আয়রনের ঘাটতি বুঝবেন ৫ লক্ষণে
আয়রনের ঘাটতি বুঝবেন ৫ লক্ষণে - ছবি : সংগ্রহ
শরীরে আয়রনের অভাব ইদানীং কালে একটি বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক মানুষই আয়রনের অভাবে নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা আরো বেশি করে চোখে পড়ে। পর্যাপ্ত আয়রনের অভাবে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ বিঘ্নিত হয়। আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তাল্পতার মতো সমস্যাও দেখা যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে দেহে আয়রনের অভাব ঘটছে এই ব্যাপারটা প্রাথমিক ভাবে অনেকেই বুঝতে পারেন না। তবে কিছু লক্ষণ দেখে সহজেই তা নির্ধারণ করা যায়। কোনো রোগ যদি প্রাথমিক অবস্থাতেই চিহ্নিত করা যায় আগেভাগে সুরক্ষা নেয়া সম্ভব হয়।
কোন লক্ষণগুলো দেখে বুঝবেন শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে?
১) অত্যধিক ক্লান্তি : সময় মতো খাওয়াদাওয়া, বিশ্রাম নেয়া, পরিমাণ মতো ঘুমনোর মতো দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপগুলো স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত ক্লান্তি ঘিরে যেন ধরছে। শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে এমন হতে পারে। আয়রনের অভাবে শরীরের প্রতিটি অঙ্গে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছয় না। ফলে মাঝে মাঝেই ক্লান্ত লাগে।
২) মাথা ব্যথা : শরীরে আয়রন পরিমাণ কম থাকলে মস্তিষ্ক সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ হ্রাস পায়। মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবে মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, শারীরিক অস্বস্তি। এমনকি ঋতুস্রাব চলাকালীন নারীদের মধ্যে মাইগ্রেনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
৩) নখের ভঙ্গুর প্রবণতা : নখ একটু বড় হতে না হতেই ভেঙে যায়? আয়রনের অভাবের কারণে এমন হতে পারে। আয়রন নখের যত্ন নেয়। তবে স্বাভাবিকের তুলনায় আয়রনের পরিমাণ শরীরে হ্রাস পেলে নখ দুর্বল হয়ে ভেঙে যেতে পারে।
৪) ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া : শরীরের সব কোষে রক্ত পরিবহণের জন্য আয়রন অপরিহার্য। আয়রনের ঘাটতি থাকলে দেহের কোষগুলোতে রক্ত সমান ভাবে পৌঁছয় না। রক্তের অভাবে ত্বক অনেক সময় ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে। একে রক্তাল্পতার লক্ষণ বলেও ধরা হয়।
৫) বুকে ব্যথা : আয়রনের অভাবে শরীরের সব অংশে অপর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহের কারণেই মূলত বুকে ব্যথা হয়। এর ফলে শ্বাস নিতেও অসুবিধা হয়। উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদ্রোগ সংক্রান্ত কোনো সমস্যা না থাকলেও ঘন ঘন বুকে ব্যথা হলে আয়রনের অভাব আছে ধরা যেতে পারেন।
এন্ডোমেট্রিয়োসিস কাকে বলে? কিভাবে চিনবেন
জরায়ুতে ‘এন্ডোমেট্রিয়াম’ নামক একটি স্তর থাকে, এই এন্ডোমেট্রিয়াম স্তরের টিস্যু যদি জরায়ুর বাইরে বর্ধিত হয়, তখন তাকে বলে ‘এন্ডোমেট্রিয়োসিস’। ডিম্বাশয়, পেটের ভিতরের আবরণী বা পেরিটোনিয়াম, বিভিন্ন লিগামেন্ট, অন্ত্র, সেপটাম, ‘স্কার টিস্যু’ বা কাটা সেলাইয়ের উপর জমতে পারে এই ট্যিসু। এন্ডোমেট্রিয়োসিসের সমস্যা থাকলে ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত ও তীব্র ব্যথা হতে পারে।
দেখে নিন কোন কোন সমস্যা দেখে চেনা যাবে এন্ডোমেট্রিয়োসিস?
১। ঋতুস্রাবের সময় তীব্র ব্যথা : ঋতুস্রাবে অনেকেই ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু এন্ডোমেট্রিয়োসিসের সমস্যা থাকলে এই ব্যথা বহু গুণ বেড়ে যায়। এমনকি ঋতুস্রাব শুরু ও শেষের আগে ও পরে বেশ কিছু দিন পর্যন্ত এই ব্যথা থাকে। ব্যথা হয় তলপেট ও কোমরেও।
২। যৌন মিলনে সমস্যা : এন্ডোমেট্রিয়োসিসের ফলে যৌন মিলনের সময়ে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই ব্যথা যৌন মিলনের পরও বেশ কিছু দিন থাকে।
৩। মল, মূত্র ত্যাগে সমস্যা : মল ত্যাগ করার সময়ে ও প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা হয় তলপেটে। সাধারণত ঋতুস্রাব চলার সময় এই সমস্যাগুলি আরও বেড়ে যায়।
৪। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ : এন্ডোমেট্রিয়োসিসের সমস্যা থাকলে ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত দেখা যেতে পারে। পাশাপাশি দুটি ঋতুস্রাবের নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে ‘ইন্টারমেন্সট্রুয়াল ব্লিডিং’ দেখা যেতে পারে।
৫। বন্ধ্যত্ব: সব সময় না হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এন্ডোমেট্রিয়োসিসের সমস্যা থাকলে রোগীর সন্তানধারণে সমস্যা তৈরি হয়।
৬। অন্যান্য সমস্যা : এন্ডোমেট্রিয়োসিসের সমস্যা থাকলে অনেক সময় ক্লান্তি, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাঘোরার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে, এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে যোগাযোগ করতে হবে চিকিৎসকের সঙ্গে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা