতিরিক্ত ক্লান্তিকে দৈনন্দিন কাজের চাপের প্রকাশ হিসাবেই দেখেন বেশির ভাগ মানুষ। কর্মব্যস্ততার চাপে পড়ে সর্ব ক্ষণের ক্লান্তিকে অবজ্ঞা করাও নতুন কিছু নয়। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে পরিশ্রান্ত লাগা। অতিরিক্ত ক্লান্তিকে অধিকাংশ মানুষ অবহেলার চোখে দেখলেও, এই ক্লান্তির মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে বিপদের সঙ্কেত।
কী কী কারণে লাগতে পারে পরিশ্রান্ত?
১। অনিদ্রা : শুধু দীর্ঘ ঘুমই নয়, নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম না হলেও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হতে পারে। আর পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব অতিরিক্ত ক্লান্তির অন্যতম কারণ। আর অনিদ্রা হৃদ্রোগ, ডায়াবিটিস ও মানসিক অবসাদের মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
২। পুষ্টির অভাব : পরিপূর্ণ পুষ্টির জন্য প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়াও বিভিন্ন খনিজ ও ভিটামিন প্রয়োজন। শরীরে আয়রন, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ ও ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি-র মতো বিভিন্ন উপাদানের ঘাটতিও ডেকে আনে ক্লান্তি। পৌষ্টিক উপাদানের ঘাটতি ক্লান্তির অন্যতম মূল কারণ। আয়রনের অভাব ডেকে আনে রক্তাল্পতা। এই রোগেও দেখা দিতে পারে ক্লান্তি।
৩। অবসাদ : অবসাদে ভোগা রোগীদের মধ্যে অনেক সময়েই কাজকর্মে অনীহা দেখা দেয়। সুতরাং মানসিক চাপও ক্লান্তি ডেকে আনতে পারে। অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্যকে দীর্ঘদিন উপেক্ষা করেন। কিন্তু এই সমস্যা দীর্ঘদিন থেকে গেলে হতে পারে বিপদ।
৪। মধুমেহ : ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রেও অন্যতম বড় একটি লক্ষণ হল নিয়মিত ক্লান্ত লাগা। শরীরে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট হলেই দেখা দিতে পারে এই সমস্যা। মধুমেহ অনেক সময়েই কিডনির সমস্যা ডেকে আনে আর কিডনির সমস্যা ডেকে আনে ক্লান্তি।
৫। ক্যানসার : সবের শেষে বলতে হয় ক্যানসারের কথা। বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রেও প্রাথমিক উপসর্গ হল অতিরিক্ত ক্লান্তি। বিশেষত রক্তের ক্যানসার ও মস্তিষ্কে ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে ক্লান্তি। মনে রাখবেন, সাধারণ কাজকর্মের ফলে যে ক্লান্ত ভাব আসে, তা কিছুটা যত্ন নিলেই কেটে যেতে পারে। কিন্তু দিনের পর দিন ক্লান্তি না কাটলে সেটি মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। দরকার অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।
পিঠের ব্যথা কমছেই না? কী করবেন
করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে সব কিছুই এখন ডিজিটাল মাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। আধুনিকতার কারণে শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়াটা অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
পড়াশোনা থেকে বাজার দোকান- সব কিছুই সামলানো যাচ্ছে ফোন কিংবা কম্পিউটারের পর্দায়। ফলে কায়িক শ্রম খানিক কম হচ্ছে। অনেকেই আবার সময়ের অভাবে বাড়িতেও শরীরচর্চা করে উঠতে পারেন না। সব কিছুর ফলে পিঠে ব্যথার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। সমস্ত বয়সের মানুষের মধ্যেই এই সমস্যার পরিমাণ বাড়ছে। ৯০ শতাংশ মানুষের পিঠে ব্যথার প্রধান কারণ- এক জায়গায় অনেক ক্ষণ বসে থাকা। তবে এই সমস্যার তাৎক্ষণিক উপশমও হতে পারে, এমন কিছু উপায় আছে। সেগুলো কী কী?
১) চেষ্টা করুন, ঘুমোনোর সময় মাথার নিচে বালিশ না নিতে।
২) নিয়মিত শবাসন, ভুজঙ্গাসন, মকরাসন প্রভৃতি শরীরচর্চা করলে পিঠের ব্যথা কমে।
৩) অফিসের কাজ করার সময়ে একই জায়গায় এবং একই ভঙ্গিতে অনেক ক্ষণ বসে থাকবেন না। প্রতি ২০ মিনিট অন্তর বিরতি নিতে পারেন। উঠে দাঁড়ান, হাঁটাচলা করুন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা