ইউক্রেনের সর্বশেষ অবস্থা কী
ইউক্রেনের সর্বশেষ অবস্থা কী - ছবি : সংগ্রহ
ইউক্রেনে যুদ্ধের সর্বশেষ অবস্থা হলো, এটা ইউক্রেনের দিক থেকে আরো অধৈর্য হয়ে উঠা এবং বাইডেনের হাত প্রায় ছেড়ে কালকেই রাশিয়ার সাথে বসে সব মিটমাট করে নেয়া। যদিও বাইডেন বা পশ্চিমা শক্তির সেদিকে মনোযোগ নেই। আর রাশিয়ার দিক থেকে এটি এক হঠাৎ ঝিমিয়ে পড়া অবস্থায় পড়েছে। আর এতে একটি ‘স্ট্যাটাস কো’ মানে, যে যে অবস্থায় আছে সেখানেই আটকে থাকার একটি চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ দু’সপ্তাহ আগের অবস্থার সাথে যদি তুলনা করি, বিশেষ করে আমেরিকার ‘এবিসি নিউজ’ টিভির সাথে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যেখানে নিজ দেশের ভাষায় সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন তার কথা বলছি। ওই সাক্ষাতকারের বক্তব্যের অভিমুখ যা ছিল তাতে এতদিন ইউক্রেন পরিস্থিতিতে একেবারে রাশিয়ান সেনা প্রত্যাহার না হলেও অন্তত লম্বা যুদ্ধবিরতি আর পুতিন-জেলেনস্কি দু’পক্ষকে সরাসরি ডায়লগে বসতে দেখতে পেতাম। কারণ ওই সাক্ষাতকার প্রচারের পরের দিন অন্তত দু’বার রাশিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের অবস্থান ইতিবাচক বলে বর্ণনা করা হয়েছিল। মানে জেলেনস্কির সাক্ষাতকার রাশিয়া ইতিবাচকভাবে নিয়েছে- এর স্বীকৃতি বলে ধরে নিতে পারি। তাহলে আবার এখন সব ঝিমিয়ে পড়া অবস্থায় বা স্ট্যাটাস কো- এমন বলছি কেন? কারণ এর পরে কোনো অগ্রগতি নেই- মানে এর কোনো ‘পরবর্তী’ নেই।
এমনকি ওই একই সময় রাশিয়ার তেল-গ্যাস না কিনে ইউরোপের কোনো বিকল্প নেই। ফলে তারা রাশিয়ান গ্যাস কিনবে বলে অন্তত তিনটি দেশ- ফ্রান্স, জর্মানি ও নেদারল্যান্ডের প্রকাশ্য বক্তব্য দেখেছিলাম। অথচ সেসব বক্তব্যেরও আর কোনো ফলোআপ পরে আর দেখা যায়নি। বরং সর্বশেষ অবস্থান দেখা যাচ্ছে বাইডেনের এবং তা এখন সম্পূর্ণ বিপরীত। এবিসি নিউজের সাক্ষাতকার প্রসঙ্গে বলেছিলাম- এর মধ্যে জেলেনস্কির কূটনৈতিক ডায়লগের মাধ্যমে যুদ্ধ শেষ করার আগ্রহ আছে। কিন্তু তাতে সবার আগে বাইডেন ও জেলেনস্কির, এ দুই প্রেসিডেন্টের ইমেজ বাঁচানোটাই হয়েছিল মুখ্য ইস্যু। সেটি নিশ্চিত হলে তবেই ওই যুদ্ধ সমাপ্তি ও ডিপ্লোম্যাটিক আলোচনা শুরু হতে পারে- এই ছিল আমেরিকান পরিকল্পনা।
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, হিসাবে এতে সব ঠিকঠাক থাকলেও বাইডেন সম্ভবত দেখছেন, এতে তার ইমেজ বাঁচানো যাচ্ছে না। কারণ এখন যদি বিনাযুদ্ধে ও কূটনৈতিক আলোচনাতেই যুদ্ধ শেষ করা যায় তাহলে যুদ্ধটা শুরু করার দরকার কী ছিল? সে প্রশ্ন কেউ না তুললেও বাতাসে তা হাজির হবেই। আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে, জেলেনস্কি এবিসি নিউজকে ইতোমধ্যেই বলে ফেলেছেন, তার আর ন্যাটোর কোনো সদস্য হওয়ার আকাক্সক্ষা নেই। ব্যাপারটি অনেকটা শখ মিটে যাওয়ার মতো হয়ে গেছে। আর তিনি বলছেন, ইতোমধ্যেই তিনি ‘এই আকাক্সক্ষার প্রশ্নে নিজেকে কুল ডাউন করতে পেরেছেন। আর বুঝেছেন যে, ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্য হিসেবে গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়।’ আর এ পরিস্থিতিটাকেই বাইডেন নিজের জন্য হার হিসেবে দেখছেন!