নিশ্বাসে দুর্গন্ধ? কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে
নিশ্বাসে দুর্গন্ধ? কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে - ছবি : সংগ্রহ
ডায়াবেটিসের প্রকোপ খুব বেশি। অনিয়মিত জীবনযাপনের ফলে ৩০ পেরোতে না পেরোতেই বহু মানুষ আক্রান্ত হন ডায়াবেটিসে। শরীরে ডায়াবিটিস বাসা বাঁধলে প্রথম অবস্থাতেই তা টের পাওয়া যায় না। যেকোনো অসুখের ক্ষেত্রে যত আগে রোগের উপস্থিতি টের পাওয়া যায় ততই ভালো। এতে আগাম সতর্কতা নেয়াটা সম্ভব হয়।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া, পানি খাওয়ার পরেও জিভ পিপাসায় শুকিয়ে আসা, চোখে ঝাপসা দেখা, ওজন হ্রাস, মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতার মতো কিছু উপসর্গ দেখতে পাওয়া যায়। এগুলো ছাড়াও চিকিৎসকরা বলছেন, দুর্গন্ধযুক্ত নিশ্বাসও ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে।
রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে মুখের চারপাশের অংশে তার প্রভাব পড়ে। ডায়াবেটিসের প্রভাবে কিডনি, হৃদ্যন্ত্র, শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঠিক জীবনযাপন, খাওয়াদাওয়ায় বিধিনিষেধ, নিয়ম করে শরীরচর্চা করার ফলেডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সবার প্রথমে প্রস্রাব এবং দাঁতের পরীক্ষা করিয়ে নেয়া প্রয়োজন।
নিশ্বাস থেকে দুর্গন্ধ বার হওয়ার সমস্যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ‘হ্যালিটোসিস’। যদি রক্তে শর্করার মাত্রা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয় এবং তার সঙ্গে এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এই নিশ্বাস দুর্গন্ধজনিত সমস্যা, দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা, প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই সমস্যাগুলোকে ‘ ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস’-ও বলা হয়ে থাকে। রক্তে ইনসুলিনের অভাবে ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিসের সৃষ্টি হয়। ইনসুলিনের ঘাটতির কারণে শরীর শর্করা বিপাকের মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করতে না পারে না। ফলে শরীরে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিডের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করা শুরু করে। ফলশ্রুতি হিসাবে শরীরে ‘কিটোন ব়ডি’ তৈরি হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা ২৫০ থেকে ৩০০-র বেশি হলে হলে এই ধরনের সমস্যাগুলি জন্ম নেয়।
শরীরে কিটোন আছে কি না তা জানতে রোগীর প্রস্রাব পরীক্ষা করাতে হয়। এই ‘হ্যালিটোসিস’ এবং ‘ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস’ ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সহজ উপায়!
সুপ্রিয় নায়েক
সকালে ঠিকভাবে পেট পরিষ্কার হয় না অনেকেরই। আর তাই নিয়ে দিনভর মেজাজ হয়ে থাকে খারাপ। কাজেও মন বসে না। পেট ফুলে থাকে। হজমেরও নানা সমস্যা দেখা যায়। তবে এই সমস্যার খুব সহজ সমাধান রয়েছে ঘরের মধ্যেই। দেখে নেয়া যাক সেগুলো কী কী—
মনাক্কা বা কিসমিস : প্রতিদিন রাতে ৮ থেকে ১০টি কিসমিস খেয়ে নিন। সকালে প্রাতঃকৃত্যের পর আর কোনও অভিযোগ থাকবে না নিশ্চিত। মনাক্কা থেঁতো করেও খেতে পারেন, আবার গোটাও খেতে পারেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে কিসমিস ধন্বন্তরির মতো কাজ করবে।
আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মনাক্কা যে কেউ খেতে পারেন। শরীরে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে না। বাচ্চাদেরও মনাক্কা খাওয়ানো যায়।
শসা ও দই : যারা প্রায়ই কোষ্ঠবদ্ধতার সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য উপযোগী সমাধান হলো টক দই ও শসাকুচি একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া। একটি গোটা শসাকে কুচি কুচি করে কেটে ১০০ গ্রাম টক দইয়ের মধ্যে মিশিয়ে প্রতিদিন দুপুরে খাওয়ার পরে খান। কোষ্ঠবদ্ধতার সমস্যা দূর হবে। তাছাড়া দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক বা উপকারী ব্যাকটেরিয়া হজমের বিবিধ সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। আবার দইয়ে থাকা ক্যালশিয়াম হাড়ের জোরও বাড়ায়। এমনকী টক দইয়ে থাকে প্রচুর ভিটামিন। ফলে ছোট থেকে বড় সকলেই শসা-দই খেতে পারেন। তবে মাছ-মাংসের মতো খাদ্য খাওয়ার অন্তত ঘণ্টা দু’য়েক পরে শসা-দই খাওয়া উচিত।
আমলকী-হরীতকী-বহেড়া বা ত্রিফলা : আজকাল বাজারে ত্রিফলা মিলছে চূর্ণ, ট্যাবলেট এবং সিরাপ হিসেবে। নিয়মিত রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আধঘণ্টা আগে ত্রিফলা চূর্ণ তিন গ্রাম পরিমাণ নিয়ে ঈষদুষ্ণ জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। সিরাপ নিলে ১৫ থেকে ২০ এমএল পান করবেন। ট্যাবলেট খেলে দু’টি ট্যাবলেট সেবন করাই বিধেয়। তবে এই উপাচার শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ছোটদের আমলকী-হরীতকী-বহেড়া দিতে হলে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মনে রাখবেন, বড়দের ক্ষেত্রে কনস্টিপেশন হওয়া নির্ভর করে ছয়টি বিষয়ের উপর। ১. গভীর রাত্রি পর্যন্ত জেগে থাকা। ২. মাছ-গোশতের মতো খাদ্য বেশি পরিমাণে খাওয়া। ৩. খাবারে শাক-সব্জি না রাখা। ৪. পর্যাপ্ত পানিপানের অভাব। ৫. কায়িক শ্রমের অভাব। ৬. কোনো দীর্ঘদিনের শারীরিক অসুস্থতা।
অতএব কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে হলে বা পেট পরিষ্কার রাখতে হলে, ঘরোয়া বিধান পালনের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনও খুব জরুরি বিষয়।
সূত্র : বর্তমান