গরম পড়তেই ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাচ্ছেন?
গরম পড়তেই ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাচ্ছেন? - ছবি : সংগ্রহ
জাঁকিয়ে না হলেও গরমটা বেশ ভালোই পড়েছে। মাথার উপর সূর্যের চড়া রোদ। বাইরে বেরোনোর কথা শুনলেই গায়ে ফোস্কা পড়ছে যেন। তবে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য বা বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরোতেই হয়। কাজ সেরে গলদঘর্ম হয়ে বাড়ি ফিরেই হাত চলে যায় ফ্রিজে। থরে থরে সাজিয়ে রাখা ঠান্ডা পানির বোতল থেকে গলায় পানি ঢাললেই শান্তি। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, রোদ থেকে ঘুরে এসে ঢক ঢক করে ঠান্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাস শরীরে জন্য একেবারেই ভালো নয়। এতে সাময়িক আরাম পাওয়া গেলেও শরীরের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
গরমের মধ্যে থেকে এসে ঠান্ডা পানি খাওয়ার প্রবণতা অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। হঠাৎ করে শরীরের ঠান্ডা পানি প্রবেশ করার ফলে রক্তনালীগুলি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মার একটা অতিরিক্ত আস্তরণ তৈরি হয়। যার শ্বাসযন্ত্রজনিত বিভিন্ন সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরম থেকে ফিরেই পানি খাওয়ার আগে কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন। শরীরের ঘাম শুকিয়ে এলে তারপর সাধারণ পানি খাওয়া যেতে পারে। এমনি পানির পরিবর্তে কেউ চাইলে ডাবের পানিও খেতে পারেন। ডাবের পানি শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে।
গরমে সব সময় শরীর ঘামতে থাকে। শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হয়। ফলে শীতের তুলনায় গরমে বেশি দুর্বল লাগে। শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে ও দুর্বলতা কাটাতে খেতে পারেন বিভিন্ন ফলের রস। গ্রীষ্মে লিচু, আঙুর, তরমুজ, আম, জামরুলের মতো অনেক রসালো ও জলসমৃদ্ধ ফলে বাজার ছেয়ে থাকে। এগুলি দিয়ে ফলের রস বানিয়ে নিতে পারেন। এ ছাড়াও গ্রীষ্মে শরীর সুস্থ রাখতে রোজ সকালে খালি পেটে খেতে পারেন আমলকির রস। শরীরের যত্ন নিতে আমলকির জুড়ি মেলা ভার। গ্যাস, হজমের সমস্যার চটজলদি সমাধান রয়েছে আমলকিতে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সহজ উপায়!
সুপ্রিয় নায়েক
সকালে ঠিকভাবে পেট পরিষ্কার হয় না অনেকেরই। আর তাই নিয়ে দিনভর মেজাজ হয়ে থাকে খারাপ। কাজেও মন বসে না। পেট ফুলে থাকে। হজমেরও নানা সমস্যা দেখা যায়। তবে এই সমস্যার খুব সহজ সমাধান রয়েছে ঘরের মধ্যেই। দেখে নেয়া যাক সেগুলো কী কী—
মনাক্কা বা কিসমিস : প্রতিদিন রাতে ৮ থেকে ১০টি কিসমিস খেয়ে নিন। সকালে প্রাতঃকৃত্যের পর আর কোনও অভিযোগ থাকবে না নিশ্চিত। মনাক্কা থেঁতো করেও খেতে পারেন, আবার গোটাও খেতে পারেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে কিসমিস ধন্বন্তরির মতো কাজ করবে।
আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মনাক্কা যে কেউ খেতে পারেন। শরীরে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে না। বাচ্চাদেরও মনাক্কা খাওয়ানো যায়।
শসা ও দই : যারা প্রায়ই কোষ্ঠবদ্ধতার সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য উপযোগী সমাধান হলো টক দই ও শসাকুচি একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া। একটি গোটা শসাকে কুচি কুচি করে কেটে ১০০ গ্রাম টক দইয়ের মধ্যে মিশিয়ে প্রতিদিন দুপুরে খাওয়ার পরে খান। কোষ্ঠবদ্ধতার সমস্যা দূর হবে। তাছাড়া দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক বা উপকারী ব্যাকটেরিয়া হজমের বিবিধ সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। আবার দইয়ে থাকা ক্যালশিয়াম হাড়ের জোরও বাড়ায়। এমনকী টক দইয়ে থাকে প্রচুর ভিটামিন। ফলে ছোট থেকে বড় সকলেই শসা-দই খেতে পারেন। তবে মাছ-মাংসের মতো খাদ্য খাওয়ার অন্তত ঘণ্টা দু’য়েক পরে শসা-দই খাওয়া উচিত।
আমলকী-হরীতকী-বহেড়া বা ত্রিফলা : আজকাল বাজারে ত্রিফলা মিলছে চূর্ণ, ট্যাবলেট এবং সিরাপ হিসেবে। নিয়মিত রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আধঘণ্টা আগে ত্রিফলা চূর্ণ তিন গ্রাম পরিমাণ নিয়ে ঈষদুষ্ণ জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। সিরাপ নিলে ১৫ থেকে ২০ এমএল পান করবেন। ট্যাবলেট খেলে দু’টি ট্যাবলেট সেবন করাই বিধেয়। তবে এই উপাচার শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ছোটদের আমলকী-হরীতকী-বহেড়া দিতে হলে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মনে রাখবেন, বড়দের ক্ষেত্রে কনস্টিপেশন হওয়া নির্ভর করে ছয়টি বিষয়ের উপর। ১. গভীর রাত্রি পর্যন্ত জেগে থাকা। ২. মাছ-গোশতের মতো খাদ্য বেশি পরিমাণে খাওয়া। ৩. খাবারে শাক-সব্জি না রাখা। ৪. পর্যাপ্ত পানিপানের অভাব। ৫. কায়িক শ্রমের অভাব। ৬. কোনো দীর্ঘদিনের শারীরিক অসুস্থতা।
অতএব কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে হলে বা পেট পরিষ্কার রাখতে হলে, ঘরোয়া বিধান পালনের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনও খুব জরুরি বিষয়।
সূত্র : বর্তমান