হাঁপানিতে কষ্ট পাচ্ছেন? ইনহেলার সাথে না থাকলে কী করবেন
হাঁপানিতে কষ্ট পাচ্ছেন? ইনহেলার সাথে না থাকলে কী করবেন - ছবি : সংগ্রহ
অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসকরা বলে থাকেন যে, হাঁপানি মূলত বংশগত। পরিবারের কারো সমস্যা থাকলে, অ্যাজমা হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় অনেকখানি। বর্তমানে অতিরিক্ত দূষণের কারণে পৃথিবীতে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে অ্যাজমা আক্রান্তের সংখ্যা। সাধারণভাবে শ্বাসনালীর প্রদাহের কারণে হাঁপানির সমস্যা দেখা দেয়। ফুসফুসে বাতাস ঢোকার পথগুলি হাঁপানির কারণে সরু হয় ও ফুলে ওঠে। পাশাপাশি, জমতে থাকে মিউকাস। শীতকালে মূলত হাঁপানির সমস্যা বাড়ে। তবে চিকিৎসকদের মতে, বছরের যেকোনো সময়েই বাড়তে পারে হাঁপানির সমস্যা। হাঁপানির সমস্যা যাঁদের রয়েছে, তারা অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নিজেদের সাথে সব সময়ে ইনহেলার রাখেন। তবে এমন যদি হয় কোনো কারণে বা তাড়াহুড়োয় ইনহেলার কাছে থাকল না এবং হঠাৎ হাঁপানির সমস্যা শুরু হলো, কিভাবে সামাল দেবেন?
১) হাঁপানির টান উঠলে রোগী খুব দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন। শ্বাসের টান উঠলে সাথে সাথে শুয়ে পড়বেন না। শুয়ে পড়লে বা ঝুঁকে বসে থাকলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে আরো কষ্ট হয়।
২) হাঁপানির টান উঠলে লম্বা করে বেশ কয়েকবার শ্বাস নিন। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এর পর নাক দিয়ে লম্বা লম্বা শ্বাস নিয়ে তা মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। দেখবেন হাঁপানির কষ্ট কমে যাবে।
৩) হাঁপানির টান উঠলে এক কাপ গরম কফি খেতে পারেন। কফি খেতে না চাইলে অল্প গরম জলও খেয়ে দেখতে পারেন। এতে সাময়িকভাবে আরাম পাওয়া যাবে।
৪) হঠাৎ হাঁপানির টান উঠলে ইনহেলার কাছে না থাকলেও ঘাবড়ে যাবেন না। এতে সমস্যা আরও বাড়বে। বরং এ সময়ে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন।
৫) হাঁপানির টান উঠলে হাতের কাছে যদি ইনহেলার না থাকে, তা হলে চেষ্টা করুন খোলামেলা জায়গায় কিছুক্ষণ থাকতে। নাক-মুখের কাছে হাত-পাখা দিয়ে হাওয়া করুন।
৩ অসুখ : বাড়িয়ে তোলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, নিজের যত্ন নেয়ার সময়ের অভাবে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা অসুখ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সময় যত গড়াচ্ছে তত বেশি করে প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রযুক্তি নির্ভরতা ওবেসিটি, থাইরয়েড এবং কোলেস্টেরলের সমস্যার মতো নানা ব্যাধির জন্ম দিচ্ছে। এই সমস্যাগুলো থেকেই জন্ম নিচ্ছে হৃদ্রোগ।
১) উচ্চ রক্তচাপ : আজকাল অনেকেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন। রক্তচাপ খুব বেশি বেড়ে গেল শরীরে নানা রকম জটিলতা তৈরি হয়। মানসিক চাপ উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ। এ ছাড়া খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, বেহিসাবি জীবনযাপনও উচ্চ রক্তচাপের নেপথ্যে রয়েছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে স্ট্রোক বা হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে উচ্চ রক্তচাপের কারণে। উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা উপরে ১৪০/৯০ স্বাভাবিক। তবে এর মাত্রা যদি ১৮০/১২০-এর বেশি হয় তা হলে, তা শরীরের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ।
২) কোলেস্টেরল : রক্তে দুই ধরনের কোলেস্টেরলে থাকে—১) লো ডেনসিটি কোলেস্টেরল (এলডিএল) ২) হাই ডেনসিটি কোলেস্টেরল (এইচডিএল)। এলডিএল শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল নামে পরিচিত। ধমনীতে এই খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেলে হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক, কিডনির রক্ত প্রবাহকে হ্রাস করে। সেই সঙ্গে বাড়িয়ে তোলে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও।
৩) স্থূলতা : অতিরিক্ত ওজন হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা আরো বৃদ্ধি করে। ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর সমীক্ষা অনুসারে, শরীরের বাড়তি ওজন খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে আর ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। স্থূলতার কারণে বাড়তে পারে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও।
হৃদ্রোগের লক্ষণ :
১) বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি।
২) নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট।
৩) পিঠ, ঘাড়, পেট-সহ শরীরের উপরের অংশে ব্যথা ও অস্বস্তি।
৪) ঘাম হওয়া, হালকা মাথাব্যথা।
এই উপসর্গগুলো দেখা দিলে দেরি না করে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা