খাওয়ার পর কেন হয় পেটে যন্ত্রণা

অন্য এক দিগন্ত | Mar 27, 2022 04:43 pm
খাওয়ার পর কেন হয় পেটে যন্ত্রণা

খাওয়ার পর কেন হয় পেটে যন্ত্রণা - ছবি : সংগৃহীত

 

খুব খিদে পেলে বা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে অনেক সময়ে পেটে ব্যথা করে। কিন্তু মাঝেমাঝে আবার দেখা যায়, খাওয়ার পরও ব্যথা করছে পেট। অনেকেই এই লক্ষণ খাবারের গোলমাল বলে এড়িয়ে যান। তবে খাওয়ার পরে পেটে ব্যথা করা কিন্তু স্বাভাবিক কোনো ব্যাপার নয়। এ রকম হলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।

কোন কারণগুলির জন্য খাওয়ার পরও পেট ব্যথা করে?

১) বেশি খাওয়া হয়ে গেলে : স্বাভাবিক পরিমাণের তুলনায় বেশি খাওয়া হয়ে গেলে পেটে ব্যথা করতে পারে। পাকস্থলী একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের খাবার ধারণ করতে পারে। খাবারের পরিমাণ তার চেয়ে বেশি হয়ে গেলে পেটের ভিতরে অস্বস্তি ও যন্ত্রণার হয়।

২) তাড়াতাড়ি খেলে : খাওয়ার পর পেটে ব্যথার অন্য একটি কারণ হলো দ্রুত খাওয়া। তাড়াতাড়ি খাওয়ার সময়ে খাবারের সাথে অতিরিক্ত বাতাসও শরীরে প্রবেশ করে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস শরীরে প্রবেশ করার ফলে গ্যাস, পেট ফাঁপা, পেট ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেই কারণে পেটে ব্যথা করে।

৩) হজম না হলে : কফি, অ্যালকোহল, মশলাদার খাবার, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে বদহজম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই খাবারগুলো হজম হতেও অনেক সময় নেয়। ফলে পেট ফুলে যাওয়া, বমি ভাবের মতো কিছু সমস্যা দেখা দেয়।

৪) পিত্তথলিতে পাথর হলে : গলব্লাডার বা কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে খাওয়ার পর পেটে ব্যথা করতে পারে। বিশেষ খাবারে যদি অত্যধিক ফ্যাট থাকে, তা হলে ব্যথা আরো বাড়তে পারে। তাই গলব্লাডার বা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।

৫) তেল-মশলা জাতীয় খাবার খেলে : পুষ্টিকর খাবার না খেলে পেট ফাঁপা, ডায়েরিয়া, বমির মাধ্যমে শরীর বিদ্রোহ শুরু করে। অতিরিক্ত বেশি তেল-ঝাল-মশলা জাতীয় খাবার শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয়। এই ধরনের খাবার হজম করতেও অনেক সমস্যা হয়। হজম না হলে ব্যথা, যন্ত্রণার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

ডাউন সিন্ড্রোম প্রতিরোধেই মুক্তি
ডা: হুমায়ুন কবীর হিমু

ডাউন সিন্ড্রোম এমন একটি জেনেটিক রোগ যার এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নেই। আমাদের শরীরে ৪৬টি ক্রোমোসোম থাকে, ২৩টি আসে মা ও ২৩টি বাবার কাছ থেকে। কিন্তু দুর্ভাগা ডাউন শিশুদের ক্রোমোসোম ৪৬টির পরিবর্তে থাকে ৪৭টি। এতেই ঘটে সব বিপত্তি। ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জন লগডন ডাউন সর্বপ্রথম এ রোগটি বর্ণনা করেন। ১৯৫৯ সালে ডা: জেরমি লিচিউন জানান যে এ রোগটি ৪৭টি ক্রোমোসোমের ফলে হয়ে থাকে।

আমেরিকায় আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা থাকার পরও প্রতিবছর ৬ হাজার শিশু ডাউন হিসেবে জন্ম নেয়। আমাদের দেশে এর সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও চলতে ফিরতে এমন শিশুর হরহামেশাই দেখা পাওয়া যায়। ডাউন শিশুদের দেখেই চেনা যায়। এদের চিবুক ছোট, ঘাড় খাটো, জিহ্বা বড়, চ্যাপ্টা মুখ, চোখ পাহাড়িদের মতো, পায়ের বুড়ো আঙ্গুল ও এর পরের আঙ্গুলের মধ্যে বেশ ফাঁকা, পুরো হাতের একটা দাগ, আকারে বেশ ছোট ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। ডাউন শিশুরা জন্মের সময় তার সমসাময়িকদের মতোই থাকে। এ শিশুদের মাংসপেশি থাকে দুর্বল তাই অন্য শিশুদের চেয়ে এরা দেরিতে বসে, হামাগুড়ি দেয় ও হাঁটে।

এরা বুকের দুধ ভালো মতো টেনে খেতে পারে না। কথা বলে দেরিতে। এদের বুদ্ধিও থাকে কম।
এ শিশুদের জন্মগত হৃদরোগ দেখা যায়। কানে শোনে না তাই কথাও বলতে পারে না। লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয় বেশি। চোখে কম দেখে, ছানি পড়া, গ্লোকোমায় আক্রান্ত হয়। বুদ্ধি কম থাকে বলে এরা স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। এরা অন্যের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়। অন্যের দয়ায় চলতে হয়।

এমন শিশুদের ছোটবেলায় শিশু কার্ডিওলজিস্ট, নাক,কান ও গলা বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হয়। হেয়ারিং এইড ব্যবহার করে কানে শোনার ব্যবস্থা করলে কথা বলা ও অন্যের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। এদের জন্য প্রয়োজন হয় স্পিস থেরাপির। বিশেষায়িত স্কুলে লেখাপড়া শেখানোর ব্যবস্থা করা যায়। এদের দৈনন্দিনের কাজগুলো শেখাতে হবে ধৈর্য ধরে।
এমন শিশু না চাইলে সন্তান নিতে হবে আগেই। দেখা গেছে ৩০ বছর বয়সী মায়েদের মধ্যে এমন শিশু জন্মের হার প্রতি ১ হাজারে ১ জন, ৩৫ বছরে প্রতি ৪০০ জনে ১ জন ও ৪০ বছরে প্রতি ১০০ জনে ১ জন। গর্ভাবস্থায়ও নির্ণয় করা যায় ডাউন শিশু। গর্ভ ধারণের ১০-১৪ সপ্তাহে আলট্রাসনোগ্রাম করে বোঝা যায় গর্ভস্থ শিশুটি ডাউন কি না। তবে শতকরা ৫ ভাগ ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে।

এ জন্য রক্তের কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়। এ টেস্টগুলো হলো বিটা-এইচসিজি, আলফা ফিটোপ্রোটিন, ইনহেবিন-এ। যদি আরো নিশ্চিত হওয়ার দরকার হয় তাহলে অ্যামনিওসেনটেসিস ও করিওনিক ভিলাস স্যাম্পিøং করতে হয়। এগুলো করতে হয় প্রথম ৬ মাসের মধ্যেই। ডাউন শিশু পরিবারের জন্য বিষবৃক্ষ ন্যায়, সমাজের বোঝা। তাই সচেতন হতে হবে এখনই। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে এমন শিশুর হার কমানো সম্ভব।

লেখক : নিউরোলজিস্ট, ল্যাবএইড ডায়াগনোস্টিক, গুলশান-২, ঢাকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us